মুনওয়ার আলম নির্ঝর
শিরোনামে সানি লিয়ন থাকলেও শুরুতে তার কথা বলছি না। যাবো মাস খানেক আগের যুক্তরষ্ট্রে বসবাসকারী আত্মস্বীকৃত ‘নাস্তিক’ আসিফ মহিউদ্দীনের কাছে। প্রথমে আমার তারে নিয়ে যেঁ সন্দেহ সেটা সে আসলেই নাস্তিক তো!! কারণ তাকে কখনওই দেখিনি নাস্তিকের মত আচরণ করতে। তার আচরণ ছিল কোন এক বিশেষ ধর্মের বিরুদ্ধে। যাই হোক সেটা তার ব্যক্তিগত ব্যপার। যে কারণে তার কথা আসলো সেটা আগে বলি। দেশ থেকে গোপনে পালিয়ে যাবার পর ভুলোমন বাংলাদেশীরা একদমই তার কথা ভুলে গিয়েছিল। হঠাৎ করে
সবাই তাকে ব্যাপক ভাবে স্মরণ করলো তার কারণও সে নিজেই। কাবা শরীফকে সে রেইনবো রঙে রাঙিয়ে আলোচনায় আসে। তাকে আলোচনায় আসতে কিন্তু আমরাই সাহায্য করেছি আর সেও চাচ্ছিল আরও একবার সবার সামনে হাজির হয়ে নিজের নাম ছড়াতে। কিভাবে তাকে আমরা হাইলাইটস করেছি জানেন??
বাংলায় একটা প্রবাদ আছে “গু যত ঘাটবেন, গন্ধ তত ছড়াবে”। আমরা ঠিক এই কাজটিই করেছি। তার সেই বিতর্কিত ছবির স্ক্রিন শট নিয়ে ফেসবুকে বিশাল বিশাল স্ট্যাটাস দিয়ে ভাসাইয়া দিছি। আর সাথে তো আছেই কিছু অনলাইন পোর্টাল গু ঘেটে তার গন্ধ সবার মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য। ফলাফল আসিফ ম্মহিউদ্দীন যা চেয়েছেন তাই পেয়েছন। তিনি এসে গেছেন বাংলাদেশের মানুষের মুখেমুখে আর সাথে মিডিয়ার আলোয়।
এবার আসি কেন আমি হঠাত এই গু ঘাটতে গেলাম। খুব জোড়েসোড়ে শোনা যাচ্ছে সাবেক ইন্দো-কানাডিয়ান পর্ণ স্টার সানি লিওন আসছেন বাংলাদেশে আর তাকে প্রতিরোধ করবেন হেফাজত-ই-ইসলাম। খুব ভাল কথা। সমস্যা অন্য জায়গায় হেফাজত ইসলামের বহু দিন কোন খবর ছিল না হঠাত গরম হয়ে ওঠার কারণ কি? সানি লিওন ছাড়া আরও ভাল কিছু ইস্যু কিন্তু মাঝখানে চইলা গেছে সেই সময় চোখ-কান বন্ধ ছিল নাকি বন্ধ রাখতে বলা হয়েছিল। আসলে সানি লওন আসলেও আমাদের সমস্যা নাই আর না আসলেও সমস্যা নাই সমস্যা হচ্ছে ত্যানা প্যাচানোটা নিয়ে। আমরা জাতি হিসেবে যতটা ভুলোমনা ততটাই ত্যানা প্যাঁচাতে ওস্তাদ। আমরা যদি একটু হিসেব মিলাই লতিফ সাহেব মুহাম্মদ (সঃ) কে অপমান করে সগৌরবে কোর্ট-কাচারীতে ঘুড়ে বেড়াচ্ছে আর হেফাজতের সেদিকে মাথা ব্যাথা নেই। তাদের মাথা ব্যাথা সানি লিওনকে নিয়ে!! না মানে একটু তো ঝামেলা আছেই। তারাও কি নারীদের বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন। নাকি ৫৭ ধারার যে ফাপড়ে দেশের সরকার পড়েছে তা থেকে রক্ষা পেতে ব্যবহার করা হচ্ছে এদেরকে। নাহয় আন্দোলন করার এত ইস্যু থাকতে হুজুরদের এখন সানি লিওনকে নিয়ে পড়বে কেন???
সানি লিওন দেশে আসলে তাদের যদি জাত-মান সব চলে যায় তাহলে দেশে যারা নিজেদের সানি লিওন দাবি করেন তাদের কিছু কেন বলেন না কিংবা অনেক মন্ত্রী-এমপিও ত আছেন যে বেশ ভাল ভাল ইতিহাসের অধিকারী। কানে কানে জিজ্ঞেস করবেন বলে দিবে সবাই। জোর গলায় বললে ৫৭ ধারায় কে ফাঁসতে চায় বলুন। আসলে ভাই আপনাদের ধারণা মেয়েটা একটা ব্যাশ্যা। এদেশে কোন ব্যাশ্যাকে আসতে দেবেন না। তাহলে এদেশের ব্যাশ্যাদের কি করবেন। কিছুই করতে পারবেন না কারণ তাদের একটা কেজ্র সুযোগ আপনারা দেননি। তারা কিন্তু চুরি কিংবা ভন্ডামি করে মানুষকে ঠকিয়ে টাকা নেয় না কিংবা ভিক্ষাও করে না সেদিক থেকে তাদের কি করবেন আর বলবেন বলুন। আগে দেশের যারা আছে তাদের তাহলে একটা ব্যবস্থা করুন। কথায় বলে না আগে ঘর তারপর পর।
আসলে এই সানি লিওন আসাটা কোন ইস্যুওই না। আসল ইস্যু শিশু নির্যাতন আর ব্লগার হত্যা যেটা চাপা দিতেই এই নতুন চালটা চালা হয়েছে। আরা সাথে বাড়তি মাত্রা যোগ হয়েছে ‘বন্দুকযুদ্ধ’ । আসলে এই সবকিছুই চাপা দেয়ার দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছে হেফাজত-ই-ইসলাম কারণ তারা সানি লিওনকে সামনে এনে সকল অন্যায়কে দেশবাসীর চোখের আড়ালে নিয়ে গেছে।
অনেক বলেন যে হেফাজত এই কাজ করছেন দেশকে রক্ষা করতে। তাহলে দেশ রক্ষা করার যদি খুবই ইচ্ছা থাকে তাহলে এই বন্দুকযুদ্ধ নাটক তারা বন্ধের প্রতিবাদ করুক নাকি সেখানে প্রতিবাদ করতে মানা আছে। বন্দুকযুদ্ধ নিয়ে কথা বলতে ভয় থাকলে আসুন ৫৭ ধারা নিয়ে কথা বলুন আন্দোলন করে উড়িয়ে দিন এই কালো আইন। আসলে আপনারা ইসলামের নাম ব্যবহার করে ইসলামেরই ক্ষতি করছেন তার উদাহরণ আর নিশ্চই দিতে হবে না। কারণ আপনারা সামান্য অন্যায়ের প্রতিবাদের কথা বলে বড় অন্যায়গুলকে সবার আড়ালে নিয়ে যাচ্ছেন আর আপনাদের সাথে তাল মিলাচ্ছি আবেগী বিশাল একটা অংশ।
বন্দুকযুদ্ধের কথা যখন আসলোই তখন কিছু একটু বলি। ভাই এত যে বন্দুকযুদ্ধ হয় তাতে খালি সন্ত্রাসীই মরে কেন?? আপনাদের তো একটা পশম ছিড়তেও শুনি না!! আপনারা এত ভাল যোদ্ধা তাহলে বিজিবিরে দেশের ভেতরে পাঠাইয়া দেন ওরা সীমান্তে বিএসএফ আর বিজিপির সাথে পারে না আপনারা যান যেহেতু আপনারা অনেক বড়……… । আরও একটা কারণে বিজিবিরে ভেতরে নিয়ে আসা উচিত কারণ তারা সীমান্তে কি করে যে দেশের ভেতর এত অস্ত্র চলে আসে আর তাই নিয়ে আপনাদের মত এত পাক্কা লোকদের ওপর সন্ত্রাসীরা হামলা করে।
শেষে এইসবের বাইরের কিছু কথা বলে যাই, ঘটনা হচ্ছে কেন যেন এইসব বন্দুকযুদ্ধ নামক নাটকে দেখে মনে হচ্ছে সামনের মাসটা খুবই খারাপ আসছে আমদের জন্য। আরও একটা বেশ ভাল শঙ্কা কাজ করছে মনে এক অস্পতাহের জন্য গ্রীসের ঝামেলায় পড়তে যাচ্ছে না তো দেশ। এটা আমার শঙ্কা। শঙ্কার কথা বললেও কি ৫৭ ধারা আছে নাকি!!
তালুকদার সাহেব liked this on Facebook.
Akther Hamed liked this on Facebook.
হোসেন মোহাম্মদ সেলিম liked this on Facebook.
Md Azizul liked this on Facebook.