ঢাকা: মত প্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে অঙ্গীকার করার জন্য বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ(এইচআরডব্লিউ)। গত মঙ্গলবার সংস্থাটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সংবাদ মারফত এই তথ্য জানা যায়। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে ব্লগার নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় নিহত হওয়ার পরপরই সংস্থাটির পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকারকে এই আহ্বান জানানো হয়।
আহ্বানে আরও বলা হয় যে, বাংলাদেশ যেন সেলফ-সেন্সরশিপে উৎসাহ না দিয়ে মত প্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান নেয়। ওয়েবসাইটে আরও স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছে যে, বাংলাদেশ সরকারের অতিদ্রুত তাদের নিরাপত্তা এবং স্বাধীন মত প্রকাশের পক্ষে দাঁড়ানো প্রয়োজন, গত ৭ আগস্ট ব্লগার নীলাদ্রি চক্রবর্তীর হত্যাকাণ্ড সেদিকেই নির্দেশ করে।
নীলয় চক্রবর্তী নীলয় নীল ছদ্মনামে লিখতেন। চলতি বছরে সেক্যুলারিজমের পক্ষে কথা বলার জন্য বাংলাদেশে চারজন ব্লগারকে হত্যা করা হয়েছে। কয়েকটি চরমপন্থি গোষ্ঠী এর আগে যে ৮৪ জন ব্লগারের নামের তালিকা প্রকাশ করেছিল, নিহত চারজনের নাম ওই তালিকায় ছিল। চরমপন্থি গোষ্ঠীগুলো তাদের ইসলাম বিরোধী এবং ধর্মদ্রোহি হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।
এইচআরডব্লিউ আরও জানায়, পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক বিগত সময়ে খুনের ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে ব্যর্থতার কথা না বলে মুক্তমনা লেখকদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার মতো লেখা না লেখার পরামর্শ দিয়েছেন। এ বিষয়ে এইচআরডব্লিউর এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ব্রাড অ্যাডামস বলেন, ‘এটা দুঃখজনক যে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ শুধু ব্লগারদের নিরাপত্তা দিতেই ব্যর্থ হয়নি, তারা সেলফ-সেন্সরশিপের প্রস্তাব দিচ্ছে। সরকারের অবশ্যই মনে করে দেখা দরকার যে, তার দায়িত্ব হলো সংবিধান এবং জনগণের জীবন রক্ষা করা, এমনকি তাদের ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষা করাও।’
যদিও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্লগারদের হত্যাকাণ্ডের দ্রুত তদন্তের কথা বলেছেন। এর আগে তিনি আরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, যে সমস্ত ব্লগাররা মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তার সরকার মুক্তচিন্তা, সিভিল সোসাইটির কর্মী এবং সাংবাদিকদের আদালত দিয়ে হুমকি এবং মিডিয়া হাউস বন্ধ করে দিয়েছে। এবং যারা নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক সহিংসতার সমালোচনা করেছে তাদের গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।
Alamgir Rashid liked this on Facebook.