উখিয়ায় ঈদুল আযহায় কোরবানির পশু সংকটের আশংকা

উখিয়ার সুনির্দিষ্ট ও পরিত্যক্ত গোচারণ ভূমিগুলো মানুষের দখলে চলে যাওয়ার কারণে গবাদিপশু লালনপালন আশংকাজনকভাবে হ্রাস পেয়েছে। চাষাবাদের তাগিদে কৃষক পরিবারগুলো গরু মহিষ পালন করলেও তা নিতান্ত প্রয়োজনের তাগিদে বিধায় এসব গবাদি পশু তারা বাজারজাত করবে না। এমতাবস্থায় পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত সরকার গবাদি পশু রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ায় সর্বত্র দেখা দিয়েছে গবাদি পশুর আকাল। যে কারণে বাংলাদেশে আসন্ন ঈদুল আযহায় মারাত্মকভাবে গরু সংকটের আশংকা রয়েছে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।

বিশষজ্ঞদের মতে, এ দেশে প্রতিবছর ঈদুল আযহায় প্রায় ১৫ লক্ষ গরু কোরবানি হয়। কোরবানির এসব গরুর বৃহত্তম অংশ আসে প্রতিবেশী দেশ ভারত ও মিয়ানমার থেকে। এমতাবস্থায়, দেশে খামারি ও কৃষক পর্যায়ে বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে কোরবানির জন্য বাণিজ্যিকভাবে গরু লালন পালন করে লাভবান হওয়ার জন্য তত্পর ছিল। ফলে মোট চাহিদার ৬০ শতাংশ গরু অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে যোগান দেওয়া সম্ভব হলেও বর্তমানে ভারত থেকে গরু আসা বন্ধ থাকায় কোরবানির বাজারে প্রভাব পড়তে পারে বলে দাবী করছেন অনেকেই।স্থানীয় গরু ব্যবসায়ীদের অভিমত, বিগত সময়ে উখিয়া সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে মিয়ানমার থেকে বিপুল পরিমাণ গরু চোরাই পথে এসে বাজারজাত হয়েছে। এছাড়াও ওই সময় সীমান্ত বাণিজ্যের আওতায় টেকনাফ করিডোর দিয়ে বিপুল সংখ্যক গরু আমদানি হয়ে আসার কারণে কোরবানির বাজার ছিল গরু মহিষে সয়লাব। এ সময় ধনী গরিব নির্বিশেষে কোরবানিতে শরীক হতে সক্ষম হয়েছে।

স্থানীয় গরু ব্যবসায়ী আসমত আলী (৪৫), মিয়া হোছন (৪২) সহ একাধিক লোকজন জানায়, টেকনাফ করিডোর দিয়ে চাহিদামতো গরু আসছে না। অপরদিকে ভারত এদেশে গরু রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ায় বাজারে গরুর আকাল দেখা দিয়েছে। যে কারণে অন্যান্য বছরের তুলনায় গরুর দাম চাওয়া হচ্ছে দ্বিগুণ। ব্যবসায়ীরা আরো জানান, এ অবস্থা বিদ্যমান থাকলে গরুর দাম আরো বেড়ে যাবে। ফলে নিম্ন ও মধ্যবিত্তের পরিবারগুলো কোরবানিতে শরীক হতে পারবে না। এ কথার সত্যতা স্বীকার করে বাজারের একজন মাংস ব্যবসায়ী মোসলেম মিয়া (৪৮) জানান, এখানকার হাটবাজারগুলোতে প্রতিনিয়ত অর্ধ শতাধিক গরু জবাই হতো। গরু আমদানি হ্রাস পাওয়ার কারণে বর্তমানে ৪-৫ টি হাটবাজারে গরু জবাই হচ্ছে একেকটি করে। ফলে মানুষ চাহিদামতো মাংস পাচ্ছে না। গরু সংকটের কারণে স্থানীয়ভাবে মাংসের দাম বাধ্য হয়ে তাদের বাড়িয়ে নিতে হচ্ছে বলে অভিমত প্রকাশ করেন।

স্থানীয় ঘিলাতলীপাড়া গ্রামের সমাজ সর্দার মাষ্টার সাইফুল ইসলাম ও মালভিটা পাড়া গ্রামের সমাজ সর্দার সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম জানান, ভারত গরু রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশি মিয়ানমার থেকে চাহিদা অনুপাতে গরু না আসার কারণে এখানকার কোরবানির বাজারে প্রভাব পড়তে পারে। ফলে গরুর দাম অত্যাধিক বেড়ে গিয়ে নিম্ন ও মধ্যবিত্তের অনেকেই কোরবানিতে অংশ নিতে পারবে না। বর্তমানে এলাকায় গবাদি পশুর কি পরিমাণ উন্নয়ন হচ্ছে তা জানার জন্য উপজেলা পশু ও প্রাণী সম্পদ অফিসে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে অফিসের একজন পিয়ন জানান, এ অফিসে প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা নাই দীর্ঘ দিন ধরে।

৪ thoughts on “উখিয়ায় ঈদুল আযহায় কোরবানির পশু সংকটের আশংকা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *