নির্যাতন– সাড়া বাংলাদেশের মানুষের জন্য একটি স্বাভাবিক আচরণ। এখানে ছবিতে একজন মাকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হচ্ছে। মেয়েকে যৌন হয়রানী করাতে মা প্রতিবাদ করেছিলেন।
পহেলা বৈশাখে বর্ষবরণের দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী লাঞ্ছনা ও যৌন নিপীড়নের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের একজনকে চুলের মুঠি ধরে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশের নায়েক মোহাম্মদ আনিসুর রহমান।
হ্যাপি নামের ১১ বছর বয়সি এক শিশু গৃহকর্মী্কে জাতীয় দলের ক্রিকেটার শাহাদাত হোসেন ও তার স্ত্রী অমানবিক নির্যাতন করেছে।
মহানবী হজরত মোহাম্মদ সাঃ কে ব্যঙ্গ করে ব্লগ তৈরি করা হয়। হেফাজতে ইসলাম এর প্রতিবাদে মিছিল ডাকে। এই ছবিতে হেফাজতে ইসলামের একজন সদস্যকে দুইজন পুলিশ লাথি মারছে।
শিশুরা অনুরকন করে শেখে । হবিগঞ্জের রুহুল আমিন রাহুল ভাল অনুকরণ করতে শিখেছে। রাহুল তার প্রাক্তন প্রেমিকাকে দুই তিনটা চড় থাপ্পড় মেরেছে তাতে এমন কি মহাভারত অশুদ্ধ হয়েছে? নির্যাতন সহ্য করার জন্যই মহান আল্লাহপাক মেয়েদের সৃষ্টি করেছেন।
নারী নির্যাতনের এক বিশাল তালিকা লেখার ইচ্ছা ছিল কিন্তু সময়ের অভাবে তা লেখা হলোনা। তাছাড়া লিখেই বা কি হবে? লিখেই বা কি হবে এই কথাটি আমি হতাশ হয়ে লিখছিনা। এই কথাটি লিখছি এই কারণে যেহেতু আপনারা সবাই জানেন নারী নির্যাতন একটা স্বাভাবিক ব্যাপার। নির্যাতন করার পরে আপনি সেই নারীকে বেশ্যা উপাধি দিয়ে দিন তাহলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। বেশ্যাদের নির্যাতন করা বৈধ। তাছাড়া দুচারটা চড় থাপ্পড় প্রত্যকে ঘরে ঘরে মাবোনস্ত্রীরা খেয়েই থাকেন। রাস্তায় ভিডিও ক্যামেরাতে ধারন করে এইবার নাহয় গর্বের সাথে ফেসবুকের দেওয়ালে শোভা পেলো । এখন মুঠোফোনে ভিডিও ক্যামেরা থাকে তাই সবাই সখ করে সেলফি নেয়। নির্যাতন করে গর্বের সাথে তার ধারণ করে। চড় থাপ্পড়ের দৃশ্য ধারন করে, ধীরে ধীরে এক একটা হাত পা ভেঙ্গে দেবার দৃশ্য ধারণ করে, রাস্তায় জবাই করার দৃশ্য ধারণ করে, রাস্তায় পিটিয়ে হত্যা করার দৃশ্য ধারন করে, ফিনকি দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে লাশের গলার উপরে পা দিয়ে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছে, নানা রকমের দৃশ্য, সাংবাদিকেরা তা ধারণ করে পত্রিকাতে পোস্ট করে, বন্দুক যুদ্ধে একজন মানুষের শরিরে ১৭ থেকে ৪৭ টা বুলেট ঢুকিয়ে দেয় পুলিশ র্যাবে কিন্তু যে গুলি করেছে তার শরিরের উর্দির একটি সূতোও ছিড়েনা। পুলিশ র্যাবের উর্দিতে যুদ্ধের কোন চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যায়না। যাদের হাতে অস্ত্র প্রানের ভয় তাদের বেশী। যে নিরস্ত্র তার নিরাপত্তার কোন ভয় নেই। তাই সে বুক ভরে বুলেট নেয়। নারী এখন আর অবলা নেই। ওরা এখন দুইচারটা বয়ফ্রেন্ড রাখে। দরদাম কষে নিজেরাই নিজেদের জন্য একজন মুনাফাজনক পাত্র খুঁজে নেয়। আর এই দরদাম কষার মাঝে যদি কেউ দুচারটা থাপ্পড় মেরে দেয় তাতে এমন কি অসুবিধা হতে পারে?? কিছু পেতে গেলে কিছু দিতে হবে।
কোথায় যেন একটা খটকা লাগে। দেশে এত পুলিশ, আইন, আদালত, উকিল, বারিস্টার, এরা কি সবাই না খেয়ে মরে যাবে? এদের জন্য কি কারু কোন মায়া নাই? সবাই যদি যার যার হাতে আইন তুলে নেয় তাহলে এইসব উকিলেরা কিভাবে তাদের জীবিকা নির্বাহ করবে? পুলিশ র্যাবে তাহলে তাদের স্ত্রীদের জন্য সীতা হার কি দিয়ে কিনবে? সবাইকে ভারতীয় মুভির নায়ক নায়িকার মত সেজেগুছে থাকতে হবে তাহলেই জীবন সার্থক। আর এই সার্থকতাঁর জন্যই যত চড় থাপ্পড়, ভুয়া মামলা, পিটিয়ে হত্যা, বন্ধুক যুদ্ধের গল্প। টাকা উপার্জন ও ক্রমবর্ধমান দ্রব্যমূল্য ক্রয় ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখার জন্যই সব আয়োজন।
বখাটে রাহুলের দুচারটা চড় থাপ্পড়ের যদি বিচার করা হয় তাহলে সাড়া বাংলাদেশের পুলিশ ফাঁড়িতে হাজার হাজার রাহুলকে মারা কোটি কোটি চড় থাপ্পড় আর নির্যাতনের বিচার করা দরকার। যারা বিএনপী বা জামাত শিবিরের নেতাকর্মী তারা এই ব্যাপারে ভাল বলতে পারবে। তারা কি অপরাধে জেল বা পুলিশ ফাঁড়ি থেকে পঙ্গু হয়ে বের হয়। বিচার সবার হওয়া উচিৎ।
শারীরিক বা মানসিকভাবে কোন মানুষ অন্য কোন মানুষের উপরে আঘাত করতে পারেনা। যদি করে সেটা দণ্ডনীয় অপরাধ। যে আঘাত করছে সে ছেলে হতে পারে বা মেয়ে হতে পারে বা হিজড়া হতে পারে বা প্রধানমন্ত্রি হতে পারে বা যেকেউ হতে পারে।
কারু অধিকার নেই কারুকে চড় থাপ্পড় মারার। একজন স্বামীর অধিকার নেই স্ত্রীকে চড় থাপ্পড় মারার। একজন স্ত্রীর অধিকা্র নেই স্বামীকে চড় থাপ্পড় মারার। একজন শিক্ষকের অধিকার নেই ছাত্র বা ছাত্রীকে প্রহার করার । পুলিশের অধিকার নেই মানুষকে ধরে এনে নির্যাতন করার। একজন মন্ত্রীর অধিকার নেই ট্রাফিক পুলিশকে প্রহার করার বা রিকশাচালককে অপমান করে কান ধরে উঠবস করাবার। কোন মানুষ কোন মানুষের কেনা গোলাম না। কোন মানুষ কোন মানুষের সম্পদ নয়। একজন স্ত্রী একজন স্বামীর জমিজমা নয়। মানুষকে মানুষ হিসাবে শ্রদ্ধা করা মানবাধিকার ও স্বাধীনতার অংশ। আশরাফুল মাখলুকাত শুধু পুরুষেরা নয় নারীরাও। দেশে আইন আছে। দেশে আদালত আছে। আইন শৃঙ্খলার উপরে আস্তা আসবে না যদি মানুষ নিজের হাতে আইন তুলে নেয় আর আইন শৃংখলারক্ষকারী বাহিনী ও আদালত এই অবস্থার পুরাপুরি ফায়দা উঠিয়ে যার যার আখের গোছায়।
দেশের পচাগলা আইনগুলোকে ছুঁড়ে ফেলে দিতে হবে। সকল অপরাধীকে আইনের আওতায় এনে যথাযথ বিচারের মাধ্যমে শাস্তি দিতে হবে। আইনের শাসন যদি প্রতিষ্টিত না করা হয়, যদি আদালতের সিদ্ধান্তকে নিরপেক্ষ করা না হয় তাহলে এই অসভ্য সমাজ অসভ্যই থেকে যাবে চিরকাল।
প্রতিটি অন্যায়ের বিচার হোক। অপরাধীরা শাস্তি পাক। অপরাধের শিকারেরা ন্যায় বিচার পাক। একটি সভ্য দেশ হিসাবে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়াক।
Gaffar Ali liked this on Facebook.
বাগাতিপাড়া পৌর ছাত্রদল liked this on Facebook.
Moin Ahmed liked this on Facebook.
Rezina Akhter liked this on Facebook.
Sadeq Hasan Mridha liked this on Facebook.
Jahangir Kabir liked this on Facebook.
Ashique Imam Ovee liked this on Facebook.
Hma Hasan Zawad liked this on Facebook.