আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও দফতরবিহীন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম অভিমান করে যাতে দল থেকে দূরে সরে না যান সেজন্য উদ্যোগগ্রহণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত রোববার সন্ধ্যায় গণভবনে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে ডেকে নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওইদিন গণভবনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি একান্তে কথা বলেন। এছাড়াও দফতর থেকে সরানোর পর আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে তার বাসভবনে গিয়ে দেখা করেন।
এদের মধ্যে দলের সভাপতিম-লীর কয়েকজন সদস্যও ছিলেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী বোন শেখ রেহানাও সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করেছেন। আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে সৈয়দ আশরাফকে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী করার পর থেকেই দলের ভেতরে ও বাইরে নানাবিধ সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের। আর এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রোববার গণভবনে ডেকে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে নতুন কোনো মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব দিয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে ওই প্রস্তাবের ফলাফল সম্পর্কে তাৎক্ষনিকভাবে কিছুই জানা যায় নি।
অভিযোগ উঠেছে, ১/১১-এর কিছু কুশীলব এবং আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের একটি অংশের দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টার ফলে সৈয়দ আশরাফকে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী করা হয়েছে। যদিও ওই ঘটনার পর তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাননি আশরাফ। যেদিন তিনি দপ্তর হারালেন সেদিনও দলের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে রাজনৈতিক বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। ওইদিনের অনুষ্ঠান শেষে গণমাধ্যমকর্মীরা একাধিকবার পীড়াপীড়ি করলেও দপ্তর হারানোর বিষয়ে একটিও কথা বলেননি আশরাফ। পরের দিন রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে অপর এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে সৈয়দ আশরাফ বলেন, ‘লাভের জন্য রাজনীতি করি না। আমার পিতা সততার সাথে রাজনীতি করেছেন।
বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বেইমানি করেননি। নেতার জন্য মৃত্যুবরণ করেছেন। এটাই আমার রক্ত।’ আশরাফের ওই দুই লাইনের বক্তব্যে অভিমানের সুর খুঁজে পান আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীই। এছাড়া দপ্তরবিহীন মন্ত্রী হওয়ার পরপরই জানা যায়, সৈয়দ আশরাফ চলতি মাসের ১৫ তারিখ লন্ডনের উদ্দেশে দেশ ছাড়েন। যদিও তার ঘনিষ্ঠজনরা দাবি করছেন, পরিবারের সাথে ঈদ উদযাপনের জন্য তিনি ১৫ দিনের ছুটিতে লন্ডন যাচ্ছেন। তারপরও আওয়ামী লীগের অনেকের মধ্যেই এমন আশঙ্কা কাজ করছে আশরাফ অভিমান করে আর লন্ডন থেকে আর না ফিরতেও পারেন। এছাড়াও দপ্তরবিহীন মন্ত্রী হওয়ার পর প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠকে গতকাল সোমবার অনুপস্থিত ছিলেন সৈয়দ আশরাফ। যদিও এর আগে প্রায় সব বৈঠকেই সরব ছিলেন সাবেক স্থানীয় সরকারমন্ত্রী। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আশরাফ ভাই তো ঠাণ্ডা মানুষ। উনাকে দেখে কিছু বোঝা যায় না। তিনি যে কি করেন তা তিনিই ভালো জানেন।’
সরকারের ওই সূত্রটি জানান, সৈয়দ আশরাফ অভিমানে সরকার ও দল থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন কি না আওয়ামী লীগের ভেতরে যখন এমন গুঞ্জন চলছে তখনই গত রোববার সন্ধ্যায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডেকে নেন আশরাফকে। আশরাফের সঙ্গে একান্তে কথা বলেন। তিনি যাতে ১৫ তারিখের পরে দেশের বাইরে যান সেজন্যও আহ্বান জানান। শেখ হাসিনা তার আস্থাভাজন আশরাফকে নিজের অধীনে থাকা যেকোনো মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নতুন করে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, শপথ নিয়ে লন্ডন যেতে। তারপর ১৫ দিনের বেশি ছুটি কাটিয়ে আসতে।
কিন্তু ওই প্রস্তাবের ফলের বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। এদিকে আসন্ন ঈদের আগেই মন্ত্রিসভায় আরেকদফা বড় ধরনের রদবদল করতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। এর ফলে নতুন কিছু মুখ মন্ত্রিসভায় আসছেন এবং বর্তমানের দুয়েকজন বাদ পড়ছেন বলে সরকারি সূত্রে জানা গেছে। এদিকে, দপ্তর হারানোর পর মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। বৈঠকের পর পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা সচিবালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলে আশরাফের অনুপস্থিতির বিষয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েন। উত্তরে তিনি বলেন, আজ (সোমবার) বৈঠকে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন না। তার মানে এই নয়, আগামীতে তিনি আসবেন না।
সৈয়দ আশরাফকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে সরালেও দপ্তরবিহীন মন্ত্রী হিসেবে রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৯ জুলাই তাকে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী করার পর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাকে জাতীয় পতাকা শোভিত গাড়ি নিয়েই অংশ নিতে দেখা গেছে। মন্ত্রিসভা বৈঠকে অংশ নেওয়ার জন্য সৈয়দ আশরাফকে ‘কেবিনেট ফোল্ডার’ পাঠানো হয়েছিল কি না, সাংবাদিকদের ওই প্রশ্ন এড়িয়ে যান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, যে মন্ত্রণালয়ে পূর্ণমন্ত্রীর সঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী রয়েছেন, সেসব মন্ত্রণালয়ের শুধু মন্ত্রী মন্ত্রিসভা বৈঠকে অংশ নিতে ‘কেবিনেট ফোল্ডার’ পান। ওইসব মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীদের তিন মাস পর পর মন্ত্রিসভা বৈঠকে অংশ নেওয়ার জন্য ফোল্ডার পাঠানো হয়।
আতিক/প্রবাস
Singer Boy Tanvir liked this on Facebook.
Shakil Ahmed liked this on Facebook.
Imdad Ullah liked this on Facebook.
M F Karim Khan liked this on Facebook.
Monirul Islam liked this on Facebook.
Yusuf Un Nobi Babu liked this on Facebook.
Noorul Islam liked this on Facebook.
Delwar Hossain liked this on Facebook.
Abdul Mannan liked this on Facebook.
Md Rushu liked this on Facebook.
Abdur Rob Bachu liked this on Facebook.
Rashed Islam liked this on Facebook.
Imran Hossan Shohag liked this on Facebook.