বাংলাদেশে র্যাবের হাতে আটক তিনজনকে আজ ঢাকার একটি আদালতে হাজির করে লেখক অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতদিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।
এই আটকদের মধ্যে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক তৌহিদুর রহমানের গ্রেপ্তারের সময় নিয়ে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছে।
ঢাকায় থাকা বোন অভিযোগ করেছেন, তার ভাইকে গত মে মাসে বাড়ি থেকে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার পর কোন খোঁজ না পেয়ে তারা অপহরণের অভিযোগে জিডি করেছিলেন। এখন সংবাদমাধ্যমের খবর থেকে তারা আটকের ব্যাপারে জানতে পারেন।
তবে পুলিশ এবং র্যাব বলেছে, সোমবার রাতে তৌহিদুর রহমানসহ তিনজনকে আটক করা হয়। আটকের পর তারা জঙ্গি সংগঠন আনসারউল্লাহ বাংলা টিম এবং ব্লগারদের দু’টি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে বলে র্যাব বলেছে।
বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক তৌহিদুর রহমানের আইনজীবী এল এম কামালউদ্দিন তার মক্কেলকে মানসিক ভারসাম্যহীন বলে উল্লেখ করে জামিনের আবেদন করেছিলেন। আদালত জামিন মঞ্জুর করেনি।
তৌহিদুর রহমানের বড় বোন নাসেরা বেগম, যিনি ঢাকায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে হৃদরোগ বিষয়ে চিকিৎসক, তার ভাইয়ের আটক নিয়ে ভিন্ন তথ্য দিচ্ছেন।
“আমার ভাইকে কিছু লোক ধরে নিয়ে গেছে মে মাসের ২৮তারিখে। আমিতো কোন খোঁজ না পেয়ে থানায় জিডি করেছি অপহরণের অভিযোগে। এখন খবর পেলাম মানুষের কাছে যে টিভিতে বলেছে জঙ্গি ধরেছে।”
তৌহিদুর মানসিক রোগী?
জঙ্গি সংগঠন আনসারউল্লাহ বাংলাটিমের সাথে জড়িত থাকা এবং লেখক অভিজিৎ রায়কে হত্যায় জড়িত থাকার যে অভিযোগ আনা হয়েছে তৌহিদুর রহমানের বিরুদ্ধে, সে ব্যাপারে নাসেরা বেগম বলেন, তার ভাই দেশে ফেরার পর থেকে বাইপোলার রোগে ভুগছেন। সেকারণে তার ভাই কোন কাজ করেনা, সবসময় বাসায় থাকতো এবং নামাজ পড়তে মসজিদে যেতো।
নাসেরা বেগম আরও বলেন, মসজিদে কারও সঙ্গে যোগাযোগ হলে সেটা তার জানা নাই। তবে তার ভাই কোন সংগঠন করার মত সুস্থ ছিল না বলে তার দৃঢ় বিশ্বাস।
তৌহিদুর রহমানকে মে মাসে বাসা থেকে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ তার আইনজীবী আদালতেও তুলে ধরেছেন।
মঙ্গলবার ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে তৌহিদুর রহমানসহ আটক তিনজনকে আদালতে হাজির করে র্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, সোমবার মধ্যরাতের পর ঐ তিনজনকে আটক করা হয়।
আটকরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আনসারউল্লাহ বাংলাটিমের সাথে জড়িত থেকে লেখক অভিজিৎ রায় এবং অনন্ত বিজয় দাশকে হত্যার কথা স্বীকার করে বলে র্যাব সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিল।
পরিবারের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান
র্যাবের কর্মকর্তা মাকসুদুল আলম বলেছেন, মে মাসে আটকের অভিযোগ সঠিক নয়। তিনি বলেন, এমন অভিযোগ এনে জঙ্গি তৎপরতা এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ আড়াল করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
তৌহিদুর রহমানের বয়স ৫৬ বছর। অবিবাহিত মি: রহমান পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে দ্বিতীয়। বাংলাদেশ বিমানে ক্যাটারিং সার্ভিসে চাকুরিচ্যুত হয়ে ১৯৯১ সালে তিনি লন্ডনে যান। সেখান কম্পিউটার সায়েন্সে পড়াশুনা করে নাগরিকত্ব পেয়েছিলেন। এরপর তিনি একই পূর্ব লন্ডনে থাকতেন।
তার গ্রামের বাড়ি যশোরে। ২০১৩ সালে ঢাকায় ফিরে তিনি ঢাকার ধানমন্ডি এলাকায় তার বড় বোন ডা: নাসেরা বেগমের বাসায় থাকতেন। নাসেরা বেগম জানিয়েছেন, তার মায়ের অসুস্থতার জন্য তার ভাই দেশে ফিরে আর লন্ডনে যাননি।
সুত্র-বিবিসি বাংলা
Joy bangla
Mizanur Rahaman liked this on Facebook.
Anayet Ullah Emon liked this on Facebook.
Wahid Ali liked this on Facebook.
Md Abdullah All Fahad liked this on Facebook.
ফরহাদ চৌধুরী চয়ন liked this on Facebook.