বন্ধু ও প্রভু-ভৃত্যের সম্পর্কের পার্থক্য

বন্ধু ও প্রভু-ভৃত্যের সম্পর্কের মধ্য পার্থক্য থাকবে। কিন্তু দুই বন্ধু যদি দুইটি অসম পরিবার থেকে আসে তাহলে পরোক্ষোভাবে সম্পদশালী পরিবারের বন্ধুটি দরিদ্র পরিবারের বন্ধুর সাথে সম্পর্ক বন্ধুত্বের না হয়ে প্রভু-ভৃত্যের সম্পর্ক হয়ে যাবে। ধণীর ছেলের চাহিদার সাথে যোগানের সামঞ্জস্য বজায় থাকে কিন্তু গরীবের ছেলের পরিবার আর্থিক দৈন্যতার কারণে ছেলের চাহিদার সাথে মিল রেখে যোগান দিয়ে কুলিয়ে উঠতে পারেনা। মার্কিন যুক্তরাস্ট্র ভারত থেকে মেধাবী ছাত্র আমদানী করে। কিন্তু বাংলাদেশের মেধাবী ছাত্রদের উপরে চলে পুলিশি নির্যাতন ।

মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের পরে পুনঃরায় ভর্তি পরিক্ষার দাবীতে আন্দোলন ও বিসিএস কোটা বিরোধী আন্দোলন এই দুটি আন্দোলনের সাথে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের ভ্যাট বিরোধী আন্দোলনের কোন মিল নেই।

পার্থক্যগুলো হলোঃ
এখানে পুলিশেরা ফুল উপহার পায়নি। এখানে পুলিশেরা চুপচাপ বসে বসে আন্দোলন দ্যাখেনি। “মন পাবি, দেহ পাবি কিন্তু ভ্যাট পাবিনা” এই ধরনের চটুল প্লাকার্ড নিয়ে ছাত্রীরা হাসি মুখে দাঁড়িয়ে থাকেনি। বাকী দুইটা আন্দোলনেই পুলিশের বুটের নিচে পিষ্ট হতে দেখা গেছে ছাত্রছাত্রীদের। উর্দি পরিহিত পুলিশ ছাড়াও ছাত্রছাত্রীদের আঘাত করেছে হিংস্র দ্বিপদ পশুরা ।

মেডিক্যালে কলেজে বা বিসিএস এ সাধারণত মেধাবী ছাত্রছাত্রী্রা ভর্তি হয়। মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা যুক্তিসংগত দাবীতে আন্দোলন করছে সেখানে পুলিশের হামলা করার কি কারণ থাকতে পারে? এই প্রশ্নের উত্তর ছড়িয়ে আছে সাড়া বাংলাদেশে। মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা দেশের মেধা সম্পদ বা ইন্টেলেকচুয়াল ক্যাপিটাল।

উন্নয়নের নামে বাংলাদেশের যেখানে যত সম্পদ আছে সব কিছু ধ্বংস করার তৎপরতার তালিকা অনেক দীর্ঘ – যেমন কেমিক্যাল গ্যাস দিয়ে সুন্দরবন ধ্বংস করার প্রকল্প, নদীগুলা ভরাট করে সড়কে বদলে দেবার সাফল্য, মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের মাথা ভেঙ্গে দিয়ে জাতীর মেরুড্বন্ড ভেঙ্গে দেবার প্রেরণা, সাড়া দেশে ইয়াবা আর ফেন্সিডিল এনে ভরে ফেলে অবক্ষয়ের চূড়ান্ত, পুলিশের হাতে নাগরিক হত্যার লাইসেন্স তুলে দিয়ে চলছে গুলি।জবাই। পিটিয়ে হত্যা। চলছে লুটপাট, দুর্নীতি, ঘটছে কালিহাতির মত ভয়াবহ বর্বরোচিত ঘটনা । যেখানে একইভাবে পুলিশ অপরাধীদের পক্ষ নিয়ে নিরীহ মানুষ হত্যা করেছে।
সাড়া বাংলাদেশ যেন একটি অবিরত হিন্দি মুভি।

নীচে চারটি বিষয়ে ইউটিউবের লিঙ্ক দেওয়া হলোঃ
১-কালিহাতি – মাছেলেকে উলঙ্গ করে লাঞ্ছনা করা হয়, এলাকাবাসী প্রতিবাদ করলে চারজন প্রতিবাদিকে হত্যা করে পুলিশ, পঞ্চাশজনকে আহত করে এবং নয়শত জনের বিরুদ্ধে মামলা করে।
কালিহাতি বর্বরতা

কালিহাতি বর্বরতা ১

কালিহাতি বর্বরতা ২

২ – বিসিএস ছাত্রদের উপরে পুলিশ ও ছাত্রলীগের হামলা
কোটা বিরোধী আন্দোলন
কোটা বিরোধী আন্দোলন ১

৩ – প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়া ভর্তি পরীক্ষা বাতিল করে নতুন ভর্তি পরীক্ষার দাবীতে আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের উপরে পুলিশের হামলা
প্রশ্ন পত্র ফাঁস – প্রতিবাদ – পুলিশের হামলা
প্রশ্ন পত্র ফাঁস – প্রতিবাদ – পুলিশের হামলা ১
প্রশ্ন পত্র ফাঁস – প্রতিবাদ – পুলিশের হামলা ২

৪- প্রতিবাদী শ্রমিকদের উপরে পুলিশে গুলি
শ্রমিকদের উপরে পুলিশের গুলি

উপরের ভিডিও ক্লিপগুলো অবিরত হিন্দি মুভি বাংলাদেশের পাঁচ থেক ছয় মিনিটের দৃশ্য মাত্র। দেখার পরে ফিরে যান ২৫শে মার্চের ভয়াবহ রাত্রে। একাত্তুরের গনহত্যার নায়কদের সবার ফাঁসি দেওয়া হয়ে গেছে। কেউ কেউ এখনো ফাঁসীর জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু বাইরে এরা কারা? বাংলাদেশে প্রতিদিন ২৫শে মার্চ হচ্ছে কেনো? ইয়াহিহা খানের প্রেতাত্মা কি ফিরে এসেছে? লাখো মাবোনের ইজ্বতের বিনিময়ে পাওয়া স্বাধীনতা ব্যবহার করে বাকি মাবোনের ইজ্বতের উপরে হামলা চলছে হামলা কেনো ? ১৯৭১ সালের শেষের মাসগুলোতে এতগুলো বুদ্ধিজীবিকে কেনো হত্যা করা হয়েছিল ? কে করেছিল হত্যা? বুদ্ধিজীবিরাও মেধাবী ছিল, বেচে থাকলে হয়তো এত সহজে হানাদার বাহিনীকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া যেতোনা, ১৯৭২ সালে ভারতের রাজ্যসরকারকেও মেনে নিতোনা। ওরা গ্যাঞ্জাম লাগিয়ে দিতো – সেজন্য কি তাদের হত্যা করা হয়েছিল? অনেক আগে টিভিতে একটা অনুষ্টান দেখেছিলাম। অনুষ্টানের নাম ৬০ মিনিটস ।

ভিডিও ক্লিপটা দেওয়া হলো
সেখানে বলা হচ্ছেঃ
– মার্কিন যুক্তরাস্ট্র সৌদী আরব থেকে তেল আমদানী করে
– জাপান থেকে গাড়ী আমদানী করে
– কোরিয়া থেকে টিভি আমদানী করে
– স্কটল্যান্ড থেকে হুইস্কি আমদানী করে
– আর ভারত থেকে কি আমদানী করে?
ভারত থেকে আমদানী করে জনসম্পদ, স্মার্ট জনসম্পদ।
মেধাবী ছাত্র আমদানী করে

ভারতের ছাত্র ভারতের গর্ব মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের চাহিদা

এইসব ছাত্ররা সবাই ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজী থেকে পাশ করে এসেছে। এরা পাশ করে বেরুবার অনেক আগেই মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্টানগুলো ভারত সরকারের কাছে এইসব মেধাবী ছেলেদের জন্য চাকুরীর নিয়োগপত্র পাঠিয়ে দেয়।
বলায় বাহুল্য বাংলাদেশীরা পোষাকে, কথায়, সাম্প্রদায়িকতায়, রাজনীতিতে, ধর্ষনে, জবাইয়ে, ফেন্সিডিলে, ভারতের স্টাইল অনুসরণ করে কিন্তু মেধাবী ছাত্রছাত্রী সংরক্ষণে ও মূল্যায়ণে ভারতের স্টাইল অনুসরণ করেনা। ভারতের মেডিক্যাল ছাত্রদের পুলিশে পেটায় না, ভারতের প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের পুলিশে পেটায় না, ভারত সরকার এইসব ছাত্রদের গড়ে উঠতে সাহায্য করে। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এইসব মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা যাতে তাদের লক্ষ্যে পৌছুতে পারে সেজন্য এইসব ছাত্রছাত্রীদের পরিবার, শিক্ষক, রাস্ট্র, বিদেশ, সবাই সহযোগীতা করে। ভারত আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক বন্ধুত্বের, বাণিজ্যিক লেনদেনের। ভারত আর বাংলাদেশের সম্পর্ক প্রভু-ভৃত্যের । ভারত বিক্রি করে বাংলাদেশ ক্রয় করে। ভারত শাসন করে বাংলাদেশ শাসিত হয়। ভারতের বিএসএফ গুলি করে বাংলাদেশীরা মরে। ভারতের রাজ্য সরকারের পুলিশ গুলি করে বাংলাদেশের মানুষ মরে।

ভারত মেধাবী ভারতীয়দের রক্ষা করে আর বাংলাদেশ মেধাবী বাংলাদেশীদের বুটের তলে পিষ্ট করে মারে। শিক্ষা ভারতের মেরুদ্বন্ড। শিক্ষা বাংলাদেশ পুলিশের বুটের নিচে থাকে।




৯ thoughts on “বন্ধু ও প্রভু-ভৃত্যের সম্পর্কের পার্থক্য

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *