শেখ হাসিনার নতুন সুযোগ খালেদা জিয়ার নমনীয় মনোভাব দা হিন্দু

সংসদীয় নির্বাচনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি থেকে বিএনপির সরে আসার সিদ্ধান্তে বাংলাদেশে বর্ধিত রাজনৈতিক অচলাবস্থার নিরসনে একটি নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের পুনরায় জয়ের পর থেকে বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংকট বেড়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনে দাবি প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলো ওই নির্বাচন বয়কট করে। এরফলে নির্বাচনটি হয়ে দাঁড়ায় এক ঘোড়ার দৌড় প্রতিযোগিতার মত।

এতে সরকারের গণতান্ত্রিক বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এরপর থেকে বিএনপি এবং তার ইসলামপন্থী মিত্র জামায়াতে ইসলামী রাজপথের আন্দোলন করে আসছে। স্বৈরশাসক এরশাদের পতনের পর থেকে বাংলাদেশে দুই নেত্রীর মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্বে রাজনৈতিক অস্থিতিশীল বিরাজ করছে প্রায়শই। ঘটছে নির্বাচন বর্জন এবং অহরহ বিক্ষোভের ঘটনা। বিতকির্ত নির্বাচনের প্রায় ১৯ মাস পরে বেগম জিয়া সম্ভবত মনে করছেন যে সংসদের বাইরের বিরোধী দল হওয়ায় তার দল দুর্বল হয়ে পড়ছে। এ কারণে তিনি আপসের ইঙ্গিত দিয়েছেন।

দুটো প্রধান দলের মধ্যে বৈরিতা ও অবিশ্বাসের চড়া মূল্য দিতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। বিএনপি ও জামায়াত সহিংস বিক্ষোভের সূচনা করায় সরকার বিরোধী দলকে ধ্বংস করে দিতে দৃঢ়প্রতিক্ষ হয়ে জবাব দিয়েছে। গত নির্বাচনের পর থেকে বাংলাদেশে রাজনৈনিক সহিংসতা দৃঢ়ভাবে বেড়েছে। অনেকেই শেখ হাসিনার অগণতান্ত্রিক অনমনীয়তার সমালোচনা করছেন। পরিস্থিতি ঘোলাটে রয়েছে এবং ধর্মনিরপেক্ষতা ও গণতন্ত্রের বিরোধীরা এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের অপেক্ষায় রয়েছে। এটা কোনো গোপন বিষয় নয় যে ইসলামপন্থীরা এ রাজনৈতিক সংকটকে পুঁজি করার জন্য মরিয়া। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ‘মানতাবিরোধী অপরাধের’ জন্য জামায়াতের দুই নেতাকে ফাঁসি দেয়ার পর দলটি শেখ হাসিনা সরকারের সাথে বিবাদে জড়িয়ে পড়েছে। তাছাড়া আইন-শৃঙ্খলার আরো অবনতি হলে তাকে অজুহাত হিসেবে কাজে লাগিয়ে সামরিক বাহিনীর আরেকটি রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের সত্যিকার ঝুঁকি ছিল।

এসব ঘটনার পটভূমিতে বিএনপি তার অবস্থান নমনীয় করার ইঙ্গিত দিয়েছে। শেখ হাসিনার সরকারের উচিত এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অচলাবস্থার অবসান ঘটানো এবং নির্বাচনের আগে অধিক সমঝোতামূলক উদ্যোগ গ্রহণ করা। বিএনপির উচিত জামায়াতের সাথে জোট নিয়ে পুনর্বার চিন্তা করা এবং তারা যেপথ অনুসরণ করেছে তা বাদ দেয়া। শেখ মুজিবুর রহমান যে ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক নীতিমালার ভিত্তিতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার নেতৃত্ব দিয়েছেন তার আলোকে এগিয়ে যাওয়া। (বাংলাদেশের মত) নবীন গণতন্ত্রের জন্য জরুরি হচ্ছে সরকার এবং বিরোধী দলের কার্যকর ঐকতান। ভারতের দা হিন্দু পত্রিকার মঙ্গলবার প্রকাশিত সম্পাদকীয়

আতিক/প্রবাস

২৪ thoughts on “শেখ হাসিনার নতুন সুযোগ খালেদা জিয়ার নমনীয় মনোভাব দা হিন্দু

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *