সব কিছু ঠিকঠাক

এক অদ্ভুত দেশ বাংলাদেশ। অদ্ভুত সব মানুষ বাস করে। শুধুমাত্র মত পার্থক্যের কারণে একজনের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে আর অন্যজনের মৃত্যুতে উৎসব। ১৯৭৩ সালের রক্ষীবাহিনীর গনহত্যার কথা যারা কোনদিন উল্লেখ করেনা তারা ১৯৭১ সালের হানাদার বাহিনীর গনহত্যার জন্য কেঁদেকেটে নদী করে ফ্যালে। পাকিস্তান ও ভারত দুইটা দেশই যখন বাংলাদেশকে তাদের প্রতিনিধি ও দালাল দিয়ে ক্রমাগত ধর্ষন করে যাচ্ছে, লুট করছে, জাহান্নাম বানিয়ে রেখেছে তখন নির্লজ্বভাবে একদল লোকে পাকিস্তান সমর্থন করে আর অন্যদলে ভারত। ১৯০০ সালের উপনিবেশিক শাসনের কায়দা কানুন বদলেছে। এখন উপনিবেশিক শাসকেরা বহুজাতিক পুঁজিপতি যার যার দেশে বসেই তাদের কুত্তা বা দালাল বা এজেন্টের মাধ্যমে অন্যদেশের উপরে তাদের নিয়ন্ত্রন বজায় রেখে আগের চাইতে অধিক মুনাফা অর্জন করতে পারে।

মন্দের ভাল খোঁজে সবাই। অথচ মন্দের ভাল বলে কিছু নেই। যা ভাল তা ভাল যা মন্দ তা মন্দ। ভাল আর মন্দের মধ্য কোন তুলনামূলক পার্থক্য চলেনা। অমুককে গুলি করে মারা হয়েছে তাই কম কস্ট হয়েছে যাই হোক মুসলমানেরা গুলি করে মুসলমান মেরেছে তাই কস্ট কম কিন্তু তমুকেরে তো পিটিয়ে হত্যা করেছে তাও আবার হিন্দুরা কত কস্ট চিন্তা করো। হিন্দু যদি মুসলমান মারে তাহলে সমস্যা অনেক শোকে কাতর জাতি কিন্তু মুসলমানে সারাদিন মুসলমান মারছে তখন কিছু করতে পারেনা বলে – কি করবো বলেন? আল্লাহ্‌ বিচার করবে!

যে খুন করে সে খুনী সে প্রধানমন্ত্রী হোক পুলিশ হোক বা রাস্তার ফকীর। মানুষ হত্যা করার বা করানোর অধিকার কারু নেই। উপনিবেশিক শক্তিরা যেহেতু দালালের মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রশাসন করে তাই কে তাদের দালাল হবে এই নিয়ে  রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্য হানাহানি লেগে থাকে। উপনিবেশিক শক্তির প্রিয় দল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ বা পাকিস্তান আওয়ামীলীগ তাই তারা এখন ইচ্ছামত নানা রকমে বাংলাদেশের মানুষের জীবন অতিষ্ট করে রেখেছে। অন্যদিকে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো নানাভাবে উপনিবেশিক শক্তিগুলোর দৃষ্টি আকর্ষন করছে দালালীর ঠিকা পাওয়ার জন্য কিন্তু কিছুতেই সফল হচ্ছেনা। ওরা যত প্রচেষ্টা করে এরা তত মানুষকে গুলি করে বা ভুয়া মামলা দিয়ে রিমান্ডে নিয়া নির্যাতন করে তারপর ১৫-২৫টা মামলা দিয়া কাশিমপুরে পাঠায়ে দেয়।

প্রতিদিন মানুষ খুন হয় আর প্রতিদিন হাস্যকর বক্তব্য দেওয়া হয় পত্রিকাতে । অতীতে আফ্রিকা থেকে ইউরোপ বা অস্ট্রেলিয়াতে সম্পদ পাচার করার জন্য উপনিবেশিক শক্তিগুলো একই পন্থা অবলম্বন করেছে। ঘৃনা ও বিদ্বেষ দিয়ে বিভাজিত করে রেখেছে দেশের জনগনকে। ওরা নিজেরা নিজেরা লড়াই করুক আর এরা চুপচাপ সম্পদ পাচার করুক। গৃহযুদ্ধ শেষে ওরা দেখবে ওদের খনী লুট হয়ে গেছে, আকাশে প্রখর রোদ্দুর আর শকুনের উড়াউড়ি ভিক্ষার বাসন হাতে মরুভুমিতে বসে আছে দেশবাসী।

বাংলাদেশীদের অবস্থা সেটাই হতে যাচ্ছে। পানি চলে গেছে। দেশপ্রেম মরে গেছে। মানবতা আত্মহত্যা করেছে। এখন শুধু একজন অন্যজনকে হত্যা করেই বাংলাদেশীরা মুক্তি পেতে পারে।




১৫ thoughts on “সব কিছু ঠিকঠাক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *