প্রবীর সিকদারের পরিবারের ১৪ জন সদস্য ভুল করেছিলেন। অনেক বড় ভুল। ১৯৭১ সালে উনারা যদি একটু বুদ্ধি করে ভারতে চলে যেতেন । সেখানে যেয়ে সোনাগাছিতে আয়েশ করতেন বা সোনার দোকানে কেনাকাটা, ভারতীয় মুভি দেখে, বা তাস খেলে বা তাজমহল দেখে নয় মাস কাটিয়ে দিতেন তাহলে আজ উনি সাংবাদিকতা করার অপরাধে প্রহৃত হয়ে পা হারাতেন না বা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগার অপরাধে আইনভাঙ্গা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী বাহিনীর কাছে জেনারেল ডায়েরী না করতে পেরে উলটা গ্রেফতার হয়ে হাজারবার হাজার অপরাধীর সামনে জবাবদিহি করতে করতে হয়রান হয়ে অবিচারের জন্য অপেক্ষা করতেন না।
বিচারের বানী নীরবে নিভৃতে কাঁদছে কত যুগ ধরে।
ভুলের মাসুল তো দিতেই হবে।
১৯৭১ সালে যারা মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন তারা সবাই তাদের ভুলের মাশুল দিয়েছেন। এখন তাদের পরিবারের সদস্য ও তাদের সন্তানেরা সেই ভুলের মাশুল চুকাচ্ছেন।
১৯৭১ সালে যারা গনহত্যা করে সেই পাকিস্তান আর্মীকে ভারতের সহায়তায় নিরাপদে পাকিস্তানে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। গনহত্যার নায়কেরা তাদের কৃত অপরাধের জন্য ফুল দিয়েও আঘাতপ্রাপ্ত হয়নি। প্রবীর সিকদার কেমন সাংবাদিক ? উনি ইতিহাস জানতেন না ? ১৯৭১ সালের নয় মাস যারা বিদেশের মাটিতে বসে তাস পিটিয়েছে বা গান শুনেছে বা সোনাগাছিতে আহরণ/আরোহণ মদিরাশক্ত হয়েছেন, ১৬ই ডিসেম্বরের পরে তারাই পূর্ব বাংলাতে ফিরে এসে মন্ত্রী হয়েছেন। কেউ কেউ 16th Division এ যোগ দিয়েছেন। ১৯৭১ সালের নয় মাস যারা আরাম করেছেন তারা ১৬ই ডিসেম্বরের পরে মুক্তিযোদ্ধার দায়িত্ব পালন করেছেন। হানাদার বাহিনীর বন্দুক যারা কাঁধে নিয়ে ঘুরেছেন, হানাদার বাহিনীকে পথ দেখিয়ে তাদের শত্রুর বাসা চিনিয়ে নিয়ে গেছেন তাদের শত্রু নিধন করতে, তারাই ১৬ই ডিসেম্বরের পরে আরাম ভোগ করেছেন। এখন তারা অনেক বড় বড় সম্পদশালী ব্যক্তিত্ব। অনেকেই বইও লিখেছেন। অনেকে ঘাতক নির্মুল কমিটিতেও যোগ দিয়েছেন। প্রবীর সিকদার কেমন সাংবাদিক? উনি কি এইসব কিছু জানতেন না ?
যারা যুদ্ধে যায়নি তারা ফিরে এসেছে। যারা যুদ্ধে গেছিল তারা হয় মারা গেছেন নয় পালিয়ে বেড়াচ্ছেন অপরাধী হিসাবে। যারা যুদ্ধে গেছিল তাদের হত্যা করা হয়েছে সন্ত্রাসী নাম দিয়ে। যারা যুদ্ধে যায়নি তাদের হাতে হত্যা করা হয়েছে যারা যুদ্ধে গেছিল তাদের। হোসেন মোহাম্মদ এরশাদকে দেখেও তো সব আর্মীরা শিক্ষা নিতে পারতেন। হোসেন মোহাম্মদ এরশাদ যুদ্ধে যাননি। পাকিস্তান থেকে পালিয়ে অনেক আর্মী অফিসার মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন। তাদের সবাইকে হত্যা করা হয়েছে। তাদের পরিবার এখন প্রবীর সিকদারের মত ভয়ে ভয়ে জীবন নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে । যেহেতু তারা ভুল করেছিলেন যুদ্ধে যেয়ে। তাই ১৬ই ডিসেম্বরের পরে তেতাল্লিশ বছরে তারা তিল তিল করে তাদের ভুলের মাশুল দিয়েছেন। এখন তাদের পরিবার ও সন্তানদের পালা—তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছে জীবন নিয়ে। তারা এখন গুম নাম।
যারা যুদ্ধে যায়নি তারা এখন মন্ত্রী বা তাদের পদলেহনকারী। যারা যুদ্ধে যায়নি তারাই এখন দিল্লীর প্রিয় রাজ্য সরকার। ইস্পাহানী এসেছিলেন ইরান থেকে। পারস্য শিয়া মুসলিম কিভাবে সিলেটের চা বাগানের মালিক হয়েছিলেন আমি জানিনা। সম্ভবতঃ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী যেভাবে পূর্ব বাংলার মালিক ছিলেন বা আছেন সেভাবেই। রবীন্দ্রনাথে স্বীকৃতি দিয়েছিল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীকে ভারতের ভাগ্য বিধাতা হিসাবে। জনগনমন অধিনায়ক জয়ো হে ভারত ভাগ্য বিধাতা – ইংরেজের বড় লাটের অভিষেকে এই গান রচনা করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ইংরেজের মন জয় করেছিলেন বিনিময়ে কোম্পানী বাহাদুর নোবেল প্রাইজের জন্য রবীন্দ্রনাথকে বেছে নিয়েছিলেন। ইংরেজেরা কৃতজ্ঞ ছিল। কিন্তু বাঙ্গালীরা কৃতঘ্ন । বাঙ্গালীরা মিরজাফর। হিংসার বিরুদ্ধে অহিংস আন্দোলন করে মহাত্মা গান্ধী ইংরেজদের নিরপত্তা দিয়েছিল। মহাত্মা গান্ধী এক গালে চড় খেয়ে অন্য গাল পেতে দিয়েছিলেন ইংরেজদের। দুইগালে চড় খেয়ে নেংটি পড়ে সবাইকে ইংরেজের গুলি খাবার জন্য আহ্বান জানিয়ে চুপচাপ বসে চড়কায় সুতা কাটতেন। বিনিময়ে ইংরেজেরা মহাত্মা গান্ধী নাম দিয়েছিল তার, ইংরেজেরা তার নামে মুভি বানিয়েছে, বই লিখেছে, ইংরেজেদের প্রচার ছাড়া গান্ধির নাম কেউ জানতোনা এই ভূভারতে । ইংরেজরা কৃতজ্ঞ। প্রবীর সিকদার কি এইসব কিছুই জানতেন না??
প্রবীর সিকদার ইতিহাস পড়েন নাই। ইতিহাস অনুভব করেন নাই। সেই ভুলের মাশুল দিচ্ছেন তিনি। কৃতঘ্নতা হলো আমাদের জাতীয় চরিত্র। মিরজাফর হলো আমাদের জাতীয় গৌরব। আসুন সবাই পদলেহন করি। মিরজাফর হয়ে ভাইয়ের পীঠে ছোড়া ভুকে যার যার আখের গুছিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করি।
ধারা ৫৭ এর জয় হোক।
ইয়াহিয়া খানেরা দেখা মাত্র গুলি চালিয়েছে।
ইয়াহিয়া খানেরা যাদের হেফাজত করেছে তারা শোনা বা পড়া মাত্র ধারা ৫৭ গ্রেফতার করছে।
এই ধারা মানুন। জেলে তেমন জাগা নাই। অনেক নিরীহ মানুষ তাদের ভুলের মাশুল দিচ্ছে জেলের ভেতরে। পদলেহন যদি না করতে পারেন তাইলে অন্ততঃ চান্দা রেডি রাখেন । ব্যাংককে দেখেছিলাম সবার বাসার সামনে একটা বাক্সের উপরে ছোট্ট গৌতম বুদ্ধ বসে আছে। সেখানে কিছু খাবার বা পয়সাও রাখা দেখলাম। পাখীরা খাবার খাচ্ছে। বাংলাদেশীরা বাসার সামনে ধারা ৫৭ লিখে রাখুন নীচে চান্দার বাক্স। বাক্সে লিখে রাখুন –
এই বাক্সে নিয়মিত চান্দা রাখা হয়।
দানবেরা উঠিয়ে নাও
আমাদের জীবন বকশে দাও
একজন প্রবীর সিকদার যদি দানবের হাত থেকে অক্ষত অবস্থায় ফিরে আসেন (তেমন কোন সম্ভাবনা দেখছিনা) । তবে যদি ফিরে আসেন তাহলে আমি আমার এই লেখা তাঁকে পড়ার অনুরোধ করবো এবং পদলেহনে প্রশিক্ষিত করে বাকী জীবন কৃতদাস হিসাবে কাটিয়ে দেবার শান্তিপূর্ন পরামর্শ দেবো।
প্রবীর সিকদার আমাকে ক্ষমা করবেন। ভাই, আমিও মিরজাফর। আমিও বাংলাদেশী। আমিও পারিনি আপনাকে বাঁচাতে ।
Elias Ali Prodhania liked this on Facebook.
Mohammad Kofil liked this on Facebook.
Idris Mazi liked this on Facebook.
Noman Hossain liked this on Facebook.
Mahmudulhasan Alam liked this on Facebook.
Delwar Hossain liked this on Facebook.
Abu Bakar Sohel liked this on Facebook.