খালেদা জিয়ার বিচারে ট্রাইব্যুনাল হবে : প্রধানমন্ত্রী

পেট্রলবোমা হামলার নির্দেশদানকারী হিসেবে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিচারে ট্রাইব্যুনাল গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জাতীয় সংসদকে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ বুধবার দ্বিতীয় বাজেট অধিবেশনে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সংসদ সদস্য সেলিনা বেগমের তারকা চিহ্নিত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ তথ্য জানান।

শেখ হাসিনা জানান, পেট্রলবোমা হামলার নির্দেশদানকারী খালেদা জিয়া ও তাঁর সহযোগীসহ সব অপরাধীর নামে দায়ের করা মামলাগুলো বিচার করার জন্য সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯-এর ২৭ ধারা অনুযায়ী সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের বিধান রয়েছে। ভবিষ্যতে ওই আইনের ২৭ ধারা অনুযায়ী ট্রাইব্যুনাল গঠনের পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘ট্রাইব্যুনাল গঠিত না হওয়া পর্যন্ত আইনের অধীন অপরাধসমূহের দ্রুত বিচারকার্য সম্পন্ন করার জন্য দায়রা জজ বা দায়রা কর্তৃক অতিরিক্ত দায়রা জজের নিকট স্থানান্তরিত হওয়ার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত দায়রা জজকে বিচারকার্য সম্পন্ন করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে পেট্রলবোমা হামলার প্রতিটি ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। এসব মামলার তদন্ত সুষ্ঠু ও দ্রুততম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং তা যথাযথ প্রতিপালনের বিষয়টি মনিটর করা হচ্ছে। এসব মামলার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ মামলাগুলো দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরের ব্যবস্থা করা হবে।’

প্রশ্নোত্তর পর্বে শেখ হাসিনা বলেন, ‘খালেদা জিয়ার হুকুমে এ বছর ৫ জানুয়ারি থেকে চলমান হরতাল ও অবরোধকালীন এবং গত ২ জুন পবিত্র শবে বরাতের রাতে কুমিল্লায় যাত্রীবাহী বাসে ছয়জনসহ পেট্রলবোমা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ১৩৪ জনকে হত্যা করা হয়েছে। তাদের ইস্যুবিহীন কথিত আন্দোলনের নামে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের ফলে এক হাজার ৩৯৫টি যানবাহন, ১৩ দফা ট্রেনে এবং ছয়টি লঞ্চে নাশকতা চালানো হয়।’

নিহতদের স্বজন এবং আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য আর্থিক সাহায্য করা হচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটা চলমান। নিহতদের স্বজন ও আহতদের মধ্যে এ পর্যন্ত ২২০ জনকে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে ২০  কোটি ৩৭ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আহত পাঁচজন ও নিহত আরো ১৩ জনের স্বজনের জন্য এক কোটি ৩৬ লাখ টাকার চেক প্রস্তুত করা হয়েছে, যা শিগগিরই বিতরণ করা হবে।’

আহত ও নিহতদের মধ্যে সর্বমোট ২১ কোটি ৭৩ লাখ টাকা বিতরণ শেষের পথে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

সংসদ নেতা আরো জানান, ক্ষতিগ্রস্ত যানবাহনের মধ্যে এ পর্যন্ত ৮৬০টি যানবাহনের বিপরীতে সংশ্লিষ্ট মালিকদের নয় কোটি ৫৭ লাখ ৭৯ হাজার ১৪০ টাকা সহায়তা করা হয়েছে। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত আরো ২৮৫টি গাড়ির জন্য সংশ্লিষ্ট মালিকদের সাত কোটি ২১ লাখ ১২ হাজার টাকার চেক প্রস্তুত করা হয়েছে, যা শিগগিরই বিতরণ করা হবে।

সবশেষে শেখ হাসিনা বলেন, পেট্রলবোমায় গুরুতর আহত চারজনকে (এসএসসি পরীক্ষার্থী অনিক ও হৃদয়, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল কাদের এবং ট্রাকড্রাইভার লিটন মিয়া) উন্নত চিকিৎসার জন্য একাধিকবার বিদেশে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের চিকিৎসা খরচ নির্বাহের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে এ পর্যন্ত ৩৮ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। তাঁদের চিকিৎসা চলমান রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *