বাংলাদেশিরা দেশে বিদেশে আবেগ প্রবণ জাতি হিসেবে পরিচিত। আমাদের যত আবেগ, বিশ্বজুড়ে অন্য কোনো জাতি এত আবেগে গা ভাসায় না। একদিকে আবেগ অন্যদিকে ধর্ম ভক্তি! এ দুই -কে পুঁজি করে কি পরিমাণ প্রতারণার ফাঁদ তৈরি হচ্ছে নিত্যনতুন, হাতেনাতে ধরতে না পারলে কারোরই বুঝার উপায় নেই। যেমন দেশে, তেমনি বিদেশে।
আসছি মূল কথায়। বেশ কিছুদিন হলো ব্যক্তিগত প্রয়োজনে আমিরাতের আজমান সানাইয়ার পাঁচতলা বিল্ডিং এ উঠেছি। মাঝে মধ্যে সময় পার করতে তিন তলায় গিয়ে বাংলাদেশি ভাইদের সাথে আড্ডা দেই। সন্ধ্যার পর সবাই রুমে থাকেন। আমারও যাওয়া হয়। গত ক’দিন লক্ষ্য করলাম, বদল করে একেক দিন একেকজন পাকিস্তানি পুরো বিল্ডিং ঘুরে চাঁদা তুলেছেন। বিশেষ করে ধর্ম কর্মের কথা বলে বাংলাদেশিদের মন বুলিয়ে অর্থ আদায় করছে। আগেই বলেছি, বাংলাদেশিদের অতিরিক্ত আবেগ। ওসব পাকিস্তানিরা প্রথমে ধর্মীয় কথা বলে, পরে মাদ্রাসার ছাত্রদের দোহাই দেয়, সবশেষে ধর্মের সেবা করার কথা বলে চাঁদা দাবি করে। কেউ পাঁচ দিরহাম দিলে তাতে নাখোস হন, জোর করে দশ-পনের দিরহাম দিতে বাধ্য করেন। যেসব বাংলাদেশিরা ধর্মের কথা শুনে পাঁচ দিরহাম দিতে আগ্রহী হয়, সেই তারাই পরে জোরাজুরিতে পড়ে ভাবেন ‘নিশ্চয়ই ঘটনা আছে’! ধর্মীয় কাজে যে যা দেন, সেটাই নেয়া শ্রেয়। কিন্তু জোর খাটানো …!
এসব বাংলাদেশিদের বেতন বেশি হলে পনের’শ দিরহাম। প্রতিদিন এভাবে যদি ধর্মীয় কাজে দান করতে থাকে, তবে অন্য কিছু তাদের ভাবতে হবে না। বরং তারা ভাবেন। আর ভাবেন বলেই হয়তো এসব পাকিস্তানিদের পাতানো ফাঁদ থেকে মুক্তির পথ খুঁজছেন। বিষয়টি জানলাম। প্রত্যক্ষ করলাম শুক্রবার ও শনিবার। গতদিন যে এসেছে, সে মিষ্টিভাষী। এসে ধর্মের কথা বললেন। পরে মাদ্রাসা ও চাঁদার কথা। অতঃপর আমার কিছু প্রশ্নের মুখে ধরা পড়ে গেলো তার আসল রূপ। করলো সুর পরিবর্তন। একমাসের ভিজিটে এসেছে আমিরাতে। পাসপোর্ট কপি আর টিকিট কপি ছাড়া অন্য কোনো কাগজ দেখাতে না পেরে দ্রুত কেটে পড়েছেন। অবশ্য তার পাসপোর্ট কপির ছবি তুলে নিলাম এ ফাঁকে। আজ (শনিবার) অন্যজন একি কায়দায় সবশেষে চাঁদা দাবি করেন। প্রশ্ন করতেই উর্দু ভাষায় লিখিত দুটি কাগজ দেখালেন। সাথে ইংরেজিতে লিখিত এই সনদ। কথা হচ্ছে, যখন তার কাছে মাদ্রাসা-মসজিদের প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র চাইলাম সেও দ্রুত চলে যাওয়ার চেষ্টা শুরু করলো। চাঁদার কথা ভুলে চলেই গেলো। তিন তলার বাংলাদেশি ভাইরা জানালেন, ‘প্রায় সময় এরা আসে। চাঁদা নিয়ে যায়।’ প্রকৃত পক্ষে এরা প্রতারক।
আপনার কষ্টে উপার্জিত অর্থ তারা আয়েশ করে খরচ করবে। দূরে থাকুন, সর্তক থাকুন। মসজিদ, মাদ্রাসা বা ধর্মীয় কাজে দান করতে হলে এদের দিতে হবে কেন? যে দেশে কলমের চেয়ে অস্ত্রের মহড়া বেশি দৃষ্টিতে পড়ে। লক্ষ্য করলাম, এরা কিন্তু পাকিস্তানি হলেও পাকিস্তানিদের থেকে চাঁদা তুলে না, তুলে বাংলাদেশি সহ অন্যান্য এশিয়ানদের থেকে। আর আপনিও দান করবেন যখন, নিজ দেশে পাঠিয়ে দিন। পরিচিত মসজিদ মাদ্রাসায় দান করুণ। ধর্মীয় কাজে ব্যয় করুণ।
আর একটি কথা। গত কিছুদিন আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় এক ভারতীয় নাগরিকের প্রতারণার ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছিল। যে কিনা দুবাইয়ে হাত ভাঙ্গার অভিনয় করতে গিয়ে বাংলাদেশিদের হাতে ধরা পড়ে। একই রকম একজনকে রমজানে আমিও দেখেছি। সেও ধরা পড়েছে, কিন্তু তার ছবি বা ভিডিও নেই। এদের পাতানো ফাঁদে পা দেবেন না। যাচাই করুণ। দেখুন তার কাছে কোনো মেডিকেল সার্টিফিকেট আছে কিনা! থাকার কথাও না। কারণ এরা ভন্ড। এদের প্রতারণার জালে অসহায়ের মতো আপনি যদি ধরা দিয়ে থাকেন। তবে নিজ দায়িত্বে সতর্ক হোন, এরা ধান্ধাবাজ!
– কামরুল হাসান জনি ; সংবাদকর্মী।
news.jony@gmail.com
Ahsan Uddin Noashad liked this on Facebook.
Faisal Ahmed liked this on Facebook.
Showkat Hossain liked this on Facebook.
Omar Faruk Sagor liked this on Facebook.
Nigar Sultana liked this on Facebook.
MadZy Anik MoLlick liked this on Facebook.
Mizanur Rahaman liked this on Facebook.
MD Ziaul Hasan liked this on Facebook.
Imam Uddin liked this on Facebook.
Rasuler Soinik liked this on Facebook.
Jakir Hossain liked this on Facebook.
Arifur Rahman liked this on Facebook.
Mohiuddin Mdmohiuddin liked this on Facebook.
Khalifa Sohel liked this on Facebook.
Md Hossain liked this on Facebook.