লোক দেখানো নাটক বাদ দিয়ে বলে দিলেই তো হয় সোহাগ জাকির নির্বাচিত হয়েছে!

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ২৮তম জাতীয় সম্মেলনে সাইফুর রহমান সোহাগ সভাপতি ও জাকির হোসেন সাধারণ সম্পাদক পদে আগামী দু’বছর মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হয়েছে। ভোটের ফলাফল ঘোষণার আধা ঘন্টা আগের পাশে বসা জগনাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতার আলোচনায় বলতে শোনা গেল লোক দেখানো নাটক বাদ দিয়ে বলে দিলেই তো হয় সোহাগ জাকির নির্বাচিত হয়েছে।তারা ঐতিহ্যবাহী এ ছাত্র সংগঠনের সভাপতি পদে সাইফুর ২৬৯০ ভোট এবং সাধারণ সম্পাদক পদে জাকির ২৬৭৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছে।

রোববার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে সকাল দশটায় দ্বিতীয় অধিবেশন শুরুর পর ভোটগ্রহণ শুরু হয় বেলা সাড়ে ১১টায়। বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত দ্বিতীয় অধিবেশনের পুরোটা সময় ধরে ভোটগ্রহণ চলে। দিনব্যাপী ভোটাভুটির পর গণনা শেষে রোববার রাতে ফল ঘোষণা করেন কাউন্সিলের প্রধান নির্বাচন কমিশনার সুমন কুন্ডু। ছাত্রলীগের একটি সূত্রে জানা গেছে, সম্মেলনের আগে শনিবার রাতে ছাত্রলীগের সদ্য বিদায়ী ও সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের একটি অংশ ছাত্রলীগের এক নেতার বাসায় সমঝোতার জন্য বসেন। পরে তাদের সমঝোতার মাধ্যমে এই দুইজনকে নেতা বানানো হবে বলে তারা সিদ্ধান্ত নেয়।

এই খবর সম্মেলনের ভোটের আগে রাতেই সবার মুখে মুখে শোনা যায় সভাপতি সোহাগ সাধারণ সম্পাদক জাকির। এই কারণে সোহাগের কাছে এবং জাকিরের কাছে আগে থেকে শত শত নেতাকর্মীকে দেখা গেছে।ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা জানিয়েছেন, নামে মাত্র নির্বাচন হয়েছে, ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রণে একটি সিন্ডিকেট শক্ত অবস্থানে আছে। তাদের হাত ধরনেই এই নেতাদের আসতে হয়েছে। আর একটি সিন্ডিকেট চেষ্টা চালিয়ে তাদের প্রার্থীদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারে নিদের্শ দেয়। সম্মেলনের আগেই একটি সূত্র জানিয়েছেন, সম্ভাব্য প্যানেল হতে পারে দুটি। একটি বর্তমান সভাপতি এইচএম বদিউজ্জামান সোহাগ এবং সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলমের প্যানেল। এটার সাথে লিয়াকত শিকদারও আছে বলে জানা গেছে।

অপরটি সাবেক সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপনের প্যানেল। তবে এই সম্মেলনে রিপনের প্যানেল দাঁড় করার সুযোগই পাইনি অপর দিকে লিয়াকত শিকদার সফল রয়েছে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর শেষ পর্যন্ত সভাপতি পদে ১০ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ১৮ জন সরাসরি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। দুই বছরের জন্য নতুন নেতা নির্বাচন করতে ছাত্রলীগের ১১০টি ইউনিটের মোট তিন হাজার ১৩৮ জন কাউন্সিলরের মধ্যে শেষ পর্যন্ত ভোট দেন দুই হাজার ৮১৯ জন।নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরুর পর সভাপতি পদে ৮০ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ১৬২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র কিনে জমা দিয়েছিলেন। বাছাইয়ের পর চূড়ান্ত প্রার্থী ছিলেন সভাপতি পদে ৬৪ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ১৪২ জন। তবে তাদের বেশিরভাগই ভোট শুরুর আগেই প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর সর্বশেষ হিসেবে সভাপতি পদে ১০ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ১৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন।নতুন সভাপতি সোহাগ ছাত্রলীগের বিদায়ী কমিটির পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ও নতুন সাধারণ সম্পাদক জাকির সহ-সম্পাদক ছিলেন।

দু’জনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের শিক্ষার্থী ও হল শাখা ছাত্রলীগের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক সোহাগ। সোহাগ ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের ২০০৫-০৬ শিক্ষাবর্ষে এবং জাকির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০০৭-০৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। সোহাগের বাড়ি মাদারীপুর ও জাকিরের বাড়ি মৌলভীবাজার জেলায়।এই সময় উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের সদ্য বিদায়ী সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং নেতাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম খান বাবু, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, একেএম এনামুল হক শামীম, সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ।

আতিক/প্রবাস

১২ thoughts on “লোক দেখানো নাটক বাদ দিয়ে বলে দিলেই তো হয় সোহাগ জাকির নির্বাচিত হয়েছে!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.