রাজন খুনের ঘটনার বেশিরভাগ আসামী ধরা পড়লেও ঘাতক যুবলীগ নেতা আলী হোসেন এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। এই আলী হোসেন রাজনের লাশ গুম করা ও পুলিশকে ম্যানেজ করার দায়িত্বে ছিলো। সে মূল ঘাতক কামরুলকে বিদেশ পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করে। এদিকে, রাজন খুনের ঘটনার পর ঘাতকদের রক্ষায় জালালাবাদ থানা পুলিশের ভূমিকা ও অর্থের বিনিময়ে মূল ঘাতক কামরুলকে সৌদি আরব চলে যেতে সহায়তার অভিযোগের বিষয়টি এখন সর্বত্র আলোচিত হচ্ছে। মঙ্গলবার রাতে জালালাবাদ থানার এসআই আমিনুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। রাজনের বাবা শেখ আজিজুর রহমান ও স্বজনদের বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই আমিনুলকে প্রত্যাহার করা হয়। এর আগে এসব অভিযোগ তদন্তে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেন সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার কামরুল আহসান।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বুধবার দুপুরে এলাকাবাসী দুলালকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন। স্থানীয় একজন বাসিন্দা জানান, বেলা আড়াইটার দিকে দুলালের মা-বোন দুলালকে স্থানীয় ইউপি সদস্য গিয়াস উদ্দিনের কাছে হস্তান্তর করেন। গিয়াস উদ্দিন বিষয়টি সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আশফাক আহমদকে জানান। পরে উপজেলা চেয়ারম্যান পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। এ সময় পুলিশ দুলালকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এর আগে মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার করা হয় চৌকিদারা ময়না মিয়াকে। তাকে ৭ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। বুধবার দুপুরে পুলিশ তাকে সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-১ সাহেদুল করিমের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডে নেয়ার আবেদন জানায়। আদালত তার ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন । রাজন খুনের ঘটনার পর ময়না তার গ্রামের বাড়ি কুমারগাঁও সংলগ্ন পীরপুরে একটি বাড়িতে আতœগোপনে ছিল। মঙ্গলবার তারাবীহ’র নামাজের পর গ্রামের লোকজন তাকে গ্রেফতার করে পুলিশে সোপর্দ করেন। এ সময় উত্তেজিত জনতা ময়নার ওপর আক্রমণের চেষ্টা চালায়। জনতার রুদ্ররোষ থেকে পুলিশ অতি সুকৌশলে ময়নাকে জালালাবাদ থানায় নিয়ে যায়।
মামলা ডিবি পুলিশে স্থানান্তর
রাজন হত্যা মামলা ডিবি পুলিশে স্থানান্তর হচ্ছে। বুধবার সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার (এসএমপি) কামরুল আহসান মামলাটি ডিবি
পুলিশে স্থানান্তরের নির্দেশ দেন। এসএমপি’র এডিসি (মিডিয়া) রহমত উল্যাহ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মামলাটি শিগগিরই ডিবিতে স্থানান্তর করা হবে। বর্তমানে জালালাবাদ থানার পুলিশ মামলাটি তদন্ত করছে।
রাজন হত্যার বিচারে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল
শিশু সামিউল আলম রাজন (১৩) হত্যার বিচারে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি। বুধবার বেলা দেড়টার দিকে সিলেট শহরতলীর কুমারগাঁও বাদে আলী গ্রামে নিহত রাজনের বাড়িতে এসে তার বাবা-মাকে সান্ত¡না দিয়ে তিনি এ কথা জানান। এ নিয়ে আইনমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করবেন বলেও জানান তিনি। প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকার রাজন হত্যার বিচারে বদ্ধপরিকর। রাজন হত্যার ঘটনায় পুলিশ প্রশাসনের কারো দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে মেহের আফরোজ চুমকি এক লাখ টাকার একটি চেক রাজনের মায়ের হাতে হস্তান্তর করেন। এছাড়া নিহত রাজনের ছোট ভাই সামিউল আলম সাজনের লেখাপড়ার জন্য প্রতি মাসে দু’হাজার টাকা করে দেয়ার ঘোষণাও দেন জেলা প্রশাসক জয়নাল আবেদীন।
রাজনের মাকে ‘বোন’ বানালেন সংসদ সদস্য কেয়া
শিশু সামিউল আলম রাজন হত্যাকান্ডের ঘটনায় তার বাবা-মাকে শান্তনা দিতে সদর উপজেলার কান্দিগাঁও ইউনিয়নের বাদেআালী গ্রামে যান সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া চৌধুরী কেয়া। বুধবার দুপুর পৌনে একটার দিকে তিনি সেখানে যান। তিনি রাজনের মা লুবনা আক্তারকে বলেন, ‘আজ থেকে আপনি আমার আপন বোন। আমি মনে করবো আমার আরেকটা বোন আছে, আর সেটা হচ্ছেন আপনি। কেয়া রাজনের ছোট ভাইকে উপদেশ দিয়ে মনোযোগ সহকারে পড়াশোনা করতে বলেন। সে যেন বড় হয়ে এ ধরনের ন্যাক্করজনক ঘটনা দেখতে পেলে প্রতিবাদে সোচ্চায় হয়, সেই উপদেশ দেন তিনি। এর আগে সংসদ সদস্য কেয়া রাজন হত্যার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, মানুষ যাতে শিশু নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে সব সময় ঘৃণা প্রকাশ করে, সে জন্যই রাজনের হত্যাকান্ডের স্থানে একটি ঘৃণা স্তম্ভ নির্মাণের দাবি সংসদে জানানো হবে। তিনি রাজনকে শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতীক বলে উল্লেখ করেন।
পুলিশের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ
মর্মান্তিক ও পৈশাচিক হত্যাকা-ের শিকার শিশু শেখ সামিউল আলম রাজনের ঘাতকদের পালানোর জট খুলতে শুরু করেছে। বেরিয়ে আসছে একের পর এক তথ্য। মোটা অঙ্কের বিনিময়ে খুনীদের পালাতে ও দেশত্যাগের সুযোগ দেওয়ার অভিযোগও এখন বহুল আলোচিত। এসব অভিযোগ তুলছেন রাজনের বাবা শেখ আজিজুর রহমান নিজেই। তার দাবি, ছেলের লাশ পাওয়ার পর পুলিশ মামলা না নিয়ে তাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে থানা থেকে বের করে দেয়।
জানা গেছে, ৮ জুলাই সারাদিন ছেলে রাজনের কোনো খোঁজ না পেয়ে শেখ আজিজুর রহমান কয়েকজন লোক নিয়ে ওইদিন রাত ১১টার দিকে সিলেট মহানগরীর জালালাবাদ থানায় জিডি করতে যান। তারা যাবার আগেই অতি উৎসাহী হয়ে পুলিশের এসআই আমিনুল ইসলাম রাজনকে ‘অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি’ ও ‘চোর’ আখ্যা দিয়ে একটি হত্যা মামলা (নং ৪) দায়ের করেন। সেখানে সৌদিতে পলাতক কামরুলসহ জড়িত অনেকের নামই ছিল না। লাশ শনাক্তের পর আজিজুর রহমান কামরুলসহ জড়িত সকলের নাম উল্লেখ করে মামলা করতে চাইলে জালালাবাদ থানার ওসি (তদন্ত) আলমগীর হোসেন ও এসআই আমিনুল ইসলাম মামলা নেননি। গ্রহণ করা হয়নি তাদের এজাহারও। উপরন্তু আজিজুর রহমানকে ‘চোরের বাপ’ বলে অপমান করেন। তারপর ঘাড় ধাক্কা দিয়ে থানা থেকে বের করে দেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। থানায় তার সাথে ছিলেন রাজনের চাচা শেখ শফিকুর রহমান ও আল-আমিন, মইয়ারচর গ্রামের মুরুব্বী মোহাম্মদ আলী দুদু মিয়া ও মামাতো ভাই আব্দুল মালিক।
শেখ আজিজুর রহমানের অভিযোগ, থানা পুলিশ মিলে কামরুলকে সৌদিতে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করে। এরজন্যে ১২ লাখ টাকার চুক্তি হয় তাদের মধ্যে। চুক্তির অর্ধেকটাকা পুলিশকে হস্তানতর করার পর কামরুলকে পালাতে সহায়তা করে পুলিশ। তার ভাই মুহিতকে ছেড়ে দেবার জন্যে সৌদিতে পৌঁছার পর বাকি ৬ লাখ টাকা দেবার অঙ্গীকার করে কামরুল।
মামলার এজাহারে এসআই আমিনুল উল্লেখ করেন, ৮ জুলাই ভোর ৬টায় ভ্যান গাড়ী চুরিকালে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে মারপিট করলে গুরুতর আহত ও পরবর্তীতে মৃত্যু হয়। সকাল ১১টায় লাশ উদ্ধারের পর এসআই আমিনুল স্ব প্রণোদিত হয়ে থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পুলিশ কর্তৃক থানায় মামলা দায়েরের পর রাতে নিহতের লাশ শনাক্ত করেন স্বজনরা। এরপর ময়না তদন্ত শেষে পরদিন লাশ দাফন করা হয়। লাশ দাফনের আগেই নিহতের স্বজনরা জানতে পারেন এ ঘটনায় পুলিশ স্বপ্রণোদিত হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছে।
নিহতের স্বজনরা অভিযোগ করেন, রাজনের খুনীদের রক্ষার জন্যেই পুলিশ তড়িগড়ি করে মামলা দায়ের করে। অথচ দেখা গেছে, অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার হলে জিডি করেই পুলিশ দায়দায়িত্ব শেষ করে। কখনো করা হয় অপমৃত্যু মামলা। কিন্তু রাজনকে চোর ও অজ্ঞাত আখ্যা দেওয়া হলেও এসআই নিজে উদ্যোগী হয়ে করেছেন হত্যা মামলা। তাদের এই অতি উৎসাহই এবং প্রকৃত খুনিদের আড়াল ও পালাতে সহায়তা করার অভিযোগ নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
নিহতের পিতার এজাহার প্রথমে ফিরিয়ে দেয়া হলেও পরবর্তীতে ৯ জুলাই থানায় এএসআই জবা এজাহারটি ‘গৃহিত’ বলে গ্রহণ করলে রাজনের পিতার এজাহার এখনো মামলা হিসেবে রেকর্ড হয়নি।
এসআই আমিনুলের করা মামলায় বাদী করা হয়েছে রাজনের পিতা আজিজুর রহমানকে। আর সেই মামলার তদন্ত করছেন আসামিদের পালাতে সহায়তায় অভিযুক্ত জালালাবাদ থানার ওসি (তদন্ত) আলমগীর হোসেন। মামলাটি তারা শেষ পর্যন্ত কোনো পরিণতির দিকে নিয়ে যান, এই নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে রাজনের স্বজনদের মধ্যে।
পুলিশের বিরুদ্ধে উত্থাপিত এসব অভিযোগ তদন্তে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এস এম রোকন উদ্দিনকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে তিন কার্য দিবসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। অবশ্য, এরই মধ্যে মঙ্গলবার রাতে আলোচিত এস আই আমিনুলকে প্রত্যাহার করে উপ-পুলিশ কমিশনার সদর(উত্তর) কার্যালয়ে ক্লোজড করা হয়েছে।
এডিসি রহমত উল্লাহ জানিয়েছেন, পুলিশের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্ত করতেই কমিটি করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাজন হত্যা মর্মান্তিক, মানবতাবিরোধী ঃ শিক্ষামন্ত্রী
শিশু শেখ সামিউল আলম রাজনের হত্যাকে মর্মান্তিক ও মানবতাবিরোধী বলে উল্লেখ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। মঙ্গলবার মন্ত্রীর আঞ্চলিক গণমাধ্যম সমন্বয়কারী আব্বাছ উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শিক্ষামন্ত্রী রাজন হত্যার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে হত্যার সঙ্গে জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তারের আহ্বান জানিয়েছেন। এতে বলা হয়, রাজন হত্যার বিষয়ে মন্ত্রী টেলিফোনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তিনি রাজনের পরিবারের খোঁজখবর নেন। এ ছাড়া তিনি সিলেটের জেলা প্রশাসক এবং মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে ফোনে কথা বলে এ হত্যাকা-ে জড়িত অন্য আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। শিক্ষামন্ত্রী রাজনের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। তিনি তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
উল্লেখ্য, গত ৮ জুলাই বুধবার সকালে চোর সন্দেহে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয় ১৩ বছরের রাজনকে। নির্যাতনকারীরাই শিশুটিকে পেটানোর ভিডিও ধারণ করে এবং ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়। ২৮ মিনিটের ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় তোলপাড়। এরআগে কুমারগাঁও এলাকার একটি গ্যারেজে ওই হত্যাকান্ডের পর একটি মাইক্রোবাসে তুলে রাজনের লাশ নিয়ে যাওয়ার সময় মুহিত আলমকে (২২) ধরে পুলিশে দেয় স্থানীয়রা। জালালাবাদ থানা পুলিশ এরপর একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলায় মুহিত, তার ভাই কামরুল ইসলাম (২৪), তাদের সহযোগী আলী হায়দার ওরফে আলী (৩৪) ও চৌকিদার ময়না মিয়া ওরফে বড় ময়নাকে (৪৫) আসামি করা হয়। শিশু রাজনকে নির্যাতনের ভিডিওটি জালালাবাদ থানা পুলিশ উদ্ধার করেছে। নিহত সামিউল আলম রাজনের বাড়ি সিলেট নগরীর কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ডের পাশে সিলেট সদর উপজেলার কান্দিগাঁও ইউনিয়নের বাদে আলী গ্রামে। রাজনের বাবা শেখ আজিজুর রহমান পেশায় একজন প্রাইভেট কার চালক। তার দুই ছেলের মধ্যে রাজন বড়। অনন্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করা সামিউল সবজি বিক্রি করতো।
আতিক / প্রবাস
Md Mobin liked this on Facebook.
Pavel Shah liked this on Facebook.
Faruk Ferdus liked this on Facebook.
Anwar Bhuiyan liked this on Facebook.
Yusuf Un Nobi Babu liked this on Facebook.
Atiqul Islam Masud liked this on Facebook.
Md Kawsar liked this on Facebook.
AK Azad liked this on Facebook.
Mamon Fragi liked this on Facebook.
Sarowar Islam liked this on Facebook.
Shahidul Alam liked this on Facebook.
মানিক মিয়া liked this on Facebook.
Alamgir Rashid liked this on Facebook.
Abul Kashem liked this on Facebook.
Mahbub Samol liked this on Facebook.
Shewly Akther liked this on Facebook.
Kakon Siddique liked this on Facebook.