ঢাকা: তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে দায়ের করা মামলায় সাংবাদিক প্রবীর সিকদারকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করে ফরিদপুরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ফরিদপুর কোতোয়ালি থানা থেকে সোমবার (১৭ আগস্ট) দুপুর দুইটার পরে তাকে স্থানীয় আদালতে হাজির করা হবে।
প্রবীর সিকদার নিউজপোর্টাল উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ এবং বাংলা দৈনিক বাংলা ৭১ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক। রাজধানীর ইন্দিরা রোডে পত্রিকা দু’টির কার্যালয়।
ফরিদপুরের আওয়ামী লীগ নেতা এপিপি অ্যাডভোকেট স্বপন কুমার পাল রোববার (১৬ আগস্ট) বিকেলে ওই মামলা করেন। রাতে প্রবীর সিকদারকে তার রাজধানীর ইন্দিরা রোডের কার্যালয় থেকে গ্রেফতার করা হয়।
মামলার আরজিতে বলা হয়, সম্প্রতি এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন দাবি করে প্রবীর সিকদার বলেন- তার মৃত্যু হলে স্থানীয় সরকার, সমবায় ও পল্লী উন্নয়নমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, বিতর্কিত ব্যবসায়ী মুসা বিন শমসের ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকার দায়ী থাকবেন।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহসিনুল কবির বলেন, ফেসবুক স্ট্যাটাসে মন্ত্রীর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অভিযোগে আইসিটি আইনের ৫৭ ধারায় মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে।
যদিও বাংলাদেশের প্রথম ইন্টারনেট নিউজপেপার দাবিদার একটি অনলাইনে প্রবীর সিকদারের গ্রেফতারের পেছনে অন্য কারণ আবিষ্কারের চেষ্টা করা হয়েছে।
তবে পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, রাজধানীর শেরেবাংলানগর থানায় নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে ব্যর্থ হয়ে প্রবীর সিকদার ওই স্ট্যাটাস দেন।
ওই স্ট্যাটাসের প্রেক্ষিতে মামলা দায়েরের পর রোববার সন্ধ্যায় প্রবীর সিকদারকে নিয়ে যান আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তার ইন্দিরা রোডের কার্যালয় থেকে শেরেবাংলানগর থানা পুলিশের একটি দল প্রবীর সিকদারকে নিয়ে যায়। পরে তাকে মিন্টো রোডে ডিবি অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়।
রাতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মুনতাসিরুল ইসলাম বলেন, প্রবীর সিকদারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। পরে গোয়েন্দা বিভাগ জানায়, গ্রেফতারের পর প্রবীর সিকদারকে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
সাংবাদিক প্রবীর সিকদার মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পরিবারের সন্তান। তার বাবাসহ পরিবারের ১৪ জন একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে শহীদ হয়েছিলেন। দৈনিক জনকণ্ঠের ফরিদপুরের নিজস্ব সংবাদদাতা থাকাকালে পত্রিকায় প্রকাশিত ‘সেই রাজাকার’ কলামে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মুসা বিন শমসেরের বিতর্কিত ভূমিকার বিবরণ তুলে ধরেন তিনি। এরপর ২০০১ সালের ২০ এপ্রিল সন্ত্রাসী হামলায় গুরুতর আহত হন। বর্তমানে একটি পা হারিয়ে পঙ্গু জীবন যাপন করছেন তিনি।
Yusuf Un Nobi Babu liked this on Facebook.
Md Azizul liked this on Facebook.