গুলিবিদ্ধ শিশুটি আইসিইউতে, ঢাকার পথে মা

ঢাকা: মাগুরার ছাত্রলীগের কোন্দলে মায়ের পেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢামেকে চিকিৎসাধীন শিশুটিকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়েছে। গুলিবিদ্ধ সন্তানের মুখ দেখতে মাগুরা থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকার পথে রওনা হয়েছেন শিশুটি মা নাজমা খাতুন ও বাবা বাচ্চু ভূঁইয়া।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শিশুটিতে আইসিইউতে ভর্তির তথ্য জানিয়েছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, শিশুটির শরীরে বেশ কিছু জটিলতা দেখা দেয়ায় তার বিশেষ যত্নের প্রয়োজন। এজন্য আজ সকালে তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিশু সার্জারির বিভাগীয় প্রধান আশরাফুল হক বলেন, ‘গতকাল রাত থেকে শিশুটির কিছুটা অবনতি লক্ষ্য করা যাচ্ছিল। ওর শরীরের প্লাটিলেট ৫০ হাজারে নেমেছে। এর পরিমাণ কমপক্ষে দেড় লাখ হওয়ার কথা। শিশুটিকে স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে।’

চিকিৎসকরা বলেন, অসময়ে কম ওজন নিয়ে জন্ম নেওয়া শিশুদের স্বাভাবিকভাবেই সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে। বুলেটবিদ্ধ হওয়ায় এই ঝুঁকি এখন বেশি।

এদিকে গুলিবিদ্ধ সন্তানের মুখ দেখতে বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে ১টার দিকে মাগুরা সদর হাসপাতাল থেকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে রওনা দেন শিশুটির মা। সঙ্গে শিশুটির বাবা বাচ্চু ভূঁইয়াও আছেন।

মাগুরা জেলা পুলিশ সুপার এ কে এম এহ্সান উল্লাহর সার্বিক সহযোগিতায় গুলিবিদ্ধ মা-নবজাতকের সাক্ষাৎ হতে যাচ্ছে।

অ্যাম্বুলেন্সে ওঠার আগে নাজমা আক্তার বলেন, ‘এতদিন পর আমার সোনামনির মুখ দেখতে পাব ভেবে খুব ভাল লাগছে। আপনারা আমার সন্তানের জন্য দোয়া করবেন। একই সঙ্গে তিনি সন্ত্রাসীদের বিচারও দাবি করেন।’

পুলিশ সুপারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে শিশুটির বাবা বাচ্চু ভূঁইয়া বলেন, মেয়েকে পাঠানোর সময় একবার দেখেছি, আর দেখা হয়নি। পুলিশ সুপার উদ্যোগ নিয়েছেন, তাই সন্তানের কাছে যেতে পারছি।

তিনি অভিযোগ করেন, সন্ত্রাসীরা তাকে মোবাইল ফোনে হুমকি দিচ্ছে। তিনিও সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।

মাগুরা পুলিশ সুপার এ কে এম এহসান উল্লাহ বলেন, ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত বৃহস্পতিবার মাগুরা শহরের দোয়ারপাড় কারিগরপাড়ায় ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ নাজমা খাতুন গুলিবিদ্ধ হন। ওই গুলি তার পেটের সন্তানের শরীরও ভেদ করে।

ওই দিন রাতে মাগুরা সদর হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পর একটি কন্যাশিশুর জন্ম দেন নাজমা। অবস্থার অবনতি হওয়ায় গত শনিবার রাতে নবজাতককে ঢাকায় পাঠানো হয়। প্রসূতি মা মাগুরা সদর হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন।

সংঘর্ষের ঘটনায় আহত মমিন ভূঁইয়া গত শুক্রবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

এ ঘটনায় ছাত্রলীগের জেলা শাখার সহ-সভাপতি সেন সুমনকে (৩২) প্রধান আসামি করে ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। নিহত মমিনের ছেলে রুবেল ভূঁইয়া গত রবিবার সদর থানায় মামলাটি করেন।

৯ thoughts on “গুলিবিদ্ধ শিশুটি আইসিইউতে, ঢাকার পথে মা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *