‘জিন ছাড়ানো’র ক্ষমতা দেখাতে নিজেদের ছোট্ট মেয়েটিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে এক দম্পতি। মঙ্গলবার ভোরে চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার উত্তর মেহের ইউনিয়নের তারাপুর কামারবাড়িতে এ নৃশংস ঘটনা ঘটেছে। নিজের মা-বাবার হাতে মর্মান্তিক হত্যার শিকার সাড়ে তিন বছরের সুমাইয়ার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় আটক বাবা এমরান হোসেন ও মা আমেনা বেগমকে গতকাল বুধবার আদালতে হাজির করে পুলিশ। চাঁদপুর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১-এর বিচারক তাসলিমা শারমিন তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
স্থানীয়রা জানান, এলাকার একটি এনজিও থেকে সুমাইয়ার মা আমেনা বেগম ১ লাখ টাকার ঋণ নেন। ঋণের টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে আমেনা ও স্বামী কাঠমিস্ত্রি এমরান হোসেন দু’জনে মিলে ফন্দি করেন কবিরাজির মাধ্যমে টাকা আয় করার। এরই ধারাবাহিকতায় আমেনা বেগমের ওপর ‘জিন ভর করেছে এবং সে অলৌকিক ক্ষমতা লাভ করেছে’ বলে এলাকায় প্রচার চালানো হয়। আর তা প্রমাণ করতে নিজেদের সাড়ে তিন বছরের কন্যা সুমাইয়াকে ‘জিন ছাড়ানো’র নামে লাঠি করে। কয়েকজন রোগীকে ঝাড়ফুঁক, পানিপড়া, তাবিজ-কবজ দিয়ে টাকা আদায়ও শুরু করে তারা। গত ছয় দিন অনবরত লাঠি দিয়ে পেটানোর কারণে মঙ্গলবার ভোরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে শিশু সুমাইয়া।
খবর পেয়ে শাহরাস্তি মডেল থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান ও এসআই নিজাম উদ্দিন শিশু সুমাইয়ার লাশ উদ্ধার এবং ঘাতক মা-বাবাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসেন।শাহরাস্তি থানার ওসি (তদন্ত) দিলদার আজাদ জানান, মূলত ভণ্ড কবিরাজির মাধ্যমে টাকা আয়ের চিন্তা থেকেই শিশু সুমাইয়ার ওপর নির্যাতন চালানো হয়। এতে মঙ্গলবার ভোরে সুমাইয়া মারা যায়।
তবে ঋণের কথা আদৌ সত্য কি-না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ বিষয়ে মেহের উত্তর ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইমলাম রনি বলেন, ঝাড়ফুঁক ও কবিরাজির মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতেই ইমরান-আমেনা দম্পতি তাদের ওপর ‘জিন-পরী ভর করেছে’ বলে ধোঁকাবাজি শুরু করে। মানুষের বিশ্বাস সৃষ্টি করতে তারা নিজ সন্তানকে নির্যাতন করে মেরে ফেলেছে। শাহরাস্তি থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, ঘাতক বাবা-মাকে আটক করা হয়েছে। এসআই নিজাম উদ্দিন বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন।
বুধবার তাদের আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি বুঝে তাদের রিমান্ড চাওয়া হবে।
চাঁদপুরের পুলিশ সুপার শামছুন্নাহার বলেন, আসামিদের আদালতে নেওয়ার আগে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মনে হয়েছে তারাই শিশুটিকে হত্যা করেছে। তাদের আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এআর
Kobi Shaheenur liked this on Facebook.
Salim Bhuiyan liked this on Facebook.
Yusuf Un Nobi Babu liked this on Facebook.
Abu Bakar Sohel liked this on Facebook.
M F Karim Khan liked this on Facebook.
Nur Muhammed liked this on Facebook.
Md Kamrul Md Kamrul liked this on Facebook.
MD Ziaul Hasan liked this on Facebook.
Ali Ahmed liked this on Facebook.
Jannat Ferdous liked this on Facebook.
Jinnurine Chowdhury Jony liked this on Facebook.