এক মাফিয়া রানি করিমা আপার রাজত্ব!

ঢাকা: ক্লাস ফোরের পরে আর স্কুলমুখো হননি করিমা মুজিব শাহ। অপরাধের হাতেখড়ি জমি জবরদখল দিয়ে। জমি জবরদখল করে বেআইনি বস্তি বানানোই ছিল তার ‘কাজ’। সেখান থেকে মাত্র ৬ বছরের মধ্যে মুম্বাইয়ের বিস্তীর্ণ এলাকার মাফিয়া কুইন তিনি। অপরাধের সিঁড়ি বেয়ে অন্ধকার জগতে তার উল্কার বেগে উত্তরণ।

আজ মুম্বাইয়ের বড় অংশে তার ৪০ থেকে ৫০টি বস্তি রয়েছে। বস্তিবাসীর সবার কাছে তিনি অবিসংবাদী অধীশ্বরী। কামরাজ নগরে তার সভা বসতো নিয়মিত। রাজকীয় সিংহাসনে বসে ‘প্রজাদের’ সমস্যার সমাধান করতেন করিমা। ৪৫ বছর বয়সী এই মাফিয়া কুইনকে নিয়ে রোমহর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে ভারতের ইংরেজি দৈনিক মিড ডে-তে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, করিমা গ্রেপ্তারের পর পুলিশ জানতে পেরেছে‚ তার নামে চারটি ফ্ল্যাট রয়েছে মুম্বাই শহরে। আর ৪০ থেকে ৫০টি বস্তি। তার দলের কাছে আছে নগদ ৪০ লাখ টাকা।

তাকে জেরা করে জানা যায়, স্থানীয় অনাথ বালকদের ‘ভরণপোষণ’র দায়িত্ব নেন করিমা। তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হতো কীভাবে হাত পাকাতে হয় চুরি‚ ডাকাতি‚ ছিনতাইয়ের জন্য। যোগ্যতা অনুযায়ী ভাগ হয়ে যেত দল। যে ছিনতাই করবে সে পেতো সাইকেল। যে ডাকাতি করবে তার জন্য বরাদ্দ মোটরসাইকেল। খাদ্য-আশ্রয়ের বিনিময়ে এই কাজ তাদের করতেই হতো। নিজের ভাগ রেখে দিয়ে প্রতি কর্মীর মধ্যে বখেরা ভাগ করে দিতেন ‘আপা’ করিমা। ‘আপা’ নামেই তিনি পরিচিত ছিলেন।

দিনের সঙ্গে তার বাড়তে থাকে অর্থ‚ প্রতিপত্তি, সেইসঙ্গে শত্রু। করিমা নিজের এবং স্বামীর নিরাপত্তার জন্য নিয়োগ করেছিলেন বিশেষ বাহিনী। বিনিময়ে বাহিনীর প্রত্যেক যুবক পেতো বিলাসবহুল জীবন।

তবে শত শত অভিযোগ থাকা সত্বেও তাকে ধরতে গিয়ে বারবার ব্যর্থ হয়েছে পুলিশ। একবার তো নিজেই নিজের জামাকাপড় ছিঁড়ে পুলিশের নামে শ্লীলতাহানির অভিযোগ আনেন ‘আপা’। শেষে গত মাসে তাকে ধরার জন্য ফাঁদ পাতে মুম্বাই পুলিশ। সেই ফাঁদেই ধরা পড়েন করিমা।

অবশ্য গ্রেপ্তারের পর ঘটান আরেক ঘটনা। থানায় পান করেন ফিনাইল। যদিও হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর সুস্থ হন তিনি। এখন সব ফেলে রেখে আপাতত অন্ধকার কারাগারেই ঠাঁই হয়েছে অন্ধকার দুনিয়ার এই আপার।

১১ thoughts on “এক মাফিয়া রানি করিমা আপার রাজত্ব!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *