এবারও হজের খুতবায় সেই অন্ধ মুফতি

শুরু হয়েছে পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা। মক্কার সকল রাস্তার মানুষ এখন আরাফামুখি। হজের অন্যতম কর্মসূচির অংশ হিসেবে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফার ময়দানে অবস্থান করবেন হাজিরা। আরাফায় অবস্থানকালে হাজিরা ইহরামের দুই টুকরো সাদা কাপড় পরিধান করে আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করে কান্নাকাটিসহ জীবনের সব অপরাধের কথা স্মরণ করে আল্লাহর রহমত কামনার পাশাপাশি বিশ্বের শান্তি-সমৃদ্ধিও কামনা করবেন।‍

প্রায় সাড়ে ১৪শ’ বছর আগে এই দিনে মহানবী (সা.) আরাফার ময়দানে সমবেত জনতার উদ্দেশে ভাষণ দেন। সেখানে তিনি ইসলামের পরিপূর্ণতা ঘোষণাসহ জীবন পরিচালনার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য তুলে ধরেন। সেই রীতি অনুসারে এখনও হজের সময় হাজিদের উদ্দেশে খুতবা দেওয়া হয়।

আজ দুপুরে আরাফার ময়দানসংলগ্ন মসজিদে নামিরা থেকে চলমান বিশ্বের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে হজের খুতবা প্রদান করবেন সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতি শায়খ আবদুল আজিজ বিন আবদুল্লাহ আল শায়খ। বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল হজের খুতবা ও হাজিদের আরাফায় অবস্থান সরাসরি সম্প্রচার করবে। বাংলানিউজও হজের খুতবার অনুবাদ সরাসরি প্রকাশ করবে।

১৭ বছর বয়সে দৃষ্টি হারানো সৌদি গ্র্যান্ড মুফতির এটি ৩৫তম হজের খুতবা। ৭৪ বছর বয়সী মুফতি হিজরি ১৪০২ সাল থেকে হজের খুতবা দিয়ে আসছেন। নিয়ম অনুসারে স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা থেকে খুতবা চলবে ১২টা ৪৪ মিনিট পর্যন্ত। সে হিসেবে বাংলাদেশ সময় দুপুর সোয়া তিনটায় হজের খুতবা শুরু হবে।

মসজিদে নামিরায় সৌদি আরবের বাদশা, রাজপরিবারের সদস্য ও ঊর্ধ্বতন সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা বসে হজের খুতবা শুনবেন।

হজের খুতবায় ইসলামের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা তুলে ধরে বিশ্ব মুসলিমের শান্তি, মুক্তি ও কল্যাণ কামনা করা হয়। এ ছাড়া পবিত্র কোরআন-হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে ইসলামের বিভিন্ন দিক এবং পরকালের পুরস্কার ও শাস্তি সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়।

গ্র্যান্ড মুফতি শায়খ আবদুল আজিজ বিন আবদুল্লাহ আল শায়খ ১৯৪৩ সালের ৩০ নভেম্বর মক্কায় জন্মগ্রহণ করেন। ৮ বছর বয়সে তিনি পিতৃহারা হন। জন্মসূত্রেই তিনি ছিলেন দূর্বল দৃষ্টিশক্তির। পরে ১৭ বছর বয়সে একেবারে দৃষ্টিশক্তি হারান।

মাত্র ১২ বছর বয়সে তিনি পবিত্র কোরআনে কারিমের হেফজ সম্পন্ন করেন। হিজরি ১৩৮৩-৮৪ শিক্ষাবর্ষে তিনি ফিকাহ বিষয়ক কলেজ হতে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। ১৩৯২ সাল পর্যন্ত ‘ইমামুদ দাওয়াহ আল ইলমি’তে শিক্ষকতা করেন। ১৪০৭ হিজরি সালে সৌদি আরবের ওলামা পরিষদের সদস্য পদলাভ করেন। ১৪১২ হিজরিতে ফতোয়া বিষয়ক অধিদপ্তরের প্রধান হিসেবে নিয়োজিত হন। ১৯৯৯ সালের জুন মানে তিনি গ্র্যান্ড মুফতির দায়িত্ব পান।

২৩ thoughts on “এবারও হজের খুতবায় সেই অন্ধ মুফতি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *