ব্লগার নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় নিলয় খুন হওয়ার তিন দিনের মাথায় বরিশালে গণজাগরণ মঞ্চের ছয় কর্মীর ছবি দিয়ে ‘আনসার বিডি’ নামের একটি ফেইসবুক পেইজ থেকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নিলয় হত্যার পর আনসার আল ইসলাম নামের একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে গণমাধ্যম কার্যালয়ে ই মেইল পাঠিয়ে দায় স্বীকার করা হয়েছিল। সেখানে আনসার আল ইসলামকে আল কায়েদার ভারতীয় উপমহাদেশের (একিউআইএস) বাংলাদেশ শাখা বলা হয়েছিল।
সোমবার রাত ৯টার দিকে ফেইসবুকে আসা ‘আনসার বিডির’ ওই পোস্টে কবি হেনরী স্বপন, ভাস্কর্য শিল্পী চারু তুহিন, কবি সৈয়দ মেহেদী হাসান, সংগঠক নজরুল বিশ্বাস, কবি তুহিন দাস ও ছাত্র ইউনিয়ন বরিশাল জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক প্রীতম চৌধুরীর ছবি দেওয়া হয়েছে।
সেখানে লেখা হয়েছে- মাশাআল্লাহ, আমরা সফলভাবে বরিশালে কার্যক্রম শুরু করেছি। আমরা এ বিভাগে সফলভাবে কাজ শুরু করেছি। এখানে ইসলামবিরোধী তিনজন কবি এবং তিনজন ব্লগার সংগঠক আছে। তারা ইসলামের শত্রু। আমাদের যা লক্ষ্য তা আমাদের করা উচিৎ।”
বরিশালের পুলিশ কমিশনার শৈবাল কান্তি চৌধুরী জানান, তিনি বিষয়টি শুনেছেন, তবে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ করেননি।
“কয়েকজনের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আমি তাদের থানায় সাধারণ ডায়েরি করার পরামর্শ দিয়েছি। এছাড়া কাউকে সন্দেহ হলে, বা কেউ অনুসরণ করছে বলে মনে হলে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে জানাতে বলা হয়েছে।”
হুমকি পাওয়া ছয়জনই জানিয়েছেন, সোমবার রাতে ওই অ্যাকাউন্ট থেকে তাদের ‘ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট’ পাঠানো হয়। ওই রিকোয়েস্ট দেখে আনসার বিডির পেইজে গিয়ে তারা নিজেদের ছবি দেখতে পান।
ছাত্র ইউনিয়ন নেতা প্রীতম চৌধুরী বলেন, রাতে কবি তুহিন দাসের কাছ থেকে জানার পর তিনি ফেইসবুকে লগইন করে ‘আনসার বিডির’ পেইজে ওই হুমকির বার্তা পান।
কবি তুহিন দাস বলেন, “আমরা প্রগতিশীল চিন্তা-চেতনার মানুষ। বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গেই দেখছি।”
নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন কবি সৈয়দ মেহেদী হাসান।
তিনি বলেন, “আমি কবিতা লিখি। তবে ব্লগে লেখালেখি করি না।”
গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক নজরুল বিশ্বাস বলেন, “হুমকি দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের পথে বাধা সৃষ্টি করতে পারবে না কেউ। আমাদের আন্দোলন উগ্রবাদ ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে। ধর্মের বিরুদ্ধে নয়।”
গত শুক্রবার শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী ও ব্লগার নিলয়ের বাসায় ঢুকে তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
এ নিয়ে চলতিবছর চারজন ব্লগার ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট একই কায়দায় খুন হলেন, যারা সবাই ধর্মীয় গোড়ামীর বিরুদ্ধে লেখালেখিতে যুক্ত ছিলেন, যুক্ত ছিলেন গণজাগরণ মঞ্চে।
যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকার শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন শুরু হয়। এরপর বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মঞ্চ গড়ে তুলে ওই দাবির সঙ্গে সংহতি জানায় ছাত্র-জনতা ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের কর্মীরা।
Abdul Kuddus Mizi liked this on Facebook.
Anamul Haque Feni liked this on Facebook.
গাজী মোতালেব liked this on Facebook.
Imam Uddin liked this on Facebook.
Mizanur Rahaman liked this on Facebook.