মৃত্যুর পূর্বে সিঙ্গাপুর প্রবাসী আমিনের শেষ ইচ্ছা পূর্ণ, হৃদ পিন্ডের ক্যান্সার অকালে কেড়ে নিল তার জীবন

“আমি আমার স্ত্রী সন্তানদের শেষ বারের মত দেখতে চাই ” মৃত্য অবধারিত জানার পর দোভাষীর কাছে হাসপাতাল কর্তি পক্ষ কে জানিয়েছিলেন আমিন.বাড়ি তার নরসিংদীর পলাশে .ভাগ্যের সোনার হরিণ ধরতে আর পরিবার-পরিজনের কপালে রাজটিকা পরাবার আশায় আজ থেকে বার বছর পূর্বে সিঙ্গাপুর পাড়ি দিয়েছিলেন জনাব আমিন বয়স হয়েছিল মাত্র ৪৪, পিতা মরহুম আবুতাহের.পরিবারের কপালে রাজটিকা পরানো হল না আর .অকালে ঝরে গেলন তিনি .মৃত্যু কালে স্ত্রী ছাড়া রেখে গেছেন ২ থেকে ২২ বছরের চার কন্যা আর এক পুত্র.
মাত্র দুসপ্তাহ পূর্বে হটাত স্বাস কষ্টে আক্রান্ত হন আমিন.শরনাপন্ন হন একটি পলিক্লিনেকের ,অবস্থার অবনতি অনুমান করে কর্তব্যরত ডাক্তার রেফার্ড করেন সরকারী তান তকসিন হাসপাতালে (TTSH ). হৃদপিন্ডের ক্যান্সারে আক্রান্ত আমিনকে সাময়িক অক্সিজেন সাপোর্ট দেয়া হয় .আমিনের অবস্থা আরো অবনতি হলে দেয়া হয় সার্বক্ষনিক অক্সিজেন সাপোর্ট আর মরফিন সাথে চলে কেমো থেরাপি.আমিন ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে পড়েন.তার হৃদ যন্ত্রের চার পাশে জমা হতে থাকে ফ্লুইড .টিউবের মাধ্যমে ফ্লুইড নিঃসরণের ব্যবস্থা করা হয়.যার এসে গেছে ডাক ওপারে যাবার সে কি আর সুস্থ হয় .ডাক্তারদের ভাব গতি আর নিজের অবস্থার টের পান আমিন. দোভাষীর মাধ্যমে জানান “আমি আমার অন্তিম কালে আমার স্ত্রী সন্তানদের দেখতে চাই “হাসপাতাল কর্তিপক্ষ এবার শুরুকরেন দেশে পাঠাবার পক্রিয়া . আবারও ডাক পড়ে বাংলার কন্ঠ সম্পাদক এক এম মোহসিন এর,দিবাস্রমের চেয়ারমেন দেবী ফর ডায়েস ছুটে যান আমিনের পাশে.শুরু থেকে পাশে ছিলেন কনসুলার শ্রেয়সী সেন. এবার বিমান খোঁজার পালা .কোন বানিজ্যিক এয়ার লাইন রাজি হল না অক্সিজেন সাপোর্টের মৃত্যু পথ যাত্রী আমিনকে দেশে পৌঁছাতে .চিকিত্সা সুবিধা সহ চার্টার্ড বিমানের ভাড়া আমিরিকান ৩৭০০০ ডলার,সিঙ্গাপুর ৪৫হজর ডলার .কে বহন করবে এই বিশাল অঙ্কের ব্যয় ,কে করবে আমিনের শেষ ইচ্ছা পূর্ণ .হাসপাতাল কর্তি পক্ষ আলোচনা চালায় চার্টার্ড বিমানের সাথে ,এক পর্যায়ে আমিনের অবস্থা বিবেচনা করে ব্যয় নির্ধারিত হয় ১২৫০০ মার্কিন ডলার.ব্যয় ভার বহন করতে এগিয়ে আসে TWC2 নামের সহায্য কারী প্রতিষ্ঠান.এই ব্যয়ের বেশির ভাগ বহন করেন উক্ত প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক চাইনিজ মহিলা,এই মহিলা আমিনের পরিবারের জন্য এক হাজার ডলার প্রদান করেন.এ কে এম মোহসিন যা দেশে পাঠিয়ে দিয়েছেন. .হাসপাতাল দেয় অক্সিজেন সিলিন্ডার .সার্বক্ষনিক পাশে আছে বাংলার কন্ঠ, এ কে এম মোহসিন,দেবী ফর ডায়েস,সিঙ্গাপুর আর বাংলাদেশের যোগাযোগ চলছে এ কে এম মোহসিন এর মাধ্যমে.নিজের মৃত্যুর জন্য দেশে যাচ্ছেন আমিন.গত বৃহ :বার রাত রাত সাড়ে ৮ টায় চার্টার্ড উড়ে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে মৃত্যু প্রহর গুনতে থাকা অক্সিজেন সাপোর্টের আমিন কে নিয়ে.বিমান বাংলাদেশে পৌঁছয় রাত সাড়ে দশ টা বাংলাদেশ সময়.এয়ার পোর্টে পরিবার পরিজনের সাথে থাকে দিবাশ্রমের বাংলাদেশের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান মিসাফ রিসিভ করে আমিনকে .শুক্র বার দুপুর একটায় আমিন তার শেষ ইচ্ছা পূর্ণ করেন, বিদায় নেন ত্যাগ করেন এই পৃথিবীর মায়া.ত্যাগ করেন শেষ নিঃশ্বাস ,একান্ত আপন স্ত্রী সন্তানদের সামনে .চলে যান ওপারে না ফেরার ই দেশে.নিষ্ঠুর নিয়তি .যখন সিঙ্গাপুরে আমিনের অবস্থা অবনতির দিকে বাংলার কন্ঠ সমাপ্দ্ক জনাব এ কে এম মোহসিন যোগাযোগ করেন বাংলাদেশ হাই কমিশনের সাথে ,বরাবরের মত এবার ও কোন সাড়া দেয় নি বাংলাদেশ হাই কমিশন. যেখানে সজ্ঞাহীন হাই কমিশন সেখনে এগিয়ে এল TWC2 .বাংলার কন্ঠ ,কনসুলার শ্রেয়সী সেন,নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চায়নিজ মহিলা,হাসপাতাল কর্তিপক্ষ ,দিবাশ্রম .দেবী ফর ডায়েস এই প্রসঙ্গে বলেন ‘আমরা আমিন এর জীবন দিতে না পারি এই টুকু সান্তনা যে তার শেষ ইচ্ছা পূর্ণ করতে পারছি’.আমার বিশ্বাস আমদের দেখে অন্যরা এগিয়ে আসবে ,TWC2 এর তহবিল কে আরো মজবুত করবে.সিঙ্গাপুরের দৈনিক পত্রিকা দি নিউ পেপার পুরো পাতা জুড়ে খবর ছাপিয়েছে তার শেষ লাইনে লিখেছে Said Mr.Mohsin”His last words were that he was very happy to see them again”
দি নিউ পেপার সিঙ্গাপুর ব্যাক্ত করেছে এই ভাবে “For a while, it looked as if he would have to spend his final days here, far from his wife and children in Bangladesh.But thanks to a hospital and a non-government organisation, the foreign construction worker got to see his family again, for the last time.”
জনাব আমিনের পরিবার পরিজন সিঙ্গাপুরের হাসপাতাল ,এন জি ও এবং বাংলার কন্ঠ কে ধন্যবাদ জানান পুরো পক্রিয়াটির সুন্দর সমাধানের জন্য .এক দিন এ পৃথিবী ছেড়ে বিদায় নিতে হবে, সবাইকে চলে যেতে হবে ,কিছু কিছু অকাল বিদায় বড় কষ্টের ,বড় বেদনার .আমিনের পরিবার কি ভাবে সামাল দিবে, কি ভাবে পূর্ণ করবে আমিনের স্থান .এ যে তার পরিবারের জন্য এক অপূরনীয় ক্ষতি .আল্লাহ তাকে জান্নাত নসিব করুন.পরিবার কে দিক এই ঝড় সামাল দেবার শক্তি .আমিন.

সিঙ্গাপুর থেকে মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বাবু,নিউ পেপার এর সৌজন্যে

 

১১ thoughts on “মৃত্যুর পূর্বে সিঙ্গাপুর প্রবাসী আমিনের শেষ ইচ্ছা পূর্ণ, হৃদ পিন্ডের ক্যান্সার অকালে কেড়ে নিল তার জীবন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *