কে এই হতভাগ্য দুবাই প্রবাসী?

কামরুল হাসান জনি, ইউএই:

কথায় আছে, দূর পরবাসে পরিবারের আদর মিলে না। আত্মীয়-স্বজন থাকলেও ব্যস্ততায় পর হয়ে যায়। কিন্তু যাদের আত্মীয় স্বজনও নেই, তাদের অবস্থাটা কেমন হয় পরবাসে! সহকর্মীদের কেউ হয়ে উঠেন ভাল বন্ধু। সে বন্ধুর হাত ধরে ধীরে ধীরে পরিচিতি বাড়ে পরবাসে। সম্পর্ক গভীর হয় বন্ধুত্বের। সুবিধা-অসুবিধা বা রোগাক্রান্ত হলে তারাই এগিয়ে আসে। কিন্তু যার বন্ধুই নেই, বাকশক্তিহীন হাসপাতালের বেডে শুয়ে নির্বাক নয়নে তাকিয়ে থাকেন। যার করণীয় কিছুই থাকে না! দূর পরবাসে তার কে আছে বন্ধু, কে বা স্বজন? মাসের পর মাস হাসপাতালের বিছানায় পড়ে থাকলেও যার পরিচয় মিলে না। তখন যে কেউ প্রশ্ন করতে পারেন, কে এই হতভাগ্য প্রবাসী?

সংযুক্ত আরব আমিরাতের উম্ম আল কোয়েইন হাসপাতালের বিছানায় গত ২১ এপ্রিল থেকে অসুস্থ্য অবস্থায় পড়ে আছেন এমনই এক প্রবাসী বাংলাদেশি। হাসপাতালের রেজিস্টার খাতায় দুটি নাম তার মোহাম্মদ তাবীদুর রহমান ও সজীব আলি। কিন্তু কোনটা তার নাম আর কোনটা বাবার এ নিয়ে রয়েছে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব। কারণ, ওই রোগী সঠিকভাবে দিতে পারছেন না কোনো তথ্য। বলতে পারছেন না নিজের নামটিও। তবে তার বাড়ি হবিগঞ্জ জেলায় হতে পারে বলেন জানিয়েছেন উম্ম আল কোয়েইন প্রবাসী রুবেল আহমেদ শিবলু।

তিনি জানান, আমি অন্য একজন রোগী দেখতে উম্ম উল কোয়েইন হাসপাতালে গেলে এই রোগীর সন্ধান পাই। তবে সে তার নাম বা ঠিকানা কিছুই বলতে পারছে না। হাসপাতালের কয়েকজন নার্স ও রেজিস্টার খাতা দেখে জানতে পারি এপ্রিল মাসে শারজার কোনো হাসপাতাল থেকে তাকে উম্ম আল কোয়েইন হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। আগে হবিগঞ্জে কিছু লোকজন তাকে দেখতে আসতো। এখন তারাও আসে না। বর্তমানে হাসপাতালে নিয়ম অনুযায়ী চিকিৎসা চলছে তার। কোন অভিভাবক না থাকায় ভালো চিকিৎসা পাচ্ছে না এ হতভাগ্য প্রবাসী। গণমাধ্যম ও কনস্যুলেটের মাধ্যমে যদি তার আত্মীয় স্বজনের খোঁজ মেলে, তবেই হয়তো সে দেশে ফিরে যেতে পারবে।

এ ব্যাপারে দুবাইস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটের প্রথম সচিব(শ্রম) একেএম মিজানুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কনস্যুলেটের কাছে ওই রোগী সম্পর্কে আপাতত কোনো আপডেট নেই। তবে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এ রোগী সম্পর্কে কেউ একজন আমাদের অবহিত করেছেন। আশা করি, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে আমরা তাকে দেখতে হাসপাতালে যাবো।

 

২২ thoughts on “কে এই হতভাগ্য দুবাই প্রবাসী?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *