শিক্ষকের কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় নির্যাতন

ফেনী: মাদরাসা শিক্ষকের কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে জাহিদুল ইসলাম (১০) নামে এক শিশু শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষককে রোববার রাতে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

অভিযুক্ত ফরিদ ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার জায়লস্কর ইউনিয়নের মাকসুদা রশিদিয়া দারুল উলুম হাফেজিয়া মারাসার শিক্ষক। নির্যাতিত শিশু জাহিদুল ইসলাম একই ইউনিয়নের উত্তর খুশীপুর গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে।

জাহিদুল ইসলামের মা নাজমা আক্তার জানান, জায়লস্কর ইউনিয়নের নেয়াজপুর গ্রামে মাকসুদা রশিদিয়া দারুল উলুম হাফেজিয়া মাদরাসার শিক্ষক ফরিদ বিনা অজুহাতে আমার ছেলেকে মারধর করতো। গত রোববার সকালে আমি জাহিদকে মাদরাসায় দেখতে গেলে ফরিদ হুজুর আমাকে দেখতে দেয়নি। তখনি আমার সন্দেহ হলে আমি তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে জাহিদকে দেখার চেষ্টা করি। একপর্যায়ে দেখতে পাই জাহিদের পুরো শরীরে আঘাতে চিহ্ন। এরপর আমি মাদরাসা থেকে জাহিদকে বাড়িতে এনে চিকিৎসা করাই।

তিনি আরো জানান, এর আগেও বহুবার জাহিদের ওপর অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে। তার দুই কানের পর্দা ফেটে গেছে। কান থেকে এখনো রক্ত-পুঁজ বের হয়। শুদ্ধ কথা বলতে না পারার অজুহাত দেখিয়ে মাথার চুল ধরে ওপরের দিকে তোলে আবার মাটিতে ছেড়ে দেয়। তার দুই পায়ের হাঁটু ফুলে গেলে আমি চিকিৎসা করিয়ে পুনরায় মাদরাসায় দিয়ে আসি। এভাবে দীর্ঘদিন তার হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছে জাহিদ।

জাহিদুল ইসলাম বলে, ‘ঢাকার হুজুর (ফরিদ হুজুর) আমাকে দিয়ে শরীর ঢলাইতো, আমাকে বলতো, আমার পা ঢলে দে, পিঠ ঢলে দে, পেট ঢলে দে। এভাবে আরো অনেক কথা বলতো আমি রাজি হইতাম না। এজন্য আমাকে সব সময় মারতো। হুজুরের বাড়ি ঢাকার গাজীপুরে।’

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ মিলন জানান, এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বিষয়টি মীমাংসা করে দেয়া হয়েছে।

দাগনভূঞা থানার ওসি (তদন্ত) আনোয়ারুল আজিম জানান, ছেলের বাবা ও হুজুরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসছিলাম। ছেলের বাবা মামলা করতে রাজি হয়নি। মামলা করলে আমরা ব্যবস্থা নেবো। শিক্ষক ২০ বছর বয়সি একজন কোরআনে হাফেজ। ধর্মীয় বিষয়ের কথা চিন্তা করে বিষয়টি সেভাবে বিবেচনা করা হয়েছে।

মাদরাসার শিক্ষক হাফেজ সাহাব উদ্দিন জানান, এখানে কু-প্রস্তাবের কিছু না, নির্যাতনের মাত্রা বেশি হয়ে গেছে। শিক্ষককে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ চাকরিচ্যুত করেছে। অভিযুক্ত শিক্ষকের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

৩ thoughts on “শিক্ষকের কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় নির্যাতন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *