ঢাকা : দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাতে ব্যাপক প্রাণহানির আশঙ্কা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত পাকিস্তানে ২৫৩ জন এবং আফগানিস্তানে ৮২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে ৩৩৫ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে আফগানিস্তানে একটি স্কুলে পদদলিত হয়ে ১২ শিশু নিহত হয়েছে।
ভূমিকম্পটির রিখটার স্কেলে মাত্রা ৭ দশমিক ৭। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা জানিয়েছে, এর উৎপত্তিস্থল আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ পার্বত্যাঞ্চলে। ভূমিকম্পের মূল প্রভাব পড়েছে উত্তর আফগানিস্তান, পাকিস্তানের বিস্তৃত অঞ্চল এবং উত্তর ভারতে।
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল থেকে লোকজনকে বাসভবন থেকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। পুরো এলাকায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির খবর তাৎক্ষণিকভাবে জানা যাচ্ছে না।
সানাতুল্লাহ তৈমুর নামের আফগান প্রদেশ তাখারের গভর্নরের এক মুখপাত্র বিবিসিকে জানায়, স্কুলে পদদলিত হয়ে ১২ শিক্ষার্থী নিহত হওয়া ছাড়াও অপর ২৫ শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী নাঙ্গারহার, বাদাখস্থান এবং কুনার নামের তিন আফগান প্রদেশে মোট ৩৫ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। কাবুলের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে গাজায় বেশ কিছু স্থাপনা ভেঙ্গে পড়েছে।
অপরদিকে পাকিস্তান সেনাবাহিনী জানিয়েছে, দেশটির উত্তরাঞ্চলে এখন পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২৩ জনে। সবচেয়ে বেশি মৃতের সংখ্যা জানা গেছে পাকিস্তানের পাখতুঙ্খাওয়া প্রদেশের মালাকান্দ অঞ্চলে। দেশোটির হুনজা উপত্যাকায় পাহাড়ের কিছু অংশ ধসে পরেছে।
আফগানিস্তানের বাদাখাস্তান প্রদেশের ভূমিকম্পের উৎপত্তি স্থলের কাছাকাছি বেশিরভাগ স্থাপণা ভেঙ্গে পুরো এলাক ধবংস্তুপে পরিণত হয়েছে। পাকিস্তানের পেশোয়ার এবং আফগানিস্তানের জালালাবাদের হাসপাতাল গুলোতে আহত মানুষের সংখ্যা বেড়েই চলছে। তাদের আহাজারিতে পুরো পরিবেশ ভারি হয়ে উঠেছে।
ভূমিকম্পের তীব্রতা তাজিকিস্তানে অপেক্ষকৃত কম ছিল। দেশটির রাজধানী দুসাঙ্গবেতে কিছু স্থাপনা ভেঙ্গে গেছে। কয়েকটি স্থানে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানের তুলনায় ভারতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খুবই কম। ভারতে দিল্লিতে কয়েকটি স্থাপনায় ফাটল ধরেছে। লোকজনকে খুব দ্রুত বাড়িঘর ত্যাগ করতে দেখা গেছে ভূমিকম্পের ঠিক পরপরই। ওইসব এলাকা থেকে লোকজনকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। জম্মু কাশ্মির অঞ্চলের কয়েকটি হাসপাতাল থেকে রোগিদের বেড়িয়ে বাইরে অবস্থান করতে দেখা যায়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জরুরি ভিত্তিতে ওই অঞ্চলগুলোতে সাহায্য পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।