ঢাকা: তরুণ প্রজন্মকে রাজনীতিতে আসার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ। তিনি বলেছেন, রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে রাজনীতি শিখতে হবে। মুরুব্বীদের সম্মান করতে হবে। নইলে রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন আসবে না।
রাজনীতিতে তাকে নিয়ে যাদের সন্দেহ রয়েছে তাদের উদ্দেশ্যে পার্থ বলেন, ‘যারা রাজনীতি করে তারা কেউ আমাকে নিয়ে সন্দেহ করে না। আমার কাজে যারা ঈর্ষান্বিত তারাই সন্দেহ করে।’
পার্থ মনে করেন রাজনীতিবিদদের সঙ্গে সাধারণ মানুষের দূরত্ব অনেক বেড়ে গেছে। এ ব্যবধান বা দূরত্ব কমানোর উপর জোর দেন তিনি। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে আন্দালিব রহমান পার্থের বিভিন্ন দিক তুলে এনেছেন খালিদ হোসেন। সাম্প্রতিক রাজনীতি, দেশ, সমাজ এবং তার ব্যক্তিগত নানা বিষয়ে তার কাছে জানতে চাওয়া হয়। মন খুলে এসব বিষয়ে কথা বলেছেন পার্থ।
আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের অবস্থা কীভাবে দেখছেন?
পার্থ: দ্যাখেন আমি তো সব সময় একটা কথা বলি যে, গণতন্ত্রবিহীন উন্নয়ন তাজমহলে বন্দী থাকার মতো। কারণ আপনি যতোই উন্নয়ন করার চেষ্টা করেন বা উন্নয়নের কথা বলেন আপনার সরকারের বিভিন্ন কাঠামো যদি ভেঙে পড়ে যায়, আর দেশে যদি গণতন্ত্র না থাকে সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের মানুষ কোনোদিনও তা পজিটিভলি গ্রহণ করবে না। আর সেটার যদি জবাবদিহিতা না থাকে সেখানে তো আরো ব্যাপার থাকে। এই সরকার তো আসলে ইলেক্টেড না। ফলে এখানে জনগণকে তোয়াক্কা করার দায় তাদের নেই। আর আপনি যখন জনমতের তোয়াক্কা করেন না, তখন আপনি মনে করেন জনগণ আপনাকে ক্ষমতায় রাখবে?
আরেকটা প্রবলেম, রাজনীতিবীদদের প্রয়োজনিয়তা কমে গেছে। যখন প্রশাসনের ওপর ভিত্তি করে আপনি ক্ষমতায় থাকেন তখন আপনার রাজনীতিবিদের প্রয়োজন হয় না। সুতরাং প্রশাসন দিয়ে আপনি চলেন। জনগণের কি হলো না হলো এ নিয়ে ভাববার দরকার নেই। ধরুন, এখন বন্যা হচ্ছে, আপনি টপ লেভেলের কোনো নেতাকে দেখবেন না, যে তারা মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে। অথচ এটা আমরা স্বৈরাচারের সময়ও দেখছি, সবাই গেছে। কিন্তু এখন পাত্তাই দিচ্ছে না, এটা কোনো ফ্যাক্টরই না।
এখন মিডিয়াকে যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে, রাজনীতিবিদদের যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে, তা দেখেতো মনে হচ্ছে এখানে গণতন্ত্র নেই। এটাতো মূলত একলা চলো নীতি। বিদেশিরা তো যখন কোনো দেশের সাথে সম্পর্ক রাখে সেখানে অবশ্যই গণতন্ত্র একটা ইস্যু। এখন বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে তারা একটা হাস্যকর গণতন্ত্র হিসেবে জানে।
সম্প্রতি দেশে নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা খবরে আসছে। আসলে নির্যাতনের হার বেড়ে গেছে নাকি মিডিয়াতে বেশি প্রকাশ বা প্রচার হচ্ছে?
পার্থ: না, প্রশ্নই ওঠে না। এ জন্য তো আমি সরকারকে দোষ দেই না। নারী নির্যাতন বা শিশু নির্যাতন ঘটছে আমাদের মানবিক অবক্ষয়ের জন্য। আপনি পকেটমার বলে চিৎকার দিলে ১০ জন গিয়ে তাকে হত্যা করবে বা মেরে ফেলবে বা আইনকে হাতে নিয়ে ফেলবে, এটাতো আমাদের নিজস্ব চরিত্র।
এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারের নীতি কী হতে পারে?
পার্থ: সরকার তো করবেই। হ্যাঁ আপনি বলতে পারেন ছাত্রলীগের এলোপাতাড়ি যে কাজগুলো, মায়ের পেটের মধ্যে বাচ্চার গায়ে গুলি লাগা বা যেভাবে যুবলীগের মারামারি। এটা হবে। কারণ যখন বিরোধী দল থাকবে না বা আইনের শাসন থাকবে না। সরকার যখন কারো উপর ডিপেন্ডেন্ট হয়ে যায় তারা তো ধরাকে সরা জ্ঞান করবেই। ছাত্রলীগকে কন্ট্রোল করলে আবার পুলিশও বেপরোয়া হয়ে যায়। আপনি জানেন, পুলিশ ইয়াবাসহ অন্যান্য ড্রাগসের ব্যবসা করছে। কারণ পুলিশ মনে করে তাদের ওপর সরকার ডিপেন্ডেন্ড। ফলে সে যা ইচ্ছা তাই করতে পারবে। এটা কেন হয়? যখন আপনি প্রশাসন দিয়ে দেশ চালান তখন প্রশাসনের গুটি কয়েক ব্যক্তির পকেট ভরে যায়। তখন দেখা যায় পুলিশই পুলিশকে ধরিয়ে দিচ্ছে। কারণ একসঙ্গে চাকরি করে একজন অনেক টাকার মালিক হয়ে যাচ্ছে আরেকজন হতে পারছে না। সেই ক্ষেত্রে প্রত্যেকটা সিস্টেম ফল ডাউন করা আরম্ভ করে। কারণ বেনিফিট তো খুব অল্প লোকই পায়। বেনিফিট তো বেশি লোক পায় না। সে ক্ষেত্রে রিপার্কেশন হবে। এখন সাধারণ জনগণের সঙ্গে পুলিশের দূরত্ব অনেক। দু’দিন পর পুলিশ আওয়ামী লীগকে মারবে। এমন একটা সময় আসবে জনগণ আর পুলিশ মুখোমুখি হয়ে যাবে। জনগণের মধ্যে আওয়ামী লীগও থাকবে।
যারা সরকার বিরোধী রাজনীতি করেন তারা সরকারকে স্বৈরাচার বলেন। সরকার যদি স্বৈরাচারি হয় তাহলে বিরোধী দল হিসেবে আপনাদের দায়িত্ব কী?
পার্থ: দ্যাখেন, এখানে সরকার আর আমাদের দায়িত্বের ব্যাপারটা আসছে না। সরকারের স্বৈরাচারিতার একেক সময় একেক ফর্ম থাকে। আজ থেকে ২০ বছর আগের স্বৈরাচার আর এখনকার স্বৈরাচার এক নয়। মূলত স্বৈরাচার মানে কী? যেখানে জনগণের সম্পৃক্ততা নেই। এখন আমরা সবাই জানি ৫ জানুয়ারির ইলেকশন কিভাবে হয়েছে বা কত মানুষ ভোট দিয়েছে। তারপর আমাদের আরো চোখ খুলে গেছে মেয়র নির্বাচনের সময় (ঢাকা সিটি করপোরেশন উত্তর ও দক্ষিণ)। দেখলাম ৯টার মধ্যে ভোট শেষ হয়ে যাচ্ছে। তার মানে আসলেই সরকার জনগণকে কেয়ারই করে না। জনগণ তাদের নিয়ে কি চিন্তা করলো বা করলো না- এটাতে সরকার কর্ণপাত করছে না। সেক্ষেত্রে আমাদের দায়িত্বের কথা যদি বলেন, তাহলে বলবো, আমরা প্রতিটি পাবলিক ইস্যুতে কথা বলছি। আমরা রাজপথে নামার চেষ্টা করলে আগে তো লাঠিপেটা করা হতো, এখন গুলি করা হয়। সেক্ষেত্রে আমরা কতখানি নামবো বা জনগণই বা কতখানি নামবে সেটা ভাবতে হচ্ছে। কিন্তু এটাও মানতে হবে যতখানি পজেটিভ পলিটিক্স বিরোধী দল হিসেবে আমাদের করার কথা তা করতে পারিনি।
তাছাড়া, রাজনীতিবিদর পরস্পর পরস্পরকে এতো আঘাত করেছে যে কেউ কাউকে নিয়ে চিন্তাই করেন না। আগে যেমন জেলখানায় গেলে মানসম্মান, ইজ্জত বাড়তো। রাজনীতিবিদরা একে অপরের খবর নিতো। কিন্তু এখন আর খবরও রাখে না। কে জেলে গেলো আর গেলো না তা নিয়ে তারা ভাবেও না। সময়ের সঙ্গে এটা অনেক পরিবর্তন হয়ে গেছে। আপনি দেখবেন মফস্বল এলাকাগুলোতে রাজনীতি নিয়ে মানুষজন যতোবেশি অ্যাক্টিভ ঢাকা সিটিতে ততবেশি অ্যাক্টিভ না। তাদের ক্ষোভ আছে। ওই লেভেলে তারা পার্টিসিপেন্ট করতে চায় না।
আপনি বলতে চাইছেন রাজনীতিবিদদের শক্তি দুর্বল হচ্ছে?
পার্থ: রাজনীতিবিদদের সঙ্গে তো সাধারণ মানুষের দূরত্ব অনেক বেড়ে গেছে। এটাতো মানতেই হবে। ফলে যা হবার তাই হচ্ছে।
এটা কি কমিটমেন্ট ব্রেক করার কারণে?
পার্থ: হান্ড্রেড পারসেন্ট কমিটমেন্ট ব্রেক করার কারণে। শুধু কমিটমেন্ট ব্রেক করার কারণে নয়। আরো কারণ আছে। সাধারণ মানুষ রাজনীতিকে বাদ দিয়ে তাদের জীবনধারণ বা সামাজিক অবস্থান নিয়ে বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে পুঁজিতান্ত্রিক সমাজে নিজেদের আখের গোছানোতেই মনোনিবেশ করছে বেশি। ফলে দেশ নিয়ে ভাবনার প্রবণতা রাজনীতিবিদদের পাশাপাশি জনগণেরও কমে গেছে অনেকখানি। আপনি দেখবেন ঢাকা ইউনিভার্সিটির টিএসসিতে যখন বস্ত্রহরণের মতো ঘটনা ঘটছে তার দু’দিন পরই ক্রিকেট খেলা নিয়ে এমন অস্থির হয়ে গেলাম যে আমার সমস্যার কথাই ভুলে গেলাম। আমরা পাগল হয়ে গেলাম। আপনি চিন্তা করে দেখেন এখানে তো রাজনীতির কিছু নাই। এটা তো একটা ন্যাশনাল ইস্যু। ন্যাশনাল ইস্যু থেকেও মানুষ মুখ ফিরিয়ে চলে যাচ্ছে। লেটস এনজয় দ্য ভিক্টরি। আপনি রাস্তায় দিয়ে যেতে থাকেন দু’জন লোক যদি আপনার ওপর অন্যায় করে পাশের লোকটা কিচ্ছু বলবে না, সে হেঁটে চলে যাবে। সেখানে তো রাজনীতিবিদদের করার কিছু নেই। হাতে গোনা কয়েকজন আছেন যাদেরকে মানুষ বিশ্বাস করে।
২০ দলীয় জোট কি আগের চেয়ে নিষ্ক্রিয়?
পার্থ: না না। পলিটিক্সে তো নিষ্ক্রিয়-সক্রিয়র ব্যাপার নেই। প্রত্যেকটা জায়গায় ২০ দলীয় জোটের কর্মকাণ্ড চলছে।
চলতি বছরের শুরুতে যে ৯২ দিন টানা অবরোধ চলেছে, তা ঘোষণা দিয়ে শুরু হলেও ঘোষণা দিয়ে শেষ হয়নি।
পার্থ: ঘোষণা দিয়ে বন্ধ করতে হবে এমনও তো কোনো কথা নেই। আন্দোলন আন্দোলনের মতোই চলবে। তখন তো ইলেকশন চলে আসছে (ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন)। অনেকে বলে যে, আন্দোলন ফেল করছে বা আন্দোলন ফলপ্রসু হয়নি। কিন্তু আমি মনে করি, আন্দোলন থেকে কিছু অর্জন হয়নি এটা সত্যি নয়। কখনো কখনো আন্দোলন কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারে না। যেমন যারা বলতো ৫ জানুয়ারি নির্বাচন করলে আমরা ভালো করতাম। মেয়র নির্বাচন দেখিয়ে দিয়েছে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে গেলে আমরা কি করতাম। এই জিনিসটাতো আপনারা দেখতে পেতেন না। অনেকেই বলেন যে, আপনারা সরকারকে নামাতে পারেননি বা আপনারা এটা করতে পারেননি। কখনো কখনো ছোট্ট একটা আন্দোলন অনেক বড় ফল এনে দেয়। আপনি চিন্তা করে দেখেন, কাদের মোল্লার ফাঁসির জন্য কত বড় গণজাগরণ মঞ্চ হলো। যাবজ্জীবনকে ফাঁসি করার জন্য লক্ষ লক্ষ মানুষ জড়ো হয়েছে। অথচ এমনও দেখা গেছে ফাঁসি যাবজ্জীবন হয়ে গেছে, কোনো লোকই নেই।
র্যাব বিলুপ্তির দাবি আছে। আপনি কি এটা সমর্থন করেন?
পার্থ: এখানে একটা জিনিস মানতে হবে। র্যাবকে পলিটিসাইড করা হচ্ছে। পলিটিক্যাল কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। র্যাব তো আমরাই সৃষ্টি করেছিলাম। র্যাবে ভালো মানুষ যেমন আছে তেমনি খারাপ মানুষও আছে। যখন র্যাবের নামে মানুষের ভীতি চলে আসে তখন ওটা নিয়ে প্রশ্ন চলে আসে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সরকার তো নিজেই স্বীকার করে নিয়েছে। ওবায়দুল কাদের সাহেব যেভাবে বলছেন ‘অ্যাকশন শুরু’। তার মানে আপনি বুঝেই যাচ্ছেন, এটা কোনো ক্রসট্রস না বেসিকেলি অ্যাকশন শুরু। এই ক্ষেত্রে আমি মনে করি, এটা নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করা দরকার।
আপনার দল বিজেপির সাংগঠনিক অবস্থা কী?
পার্থ: বিজেপির সাংগঠনিক অবস্থা তো ভালো। কিন্তু আমরা তো দল গোছানোর কাজ করছি না। নেতাকর্মীরা অনেকে মামলায় পড়েছেন। সবকিছু মিলিয়ে আমরা পর্যবেক্ষণ করছি।
আপনার দলের চেয়ে আপনার সার্কুলেশন অনেক বেশি।
পার্থ: এরকম তো অনেক দলেই হয়। একটা পর্যায়ে বঙ্গবন্ধুর অবস্থান আওয়ামী লীগের ওপরে চলে গেছে। জিয়াউর রহমান সাহেব বিএনপির চেয়েও বড় ছিল। অনেক ক্ষেত্রে দল অনেক বড় থাকে। ব্যক্তির চেয়ে দল অনেক বড়। জামায়াতে ইসলামের অবস্থান জামায়াতের যে কোনো নেতার চেয়ে অনেক বড়। আমার দলকে আমি রিপ্রেজেন্ট করি। এ কারণে হয়তো- দলের জন্যই তো আমি। আমি যা বলি দলের তরফ থেকেই বলি। আমি মনে করি বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি যখন কোনো কথা বলে তখন জনগণের কথা বলে। আমার মুখ থেকে সেটা আসে। আমি মনে করি এটাই আমার স্বার্থকতা। আপনি ছোট দল হলেও জনগণের কথা বলছেন। বড় দল হয়েও জনগণের কথা বলতে পারছেন না। কাজটা তো জনগণের তাই না? আমি মনে করি অলি আহমেদের একটা অবস্থান আছে। আরো যারা আছেন, বিশেষ করে ড. কামাল হোসেন সাহেবেরও একই অবস্থান। আসল কথা হলো দল কত বড় ছোট সেটা বড় কথা নয়। আপনি কি জনগণের পক্ষে কথাও বলছেন কি না সেটাই বড় কথা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আপনার আত্মীয়তার সম্পর্ক আছে আবার বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে আপনার রাজনৈতিক জোট রয়েছে। এই বিবেচনায় রাজনীতিতে আপনাকে নিয়ে এক ধরনের সন্দেহ রয়েছে।
পার্থ: রাজনীতি যারা করে তারা আমাকে সন্দেহ করে না। যারা রাজনীতিতে এগুতে পারে না তাদের মধ্যে চামচামি, চাটুকারিতা, সন্দেহ- এগুলো থাকে। এটা একটা ক্রাইটেরিয়া। এগুলো ঢুকিয়ে তারা তাদের অবস্থান স্ট্রং করে। আমি তো প্রথম থেকেই আমার রাজনীতি করি। আমার বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে খন্দকার দেলোয়ারের (বিএনপির প্রয়াত মহাসচিব) পাশে থেকে থেকে শিখেছি। তখন আপনারা আমাকে চিনতেন না। তারপর আমি এমপি হয়েছি। তারপর আমি জেল খেটেছি। মামলা খেয়েছি। এখন কি কাদম্বিনীকে মরিয়া প্রমাণ করতে হবে কাদম্বিনি মরেনি?
রাজনীতিতে চার ধরনের মানুষ থাকে। এক হলো- যারা নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে থাকেন। একজন হলো- যারা জনমত সৃষ্টি করে। একজন যারা রাজপথে আন্দোলন করে। আরেকজন যে ছেলেটা পোস্টার লাগায়। আমি মনে করি প্রত্যেকেই ইমপর্টেন্ট। আমরা তো ওভাবে ছাত্র রাজনীতি করার সুযোগ পাইনি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে ছিলাম। কিছু কিছু ক্ষেত্রে জনমত সৃষ্টি করেছি। জনমত ক্রিয়েট করার ক্ষেত্রে ২০ দলীয় জোটের সংসদ থেকে আরম্ভ করে শেয়ার মার্কেটের ব্যাপার, বেসিক ব্যাংকের কথা সবার আগে আমার বলা। যে হলফনামা আপনারা বের করেন সেটা আমি প্রথম খুঁজে বের করেছি। হলফনামা থেকে শুরু করে ব্যাংকের কে কত মালিক তা আমি বের করেছি। বিদ্যুৎ থেকে আরম্ভ করে হেফাজত, সর্বক্ষেত্রে এবং টেলিভিশনে আমি কাজ করেছি ২০ দলীয় জোটের হয়ে। আমি মনে করি জনমত ক্রিয়েট করার যতোখানি আমার কাজ তা আমি করার চেষ্টা করেছি। আমি আমার রাজনৈতিক কাজ করে যাচ্ছি। জনমত আছে বলেই তো আপনি বলতে পারেন যে, নির্বাচন এলে আমি ক্ষমতায় যাবো। আমার পক্ষে জনগণ আছে। আমি মনে করি এতে হয়তো কেউ ঈর্ষান্বিত হয়ে আমাকে সন্দেহ করেন। কিন্তু সন্দেহের তো কিছু নেই। সবইতো ওপেন।
আমার সঙ্গে শেখ পরিবারের আত্মীয়তা এটা তো দিবালোকের মতো সত্য। এটা তো আহামরি কিছু না। এটা আমার বাবার থেকে আসা। লুকানোর কিছু নেই। আত্মীয়তা থাকতেই পারে। কিন্তু রাজনৈতিকভাবে তো কেউ কাউকে ছাড় দিচ্ছি না।
তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশ্যে কী বলবেন?
পার্থ: তরুণ প্রজন্মের প্রতি আমার একটাই আহ্বান, পলিটিক্সে জয়েন করুন। যে দলই করুন না কেন, পলিটিক্সে জয়েন করে দেশের জন্য কিছু করুন। পলিটিক্সে জয়েন না করে পলিটিক্সের সমালোচনা করবেন না। এই দেশ আমাকে কি দিল সেটা আমি দেখবো না। আমি দেশকে কি দিতে পারছি সেটা বড় কথা। আর পলিটিক্সে কেউ কাউকে বানিয়ে দেয় না। এমপি-মন্ত্রী হওয়া মানেই পলিটিশিয়ান না।
তরুণ প্রজন্ম রাজনীতি বিমুখ হয়ে গেছে। তাদের রাজনীতিতে আসতে হবে। এটা খুব ইমপর্টেন্ট। এ দেশে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেখ মুজিবুর রহমান, জিয়াউর রহমানের মতো রাজনীতিকরা ছিলেন। এখন তো বড় বড় রাজনীতিবিদদের সান্নিধ্যে যাওয়া কঠিন হয়ে গেছে। কিন্তু আমি যেহেতু ২০ দল করি আমার সম্ভব হয়েছে অনেকের কাছে যাওয়ার। সেখানে শেখার অনেক স্কোপ আছে। মুরুব্বীদের সম্মান করতে হবে। রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে রাজনীতি শিখতে হবে। রাজনীতিকে দূর থেকে দেখলে মনে হয় অনেকটা ক্রিকেট খেলার মতো সহজ। একটা বল আসলো তাতে ছয় মারা যায়। কিন্তু আসলে ওখানে দাঁড়ালে বোঝা যায় ওখান থেকে আদৌ বলটি দেখা গেছে কি না। বা আপনি খেলার যোগ্যতা রাখেন কি না। রাজনীতিতে আসতে হবে।
আমি মনে করি তরুণ সমাজ অন্যান্য সেক্টরে যেমন কাজ করছে সেই তুলনায় রাজনীতিতে আসেনি। রাজনীতি এটা চর্চার বিষয়। হঠাৎ করে ৪০/৫০ বছর বয়সে এসে রাজনীতিতে জয়েন করে আপনি হয়তো এমপি হতে পারবেন কিন্তু রাজনীতিবিদ হতে পারবেন না। এটা চর্চার ব্যাপার, প্রথম থেকেই করতে হবে। আমি হয়তো ১০ বছর অ্যাক্টিভ রাজনীতি করি। আমাকে কিন্তু জাতি অনেক পরে দেখতে পেয়েছে।
স্বাধীনতার পর কোনো সরকারই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখতে পারেনি। এ বিষয়ে আপনার পর্যক্ষেণ কী?
পার্থ: আমাদের আগের জেনারেশন চিন্তা চেতনায় অতো গণতান্ত্রিক নয়। এটা মানতে হবে। আমরা যতই মুখে মুখে গণতন্ত্র করি। গণতন্ত্র একটা প্র্যাক্টিসের ব্যাপার। যেমন আপনি আমার সঙ্গে বসে কথা বলছেন, ২০ বছর আগে একটা সাংবাদিক একজন মন্ত্রীর সঙ্গে বা এরকম কারো সঙ্গে কথা বলতে হলে অনেক চিন্তা করতে হতো। আপনি আমাকে অনেক কোশ্চেন ডাইরেক্ট জিজ্ঞেসও করতে পারেন। এই যে একটা প্রশ্ন ডাইরেক্ট জিজ্ঞেস করলেন সন্দেহ নিয়ে বা সামথিং ডিরেক্ট। আমরাও খুব হালকাভাবে উত্তর দিলাম। অনেক আগের নেতা আছে যাদের সঙ্গে এ ধরনের কথা বললে তাদের চোখমুখ লাল হয়ে যাবে। এই ধরনের কথা তারা নিতেও পারবেন না। এইটা হলো যার যার মেন্টালিটির ব্যাপার।
সুত্র-বাংলামেইল
দিপ্র হাসান liked this on Facebook.
Neel Akasher Tara liked this on Facebook.
Titu Bbl liked this on Facebook.
ভাঙ্গা কূলা liked this on Facebook.
Julhash Julhash liked this on Facebook.
Saju Ahmed liked this on Facebook.
Raju Ahammed liked this on Facebook.
Mijanur Rahman liked this on Facebook.
Ahad Khan liked this on Facebook.
Md Rasel liked this on Facebook.
Tajudeen Taj liked this on Facebook.
Sheak Mohammad Amir liked this on Facebook.
Alamgir Raj liked this on Facebook.
MG Azam liked this on Facebook.
মোহাম্মদ মনজুর আলম liked this on Facebook.
Mahfujur Rahaman liked this on Facebook.
Nazrul Islam liked this on Facebook.
Osman Osman liked this on Facebook.
Muazzem H. Sayem liked this on Facebook.
MD Babla liked this on Facebook.
Md Tuhin Mia liked this on Facebook.
Abdul Momin liked this on Facebook.
Mf Yasmin liked this on Facebook.
Md Full Miah liked this on Facebook.
Abu Yousuf Mohammad Rafi liked this on Facebook.
Kashemjhumur Kj liked this on Facebook.
Shahadat H Bhuiyan liked this on Facebook.
Moin Ahmed liked this on Facebook.
Sahidul Shake liked this on Facebook.
Mozammel Hossain liked this on Facebook.
Zahidul Islam Shahin liked this on Facebook.
Rustom Ali liked this on Facebook.
আনোয়ার শেখ liked this on Facebook.
MD Nurul Islam Sarkar liked this on Facebook.
Md Khokan Miha liked this on Facebook.
Alam Miah liked this on Facebook.
MD Niaz Morshed Tian liked this on Facebook.
Ariful Islam Jony liked this on Facebook.
Md Nadir liked this on Facebook.
I salute u boss
Ahmed Mosud liked this on Facebook.
Rizwan Mahmud liked this on Facebook.
Alhajj Jahangir Alam Shikder liked this on Facebook.
Abdul Hakim liked this on Facebook.
Aaq Tanim liked this on Facebook.
Sazzad Ahmed Shohag liked this on Facebook.
Saju Mondal liked this on Facebook.
Talha Bin Parvez Sohan liked this on Facebook.
Joshim Chowdhury liked this on Facebook.
Rashed Jamal liked this on Facebook.
Mizanur Rahaman liked this on Facebook.
MD Rezaul liked this on Facebook.
Rasel Mia liked this on Facebook.
Ropum Hassan liked this on Facebook.
M Sumon Ahmeed liked this on Facebook.
Normohammad Nor Nor liked this on Facebook.
Nazrul Nazrul liked this on Facebook.
Safiya Joly liked this on Facebook.
Sam Jan liked this on Facebook.
Khan Nizamuddin liked this on Facebook.
Rajib Khan liked this on Facebook.