বুধবার দুপুর। ভারতের মুম্বাইয়ের গেটওয়ে অব ইন্ডিয়ার সামনে সমুদ্রের তীরে উৎসুক দৃষ্টিতে তখন তাকিয়ে রয়েছেন বেশ কিছু মানুষ। কিছুটা দূরে ঢেউভাঙা সমুদ্রের পানিতে তখন গোটা দশেকের মতো মাথা একবার ডুবছে, আবার কিছুটা দূরে গিয়ে ভেসে উঠছে। আচমকা দেখলে মনে হবে, হয়তো সমুদ্রের পানিতে গোসল করছেন তাঁরা। কিছুক্ষণ পর সমুদ্র থেকে বেশ কয়েকজন পাড়ে উঠে এলেন। প্রত্যেকের মুখে তখন যুদ্ধজয়ের হাসি, আর হাতে ধরা রয়েছে তিন থেকে চারটি করে হাজার টাকার (ভারতীয় রুপি) নোট।
তবে এমন ভাবার কারণ নেই যে, তাঁরা হাজার টাকার নোট গাঁটে গুঁজে সমুদ্রস্নানে নেমেছিলেন। কিংবা এটা কোনো সিনেমার শুটিংয়ের দৃশ্যও নয়। বাস্তবেই তাঁরা সমুদ্র থেকে কুড়িয়ে পেয়েছেন হাজার টাকার নোট। শুনতে অবাক লাগলেও ঘটনা সত্যি।
ভারতের মুম্বাই নগরীর গেটওয়ে অব ইন্ডিয়ার সামনের সমুদ্র এখন ‘টাকার খনি’। তাও ছোট অঙ্কের কোনো টাকার নয়, পুরো হাজার টাকার নোটের। এই সমুদ্রের পানিতে ডুব মারলেই হাতে উঠে আসছে একেকটা হাজার টাকার নোট।
সমুদ্রে বিপুল পরিমাণে নোট কোথা থেকে এসেছে, তার উত্তর নেই মুম্বাই পুলিশের কাছে। তবে এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরের পর এই গেটওয়ে অব ইন্ডিয়ার সামনে মাছ ধরছিল একটি ট্রলার। একসময় পানি থেকে জাল তুলতেই ট্রলারের মৎস্যজীবীদের চক্ষু চড়কগাছ। জালে মাছের বদলে আটকে রয়েছে শত শত হাজার টাকার নোট।
লোভ সামলাতে না পেরে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ পকেটস্থ করে বিষয়টি চেপে যান তাঁরা। কিন্তু চাপা থাকেনি এই খবর। মঙ্গলবার রাতে এই আজব খবর ছড়িয়ে পড়তেই বুধবার সাতসকালে দলে দলে মানুষ হাজির হয়ে যান সমুদ্রের ধারে। রহস্যজনক টাকার লোভে সমুদ্রের পানিতে নেমেও পড়েন তাঁরা। আর পানি থেকে কেউ একটা, কেউ দুটি, আবার কেউ বা তিন থেকে চারটি করে পেয়ে যান হাজার টাকার নোট।
বুধবার দুপুরে এ ঘটনার কথা শুনেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় স্থানীয় কোলবা থানা পুলিশ। সিল করে দেওয়া হয় গোটা সমুদ্রতট। কিন্তু ততক্ষণে কয়েক লাখ হাজার টাকার নোট ছড়িয়ে পড়েছে মানুষের হাতে হাতে।
স্থানীয়দের বক্তব্য, এ ঘটনার প্রায় ৪৮ ঘণ্টা পর পুলিশ ঘটনাস্থলে এসেছে। ফলে যে যেভাবে এই টাকা পেয়েছেন, তা নিয়ে সটকে পড়েছেন। হাতে হাতে ছড়িয়ে পড়া টাকা উদ্ধারের সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে।
এদিকে, হাজার টাকার এত বিপুল পরিমাণ নোট হঠাৎ করে এই সমুদ্রে কোথা থেকে এসেছে, তা নিয়ে রহস্যের সমাধান হয়নি এখনো। পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তারা এখনো এ ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছুই বলতে পারছেন না।
এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে নানা গুজব। কেউ বলছেন, একটি জাহাজ থেকে কোনো এক বিদেশি অর্থ ফেলে দেন সমুদ্রের পানিতে। আবার কেউ বলছেন, এ ঘটনার সঙ্গে হাওলার যোগ থাকতে পারে। যদিও নিশ্চিত কোনো তথ্য কারো কাছেই নেই।
তবে তদন্ত কর্মকর্তাদের একাংশের মত, সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে মদদ দেওয়ার জন্য হয়তো এই বিপুল পরিমাণ অর্থ কোথাও নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল সমুদ্রপথে, যা কোনোভাবে সমুদ্রের পানিতে পড়ে যায়। এমনকি গোটা বিষয়টিতে পাকিস্তানের হাত থাকতে পারে বলেও সন্দেহ উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারীরা। বিশেষ করে আগামী ১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবসের মাত্র কয়েক দিন আগে হঠাৎ করে এমন ঘটনাকে মোটেই হালকাভাবে নিচ্ছেন না ভারতের গোয়েন্দারা।
তবে আপাতত সমুদ্রের পানিতে আরো যেসব হাজার টাকার নোট রয়েছে, সেগুলো উদ্ধারের চেষ্টা করছে পুলিশ। নামানো হয়েছে ডুবুরিও। পাশাপাশি উদ্ধার হওয়া হাজার টাকার নোটের নম্বর দেখে সেগুলো কোন ব্যাংক থেকে তোলা হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। একই সঙ্গে নোটগুলোর মধ্যে কোনো জাল নোট রয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
Sudeepta Das Sumon liked this on Facebook.
Yusuf Un Nobi Babu liked this on Facebook.
Mizanur Rahaman liked this on Facebook.
Jahangir Kabir liked this on Facebook.
Abu Bakar Sohel liked this on Facebook.
Moin Ahmed liked this on Facebook.
Md Azizul liked this on Facebook.
Abul Kashem liked this on Facebook.