রায় শুনে কান্নায় ভেঙে পড়লেন ঐশী

ঢাকা: পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (পলিটিক্যাল শাখা) ইন্সপেক্টর মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমান হত্যা মামলায় রায় পড়ার আগে বেকসুর খালাস পাবেন এমন প্রত্যাশা করেছিলেন মামলার প্রধান আসামি ঐশী রহমান।

আদালতে আসার সময় মুখ ঢেকে মাথা নিচু করে আসলেও বেশ স্বাভাবিকই ছিলেন তিনি। তবে রায় শোনার পর আর কান্না ধরে রাখতে পারলেন না ঐশী। রায় পড়া শেষ হতে না হতেই অঝোরে কাঁদতে শুরু করেন ঐশী। এসময় তার পাশে থাকা নারী পুলিশ সদস্যরা তার চোখ মুছে দেন।

এর কিছুক্ষণপর কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে কথাও বলেন তিনি। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিলও করবেন বলে জানিয়েছেন আইনজীবীদের জানিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সাঈদ আহমেদ এ রায় ঘোষণা করেন। এসময় মামলার তিন আসামিই আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

রায়ে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (পলিটিক্যাল শাখা) ইন্সপেক্টর মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানকে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের একমাত্র মেয়ে ঐশী রহমানের ‘ডাবল’ মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মামলার অন্য আসামি ঐশীর বন্ধু জনিকে বেকসুর খালাস ও জামিনে থাকা মিজানুর রহমান রনিকে ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

মামলার রায়ে ঐশী রহমানের মাকে কফি খাইয়ে অজ্ঞান করে হত্যার দায়ে মামলার প্রধান আসামি ঐশী রহমানকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হচ্ছে। মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত ঐশী রাহমানকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়াও তার বাবাকে হত্যার অভিযোগে পৃথকভাবে একই সাজা প্রদান করেছেন ট্রাইব্যুনাল।

৩৭৪ ধারা মোতাবেক হাইকোর্টের অনুমোদন সাপেক্ষে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে তার ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

এই অপরাধে সহায়তাকারী মামলার অন্যতম আসামি আসাদুজ্জামান জনিকে ৩০২ ও ১০৯ ধারায় খুনের অপরাধ থেকে খালাস দিয়েছেন। পাশাপাশি মামলার অপর আসামি মিজানুল রহমান রনিকে ১১২ ধারা মোতাবেক আসামিকে আশ্রয় প্রদানের দায়ে ২ বছরের কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক মাসের জেল দিয়েছেন আদালত।

এর আগে, ১১টায় প্রিজন ভ্যান থেকে নামিয়ে তিনজন নারী পুলিশ দিয়ে ঘিরে আদালতে আনা হয় ঐশীকে। এ সময় আদালত প্রাঙ্গণে বেশ ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। এসময় গোলাপী ওড়না দিয়ে তার মুখ ঢাকা ছিল। আদালতে এসেছেন এ মামলায় একমাত্র জামিনে থাকা মিজানুর রহমান রনিও।

এসময় মিজানুর রহমান রনি বলেছিলেন, ‘আশা করছি, আমি বেকসুর খালাস পাবো। তারপরও আল্লাহ যা করেন।’ রায়ে রনির ২ বছরের কারাদণ্ড হল।

২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট রাজধানীর মালিবাগের চামেলীবাগে নিজের বাসা থেকে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (পলিটিক্যাল শাখা) ইন্সপেক্টর মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানের ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর পরদিন ঐশী গৃহকর্মী সুমীকে নিয়ে রমনা থানায় আত্মসমর্পণ করেন। পরে গ্রেপ্তার করা হয় অন্য দুই আসামি রনি ও জনিকে।

৮ thoughts on “রায় শুনে কান্নায় ভেঙে পড়লেন ঐশী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *