কাজের গতি কমায় যে ৭ বদভ্যাস

সারা দিন অফিসে থাকলেন কিন্তু দিনশেষে দেখলেন কাজের ঝুড়ি শূন্য। কেমন লাগবে? খারাপ লাগাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এই যে আট ঘণ্টা অফিসে থাকলেন তারপরও ঝুড়ি ফাঁকা কেন? নিজেকে প্রশ্ন করে দেখুন, কাজে আপনার কোনো গাফিলতি ছিল কি? যদি উত্তর হয়- না, তাহলে আপনাকে কিছু খুঁত ধরিয়ে দিচ্ছে ক্যারিয়ার অ্যাডিক্ট ডটকম। ছয় ধরনের বাজে অভ্যাস অফিসে আপনার কাজের ক্ষতি করে চলছে, আপনার অজান্তেই কিংবা জেনেবুঝেই ভুল করছেন আপনি। চলুন অফিসে থাকাকালে কী করবেন আর কী করবেন না।

১. অফিসে দেরি করে ঢোকা

ঢাকা শহরে থাকেন, জ্যামে মাঝেমধ্যে দেরি হয়ে যেতেই পারে কিন্তু সেটাই যদি নিয়মিত ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায় সেটাই আপনার কাজের গতি কমিয়ে দেয়। অফিসে দেরি করে ঢোকা মানে দেরি করে কাজ শুরু করা। শুরু থেকেই যদি পিছিয়ে থাকেন তাহলে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাবেন কম। আপনি যদি প্রতিদিন অফিস শুরু হওয়ার ১৫ মিনিট আগে কাজ শুরু করেন তাহলে দেখবেন বাকিদের চেয়ে এগিয়ে থাকবেন। অফিসে বসে ঠান্ডা হয়ে হাতের কাজগুলো দ্রুত সেরে ফেললে বাকি কাজগুলোও তাড়াতাড়ি হবে।

২.  কায়িক শ্রম না করা

সারাক্ষণ অফিসে বসে কাজ করলেই যে কাজ ভালো হবে, এমনটা কিন্তু মোটেও নয়। বরং সারাক্ষণ অফিসে বসে থাকলে আপনার ক্ষতি হয়। অলসতা ভর করে অল্প সময়ের মধ্যেই। চেষ্টা করুন হাঁটাহাঁটি করতে। অফিস থেকে বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত কিংবা বাসা থেকে বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত হেঁটে যান। লিফটে না উঠে সিঁড়ি দিয়ে উঠুন, অফিসের মধ্যেই কিছুক্ষণ পর হাঁটহাঁটি করুন। তাহলে শরীর ভালো থাকবে, আরো বেশি কাজ করতে পারবেন।

৩. ঘন ঘন চা-সিগারেটের বিরতি নেবেন না

কাজের মধ্যে বিরতি নেওয়ার প্রয়োজন আছে। তবে অতিরিক্ত বিরতি কাজের ক্ষতি করে, মূল্যবান সময় নষ্ট করে। অনেকেই চা কিংবা সিগারেটের অজুহাতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাইরে কাটিয়ে আসেন। দেখা যায় দিনের সিংহভাগই চলে যাচ্ছে চা-সিগারেটের কবজায়। এরপর অফিস থেকে বের হতে দেরি হয়ে যায়, কারণ হাতের কাজ শেষ করতে বাড়তি সময় লেগে যায়।

৪. অস্বাস্থ্যকর খাবার

সারা দিন অফিসে আছেন। দিনে অন্তত আট ঘণ্টা তো থাকতেই হয়। এই সময়ে খাবারদাবারের প্রতি নজর দিন। অস্বাস্থ্যকর কিংবা ক্ষতিকারক খাবার এড়িয়ে চলুন। বাজে খাবার আপনার কার্যক্ষমতা এবং কাজের আগ্রহ কমিয়ে দেয়।

৫. এলোমেলো করে কাজ করা

গুছিয়ে কাজ করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এলোমেলোভাবে কাজ করলে আরো ঝামেলা বাড়বে। নিজের একটা দৈনিক রুটিন গড়ে তুলুন। সঙ্গে কাগজ-কলম রাখতে পারেন। প্রতিদিনের কাজের তালিকা এবং আগামী দিনের কাজের তালিকা করতে পারেন। এতে অফিসে এসে ভাবতে হবে না, সরাসরি কাজে নেমে যেতে পারবেন।

৬. ফোনে অতিরিক্ত মনোযোগ

স্মার্টফোনটাকে একটু দূরে সরিয়ে রাখুন। জরুরি কাজ বা মিটিংয়ের সময় নিশ্চুপ করে রাখুন। ব্যক্তিগত ফোন, টেক্সট বা ইমেইল নিয়ে যদি ব্যস্ত থাকেন, তাহলে অফিসের কাজ পড়েই থাকবে। প্রয়োজনীয় ফোন ছাড়া ফোনটাকে টেবিলের একপাশে রেখে দিন। দেখবেন কাজের গতি বাড়বে।

৭. সামাজিক যোগাযোগ বেশি নয়

আজকাল ফেসবুক, টুইটার, গুগল প্লাস ইত্যাদি নানা ধরনের সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম রয়েছে। এসবের মাধ্যমে বন্ধু বা পরিচিতদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা হয় ঠিক, কিন্তু অফিস চলাকালে আপনি যদি ফেসবুক বা টুইটারেই বেশি সময় কাটান তাহলে আপনারই ক্ষতি। একদিকে আপনি কাজে পিছিয়ে যাবেন, অন্যদিকে অফিসের অন্যরাও আপনার প্রতি বিরক্ত হতে পারে। কাজেই অফিসের কাজ শেষ করে বাসায় গিয়েই যোগাযোগ রক্ষা করুন, আর অফিসে কাজ করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.