১১ মাসের শিশুর হাজতবাস!

বাবাকে ধরতে না পেরে মায়ের সঙ্গে ধরে নিয়ে আসা হয় ১১ মাসের শিশু রয়েলকে। দীর্ঘ ২০ ঘণ্টা থানাহাজতে আটকে রাখা ওই শিশুও তার মাকে।

জানা যায়, মহেশপুর উপজেলার ভালাইপুর গ্রামের আজব আলীর ছেলে রাজু আহম্মদের নামে একটি মামলা ছিল। কিছুদিন আগে আদালত থেকে জামিন নিয়ে বাড়িতে আসেন। বুধবার রাতে স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে একই উপজেলার নাটিমা গ্রামে আব্দুল আজিজের বাড়িতে বেড়াতে যান তিনি। রাত ৮টার দিকে ওই বাড়িতে পুলিশ আসে। সেখান থেকে পালিয়ে যায় রাজু আহম্মদ। মহেশপুর থানার টিএসআই আমির হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ তাকে তাড়া করে আটক করতে না পেরে তার স্ত্রী আর ১১ মাসের শিশুকে আটক করে থানায় নিয়ে যান। আটকের সময় তার স্ত্রীকে মারপিট করা হয়েছে বলে তিনি জানান। এরপর তাদের টেনেহেঁচড়ে গাড়িতে তুলে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

বুধবার সারারাত ওই শিশুটিকে তার মায়ের সঙ্গে থানা হাজতে আটকে রাখা হয়। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুরু হয় টাকার দাবি। পুলিশের ওই কর্মকর্তা মা-ছেলেকে ছাড়তে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। এই টাকা না দিতে পারায় দুপুর পর্যন্ত তাদের আটকে রাখেন। এক পর্যায়ে ৪২ হাজার টাকা দিয়ে বেলা ৩টার দিকে তাদের মুক্ত করে দেন বলে অভিযোগ করেন ওই শিশুটির মা।

এ ব্যাপারে আব্দুল আজিজ জানান, তিনি বৌমাকে ছাড়াতে থানায় গেলে পুলিশ টাকার প্রস্তাব দেন। রাজু মোবাইলের মাধ্যমে যোগাযোগ করে পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে টাকার চুক্তি করেন। পরে তার ছেলে টাকা জোগাড় করে তার হাতে দিলে ওই কর্মকর্তার হাতে তুলে দেন।

এ ব্যাপারে টিএসআই আমির হোসেন জানান, রাজু আহম্মদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আছে। যে কারণে তাকে আটক করতে যান। পুলিশ দেখে রাজু পালিয়ে যান। এরপর তার স্ত্রীকে একা অন্যের বাড়িতে রেখে আসলে ক্যামন হয় তাই নিরাপত্তার জন্য থানায় নিয়ে আসেন। হাজতে রাখার বিষয়ে তিনি জানান, নিরাপত্তার জন্যই রাখা হয়েছে। আর ৪২ হাজার টাকা দিয়ে মুক্তি পাওয়ার বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান।

এ ব্যাপারে মহেশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিদুল ইসলাম শাহিন জানান, তারা স্বামী-স্ত্রী ওই বাড়িতে অবস্থানকালে এলাকার লোকজন খারাপ ধারণা করে আটক করেন। তারা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ সেখানে গিয়ে দেখেন ছেলেটি পালিয়ে গেছে। মেয়েটিকে থানায় নিয়ে আসেন। পরে তারা স্বামী-স্ত্রী জানতে পেরে ছেড়ে দেন। এখানে টাকা পয়সার কোনো লেনদেন নেই।

১০ thoughts on “১১ মাসের শিশুর হাজতবাস!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *