ভারতের মুম্বাইতে ধারাবাহিক বোমা হামলার অভিযোগে ফাঁসি হওয়া ইয়াকুব মেমনের জানাজায় অংশগ্রহণকারীদের ‘সম্ভাব্য সন্ত্রাসী’ বলে মন্তব্য করেছেন ত্রিপুরার গভর্নর ও বিজেপি নেতা তথাগত রায়। শুক্রবার গভর্নর তথাগত রায় টুইটারে এ মন্তব্য করেছেন। ইয়াকুব মেমনের জানাজার ছবি ও খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ করার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা সত্ত্বেও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তার জানাজায় হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত হয়েছিলেন। এরপরেই বিতর্কিত মন্তব্য করেন বিজেপি নেতা ও ত্রিপুরার গভর্নর তথাগত রায়। তিনি টুইটারবার্তায় লিখেছেন ‘ইয়াকুব মেমনের মরদেহের সামনে যারা জড়ো হয়েছিলেন (আত্মীয় ও বন্ধু ছাড়া) গোয়েন্দাদের উচিত তাদের ওপর নজর রাখা। এদের অনেকেই সম্ভাব্য সন্ত্রাসী।’
পশ্চিমবঙ্গের সাবেক বিজেপি নেতা এবং গভর্নর এ ধরণের মন্তব্য করার পর তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে। পরে এ নিয়ে সাফাই দিয়ে তথাগত রায়ে বলেছেন, তিনি কোনো সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে এ কথা বলেননি। যদিও সোশ্যাল মিডিয়ায় এ নিয়ে ঝড় উঠেছে। তথাগত রায়ের মন্তব্য সাম্প্রদায়িক ইন্ধন জোগাতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই। গভর্নর তথাগত রায়ে বলেছেন, ‘আমি যখন গোয়েন্দা দপ্তরকে নজর রাখার কথা বলি, তখন কোনো সম্প্রদায়ের কথা বলিনি। তাহলে কি কারণে আমাকে সাম্প্রদায়িক ইন্ধনদাতা বলা হচ্ছে?’ ভারতীয় সংসদের সাবেক স্পিকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘তথাগত রায়ের মনে রাখা উচিত তিনি একটি সাংবিধানিক পদের অধিকারী। এভাবে কোনো বিতর্কিত মন্তব্য করার আগে তার আরো ভাবা উচিত ছিল।’ সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় জানান, ‘তিনি চাইলে ব্যক্তিগতভাবে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীকে এ কথা বলতে পারতেন। টুইটারে এ ধরণের মন্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়।’
কোনো রাজ্যের গভর্নরের পদে থেকে এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন, অসংবেদনশীল, উসকানিমূলক মন্তব্যের দায়ে তার অপসারণের দাবি তুলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তথাগত রায়ের মন্তব্যের জেরে প্রেসিডেন্টের কাছে তার অপসারণের দাবিও জানাতে চলেছে তৃণমূল। তৃণমূল নেতা ও পশ্চিমবঙ্গের সিনিয়র মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘তিনি যে পদে রয়েছেন, সেখানে দাঁড়িয়ে এ ধরণের মন্তব্য কাম্য নয়। এখনই নিজের পদ থেকে সরে দাঁড়ানো উচিত তার। বৃহস্পতিবার রাতভর নাটকীয়টার পর সকালে মৃত্যুদ- কার্যকর করা হয় মেমনের। ১৯৯৩ সালে মুম্বাইয়ে সিরিজ বোমা বিস্ফোরণে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয় মেমনের বিরুদ্ধে। ওই বিস্ফোরণে ২৫৭ জন নিহত এবং ৭১৩ জন আহত হন। তবে মেমন বলেছেন, তিনি এ ঘটনায় জড়িত নন। তার ভাই জড়িত ছিলেন। তাকে অন্যায়ভাবে ফাঁসি দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার মেমনের ৫৪তম জন্মদিনে তাকে ফাঁসি দেয়ার প্রস্তুতি নিলে তার আইনজীবীরা ফাঁসি স্থগিত রাখার আবেদন জানান। শেষ রাতে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতি নজিরবিহীনভাবে ওই আবেদনের ওপর শুনানি গ্রহণ করলেও ফাঁসি কার্যকরের ওপর স্থগিতাদেশ দেননি। রাতভর সেই নাটকীয়তা টিভির পর্দায় দেখছিলেন তারিক। এরপর স্থানীয়দের সাথে ট্যাক্সিতে চড়ে তিনি বিকেলে মেমনের জানাজায় শরীক হন।
তখন তার চোখ ঘুমে কাতর ছিল। জানাজা শেষে তিনি লোকাল ট্রেনে চেপে আবার বাড়িতে ফিরে যান। মেমনের জানাজায় শরীক হতে ট্রেন, মোটরসাইকেল আর কারে চড়ে সমবেত হন বহু লোক। এরা আসেন কুরলা, মালাদ, জগেশ্বরী, মুমব্রা, কল্যাণসহ বহু এলাকা থেকে। জনস্রোত দেখে বিস্ময়ে বিমূঢ় মুশতাক ফুলওয়ালা বলছিলেন, ‘আমি এখানে ৩০ বছর ধরে কাজ করছি। এমন দৃশ্য আর কখনো দেখিনি। এই কবরের আশেপাশের এলাকাতে বহু বিশিষ্ট ব্যক্তির কবর আছে। কিন্তু সবাই বলছেন, এতো বেশি লোক তারা কোনো জানাজায় দেখেননি। মেমনের লাশ যখন পারিবারিক কবরস্থানে নিয়ে আসা হয় তখন সেই এলাকায় ৭৫০০ পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়। সেখানে ছিল র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স, রায়ট কন্ট্রোল ট্রাক, দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণে টিয়ার গ্যাস শেল, রাবার পেলেটসহ নানা প্রস্তুতি। পরিস্থিতি তদারকিতে ব্যস্ত ছিলেন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্তারা। এর আগের রাতেই আটক করা হয় ৫০০ লোককে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে মুম্বাইয়ের মাহিমের মেরিন লাইন্সের বড় কবরস্তানে মেমনের বাবা আবদুল রাজ্জাকের কবরের পাশে সমাহিত করা হয় তাকে। সংবাদ প্রচারে নিষেধাজ্ঞা বৃহস্পতিবার মেমনের দাফন ও জানাজার আগেই স্থানীয় পুলিশের উপ-কমিশনার সঞ্জয় বারকুন্ড একটি আদেশ জারি করে পরবর্তী ১১ ঘণ্টা মেমনের জানাজা ও দাফনের চিত্রধারণ কিংবা তা প্রচারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। এরপর সব টিভি চ্যানেলেই তার জীবনের শেষ পর্বের প্রচারে বিরত ছিল। কোনো কোনো টিভি চ্যানেল আবার নোটিশ প্রচার করে যে মেমন একজন দেশদ্রোহী। তার জানাজা ও দাফন সম্প্রচার করে তাকে ‘বীর’ বানাতে আগ্রহী নয় তারা। সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে
এআর
Abu Bakar Sohel liked this on Facebook.
Shahriar Nafees liked this on Facebook.
Md Azizul liked this on Facebook.
Realist Rakib liked this on Facebook.
Mahmud Hasan Raju liked this on Facebook.
বাজে কমেন্টস না করে পারি না অনেক চেষ্টা করি না করার জন্য। ভারতের কুত্তার হিন্দুরা প্রতিদিন বা বছরের পর মুসলিমদের হত্যা নির্যাতন, দাঙ্গা হাঙ্গামা করে যাচ্চছে তারা জঙ্গি বা সন্ত্রাসী কিছুই হয় না। আর মুসলিমদের জানাযা দেখে সন্ত্রাসী মন্তব্য কর কেন। কুকুরেরা শুনে রাখ সেদিন আর বেশী দুরে নই যেদিন বাঙ্গালী আর ভারত্তী কুলাঙ্গারা পালানোর পথ খুজে পাবি না।
Nazmul Haque Sagor liked this on Facebook.
Mizanur Rahaman liked this on Facebook.
Jalam
Jinnurine Chowdhury Jony liked this on Facebook.
AK Azad liked this on Facebook.