শেখ হাসিনা-নরেন্দ্র মোদি বৈঠক

ঢাকাঃ সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে পণ্য ও পরিবহন ব্যবস্থার উন্নতির ওপর জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বুধবার দুপুরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে এক সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা আরো বলেন,  ‘সার্কভুক্ত দেশগুলো পণ্য ও পরিবহন ব্যবস্থার ক্ষেত্রে উন্নতি ঘটাতে পারলে তা প্রতিটি দেশের পক্ষেই লাভজনক হবে।’

শেখ হাসিনার এই প্রস্তাবে সম্মতি জানান নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, ‘বিষয়টিকে আরো গুরুত্ব সহকারে সার্কভুক্ত প্রতিটি দেশকে এই প্রস্তাবে এগিয়ে আসতে হবে।’

নয়াদিল্লিতে ভারতের রাষ্ট্রপতির প্রণব মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রী শুভ্রা মুখোপাধ্যায়ের মরদেহের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পর ৭ রেসকোর্স রোডে নরেন্দ্র মোদির বাসভবনে তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ১১টার (বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টা) দিকে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।

বার্তা সংস্থা ইউএনবি জানিয়েছে, বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।

বৈঠকে দুই নেতার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। সেই সঙ্গে দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থে যৌথ বাণিজ্যের বিষয়েও আলোচনা করেন তাঁরা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের দুই দেশের একটি বিশাল বাজার আছে। উভয় দেশের পারস্পরিক ব্যবসার স্বার্থে আমরা একসঙ্গে অনেক কিছু করতে পারি।’

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আরো জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ-ভারত-নেপাল ও ভুটানের মধ্যে সম্প্রতি নেওয়া মোটর ভেহিকেল চুক্তির উদ্যোগকে স্বাগত জানান দুই প্রধানমন্ত্রী।

বার্তা সংস্থা ইউএনবি জানায়, কোনো সমস্যা ছাড়াই স্থলসীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, ‘যে কোনো রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেয়ে বাস্তবায়ন করা কঠিন। তবে এই স্থলসীমান্ত চুক্তি কোনো সমস্যা ছাড়াই বাস্তবায়িত হওয়াটা বিশ্বের জন্য একটা নজির হিসেবে থাকবে।’

রাজনীতি বিজ্ঞান বিশেষজ্ঞরা এই বিষয়টি নিয়ে কেস স্টাডি করতে পারেন বলেও মন্তব্য করেন নরেন্দ্র মোদি।

এ ছাড়া সম্প্রতি তাঁর বাংলাদেশ সফরের আতিথেয়তার বিশেষ প্রশংসা করেন নরেন্দ্র মোদি। সেই সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করতে পেরে নিজের আনন্দের কথাও জানান তিনি। এই জাদুঘরটির আধুনিকায়নে ভারত আগ্রহী বলে জানান নরেন্দ্র মোদি। সে কারণে শিগগিরই একটি বিশেষজ্ঞ দল জাদুঘরটি পরিদর্শনে যাবে বলেও জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব জানান, এই বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলার কথা উল্লেখ করে বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ভারত এবং বাংলাদেশের একটা বড় সমস্যা। সেই সমস্যা সমাধানে সামরিক মহড়ার কায়দায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করতে ভারত-বাংলাদেশের মিলিত মহড়ার প্রস্তাব দেন তিনি। যে প্রস্তাবে সম্মতি জানান বংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সেই সঙ্গে এ বছরের নভেম্বর মাসে লন্ডন সফরের সময় শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকের সঙ্গে দেখা করার আগ্রহ প্রকাশ করেন নরেন্দ্র মোদি।

এ সময় শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা নিহত হওয়ার পর প্রণব মুখোপাধ্যায়ের পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক শুরুর কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘মুখোপাধ্যায় পরিবারের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক দিনে দিনে আরো দৃঢ় হয়েছে। সে জন্যই শুভ্রা মুখোপাধ্যায়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আমি এখানে এসেছি।’

বৈঠকে শেখ হাসিনার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন তাঁর বোন শেখ রেহানা, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীসহ বাংলাদেশের বেশ কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা।

৭ thoughts on “শেখ হাসিনা-নরেন্দ্র মোদি বৈঠক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *