লিবিয়ায়র বন্দুকযুদ্ধ নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এ অবস্থায় যুদ্ধবিধস্ত দেশটির পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এতে বৈধভাবে পাড়ি জমানো প্রায় ৩০ হাজার বাংলাদেশীর সময় কাটছে মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে।
এ দিকে গত সপ্তাহে দুই পক্ষের গোলাগুলিতে নিহত দুই বাংলাদেশী শ্রমিকের লাশ এখনো দেশে পাঠানোর প্রস্তুতি শুরু করতে পারেনি লিবিয়ার ত্রিপোলি থেকে তিউনিসিয়ায় সরিয়ে নেয়া বাংলাদেশ দূতাবাস। হতভাগ্য ওই দুই যুবকের লাশ বর্তমানে সুদান সীমান্তবর্তী কুফরা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পড়ে আছে।
দূতাবাস সূত্রে জানা যায়, গত ২১ জুলাই বিকেলে কুফরা শহরটিতে স্থানীয় দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় হবিগঞ্জের মোসলেম উদ্দিন ও বরিশালের এম আরিফুল করিম গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ ঘটনায় সিরাজগঞ্জের সাইফুল ইসলাম ও টাঙ্গাইলের রাজু মিয়া গুরুতর আহত হন। তাদের ওই হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
গত শনিবার রাতে লিবিয়া দূতাবাসের কনস্যুলার (লেবার) এ এস এম আশরাফুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, লিবিয়ার অবস্থা এ মুহূর্তে খুব খারাপ। প্রতি মুহূর্ত এখানে গোলাগুলি ঘটছে। কেউ নিরাপদে চলাচল করতে পারছেন না। তিনি বলেন, ত্রিপোলি সরকার নিয়ন্ত্রণ করছে জিএমসি, আর তবরুক পালামের্ন্ট নিয়ন্ত্রণ করছে এইচওআর সরকার। দু’টি সরকার তাদের নিজস্ব স্টাইলে পরিচালিত হওয়ায় সমস্যা দিন দিন শুধু বাড়ছে। ইউনাইটেড নেশন থেকে সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ নিয়ে বৈঠক হচ্ছে। এর পরও যদি সমাধান না হয় তাহলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে। তিনি বলেন, গত কয়েক দিনের পরিস্থিতি এতই খারাপ হয়েছে যে, দূতাবাস থেকে আমরা শীর্ষ কর্মকর্তারা তিউনিসিয়ার একটি হোটেলে এসে অবস্থান করতে বাধ্য হয়েছি। দূতাবাস চলছে কিভাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখান থেকে ফাস্ট সেক্রেটারি মোজাম্মেল হক সড়কপথে দূতাবাসে যাচ্ছেন। তিনি চার-পাঁচ দিন থেকে আবার তিউনিসিয়ায় চলে আসছেন।
আবার আমি যাচ্ছি। স্থানীয় লোকজন দিয়েই দূতাবাস পরিচালিত হচ্ছে। সেখানে এমআরপিসহ সব ধরনের কার্যক্রম চলছে। বর্তমানে লিবিয়ায় বৈধ কতজন বাংলাদেশী অবস্থান করছেন এবং তাদের অবস্থা কীÑ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসলে এ মুহূর্তে এটি বলা খুবই মুশকিল। তবে ২০১১ সালের পর এই সংখ্যা ছিল ২৫-৩০ হাজারের মতো। এরপর অনেকেই দেশটি থেকে অবৈধভাবে ইতালিসহ অন্যান্য দেশে সাগরপথে পাড়ি দিয়েছেন। তাই এখন বাংলাদেশী শ্রমিকের প্রকৃত সংখ্যা কত, তা বলা কঠিন। দুই বাংলাদেশী শ্রমিক আইএসের গুলিতে মারা যাওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, আইএসের হাতে দুই বাংলাদেশী খুন হয়েছেন এর সোর্স কী? এমন পাল্টা প্রশ্ন করে লেবার কাউন্সিলর বলেন, লিবিয়ায় আইএস আছে, তবে দুই বাংলাদেশী গুলিতে মারা যাওয়ার ঘটনায় আইএসের কোনো কানেকশন নেই বলে তিনি দাবি করেন। তিনি বলেন, গত ২১ জুলাই বিকেলে টেবু ও টুয়ারেক এলাকায় স্থানীয় দু’টি গ্রুপের লোকজনের সাথে সংঘর্ষ হয়। ওই সময় মোসলেম ও আরিফুলসহ চার বাংলাদেশী বাজার করে বাসায় ফেরার পথে ক্রসফায়ারে পড়েন। ঘটনাস্থলে মোসলেম উদ্দিন ও আরিফুল করিম মারা যান। আর বাকি দু’জনকে উদ্ধার করে কুফরা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নিহত দু’জনের লাশ কুফরা জেনারেল হাসপাতালে মর্গে রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তাদের লাশ দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।
লিবিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশী ও তাদের পরিবারের স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে তারা দেশটি থেকে কেউই টাকা পাঠাতে পারছেন না। অনেকের পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। ডিজিটাল পাসপোর্ট করার জন্য তারা দূতাবাসে গেলেও সেখানে কর্মকর্তারা না থাকায় অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার পরও মিসর সীমান্ত দিয়ে মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যরা লিবিয়ায় অবৈধভাবে বাংলাদেশীদের প্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে।
এসব ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমআরপির কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবেই চলছে। দূতাবাসের কর্মকর্তা না থাকায় কোনো কাজ আটকে থাকছে না। এরপর তিনি বলেন, পরিস্থিতি এতই খারাপ যে আফ্রিকার দু-তিনটি দূতাবাস ছাড়া পৃথিবীর সব দেশের দূতাবাসই দেশটি থেকে সরিয়ে নিয়েছে অথবা কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। লিবিয়ায় এ মুহূর্তে কোনো দেশের রাষ্ট্রদূত নেই। ইস্তাম্বুলের সাথে বিমান যোগাযোগ ছাড়া আর কোনো আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচল করছে না। লোকাল লিবিয়ান ও আফ্রিকান দু’টি এয়ারলাইন্স শুধু চলাচল করছে। বর্তমানে বেনগাজি, সির্থ, কুফরা, আজদারিয়া ও ত্রিপোলিতেই যুদ্ধ চলছে। এসব এলাকায় বাংলাদেশীরা যাতে সাবধানে চলাচল করেন সে ব্যাপারে লেবার কাউন্সলির সবাইকে পরামর্শ দিয়েছেন। এ ছাড়াও বাংলাদেশীদের সম্পর্কে তথ্য জানতে দূতাবাসের পক্ষ থেকে নিম্নোক্ত ঠিকানায় যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। এ এস এম আশরাফুল ইসলাম, কনস্যুলার (লেবার), ইমেইল- bdtripoli@yahoo.com, ফোন- ০০২১৬২১৯২৪২২৯
আতিক/প্রবাস
Nur Afchar Jilu liked this on Facebook.
Helal Ahmed liked this on Facebook.
Tarikul Islam Shamim liked this on Facebook.
Khalifa Sohel liked this on Facebook.
Babu Macanic liked this on Facebook.
Prul Aktar liked this on Facebook.
M Jahangir Hossain Monir liked this on Facebook.
Ðrêãm Wêãvêr Sûjõñ liked this on Facebook.
Idris Mazi liked this on Facebook.
Hapej Salahuddi St liked this on Facebook.
Alamgir Rashid liked this on Facebook.
Ariful Islam Jony liked this on Facebook.
Sumir Ahmed liked this on Facebook.
M F Karim Khan liked this on Facebook.
Mukter Hossain liked this on Facebook.
Koays Ahmed liked this on Facebook.
Moklasur Rhman liked this on Facebook.
Hasan Hannan liked this on Facebook.
Laltu Hossain liked this on Facebook.
Abdul Mannan liked this on Facebook.
Dolon Shaik Dhakaiya liked this on Facebook.
MD Monna liked this on Facebook.
Atiqul Islam Masud liked this on Facebook.
Quinten Rebeiro liked this on Facebook.
Jafar Khan liked this on Facebook.
Surmin Begum liked this on Facebook.
Mohammad Azad liked this on Facebook.
MD Harun liked this on Facebook.