সিপি গ্যাংকে সরকারি অনুদান!

অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, সামাজিক মাধ্যমে দলবেঁধে গালি দেয়ার জন্য বিতর্কিত গোষ্ঠী সিপি গ্যাংকে সরকারি তহবিল থেকে অনুদান দেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার রাজধানীর বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) সভাকক্ষে এক অনুষ্ঠানে সিপি গ্যাংকে চার লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করা হয়।

জানা গেছে, তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে উদ্ভাবনী কাজ ও উচ্চশিক্ষার জন্য সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ তৃতীয় পর্বে উদ্ভাবন অনুদানের আওতায় সিপি গ্যাংকে তহবিল দেয়া হয়।

এবার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিকে মোটে সাড়ে তিন কোটি টাকারও বেশি অনুদান দেয়া হয়। এর মধ্যে  উদ্ভাবনী কাজের জন্য ১ কোটি ৫৭ লাখ ৭৩ হাজার টাকা এবং শিক্ষাবৃত্তির (ফেলোশিপ) জন্য ১ কোটি ৯৮ লাখ ৪৭ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়।

জানা গেছে, তথ্যপ্রযুক্তির উদ্ভাবন তহবিল থেকে প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের অনুদান দেওয়া হয়। ২০১৩-১৪ অর্থবছর থেকে চালু হওয়া এই তহবিল থেকে বছরে তিনবার উদ্ভাবনী কাজের জন্য অনুদান এবং উচ্চশিক্ষার জন্য ফেলোশিপ বা বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে।

তথ্যপ্রযুক্তির বিভিন্ন উদ্ভাবনী ধারণা নিয়ে আবেদন আহ্বান করা হয়। পরে আবেদনকারীদের উদ্ভাবনী তহবিল কমিটির সামনে ধারণা উপস্থাপন করতে হয়। সবশেষে কিমটির নির্বাচিত আবেদনকারীদের অনুদান দেওয়া হয়।

এবার মাস্টার্স ও এমফিলের জন্য ফেলোশিপ পেয়েছেন ৪১ জন এবং ডক্টরাল ফেলোশিপ দেওয়া হয় ছয়জনকে।

দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্বে দেশের তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে তথ্যপ্রযুক্তি ফেলোশিপ তহবিলে অনুদান দেওয়া হয়েছে। অনুদান পেয়েছে ইসলামী প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (১ লাখ ২০ হাজার টাকা), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা) এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (১ লাখ ২০ হাজার)।

দ্বিতীয় পর্বে অনুদানপ্রাপ্তদের তালিকা: সেন্টার ফর চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট বাংলাদেশ (১০ লাখ টাকা), দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (১৫ লাখ টাকা), বাংলাদেশ আর্মি ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি (২০ লাখ টাকা), বুয়েটের অধ্যাপক আবু সৈয়দ মো. লতিফুল হক (পাঁচ লাখ টাকা), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হাফিজ মো. হাসান (পাঁচ লাখ টাকা), স্বদেশ উন্নয়ন কেন্দ্র (সাত লাখ টাকা), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক অমিত শীল (২ লাখ ৫০ হাজার টাকা), নিকুঞ্জ নারী উন্নয়ন সংস্থা (২ লাখ ৫০ হাজার টাকা) ও ফ্যালকন টেকনোলজিস (পাঁচ লাখ টাকা)।

এ ছাড়া নয় বছর বয়সী কম্পিউটার প্রোগ্রামার ওয়াসিক ফারহান রূপকথাকে এ তহবিল থেকে দেওয়া হয়েছে পাঁচ লাখ টাকা।

তৃতীয় পর্বের অনুদানপ্রাপ্তদের তালিকা: মনোয়ারুল ইসলাম (চার লাখ টাকা), সিপি গ্যাং লিমিটেড (চার লাখ টাকা), চিত্তরঞ্জন সরকার (পাঁচ লাখ টাকা), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জেবা ইসলাম সিরাজ (পাঁচ লাখ টাকা), ম্যাসিভস্টার স্টুডিও (১০ লাখ টাকা), সূর্যমুখী লিমিটেড (পাঁচ লাখ টাকা), অমিত কুমার দাস (২ লাখ ৫০ হাজার টাকা), অ্যাপরম্ব টেক বিডি (পাঁচ লাখ টাকা), মো. রঞ্জু ইসলাম (পাঁচ লাখ টাকা) এবং ডি-আইটি ইন্টেলিজেন্স লিমিটেড (চার লাখ টাকা)।

বিশেষ এককালীন অনুদান পেয়েছে বাংলাদেশ ইনফরমেটিকস অলিম্পিয়াড কমিটি।

উদ্ভাবন তহবিলের উপদেষ্টা অধ্যাপক মো. কায়কোবাদ বলেন, ‘জাপানও আমাদের মতো ছোট দেশ কিন্তু তারা সম্পদের সুষম ব্যবহার করে এবং নতুন নতুন উদ্ভাবনে গুরুত্ব দিয়ে আজ বিশ্ব অর্থনীতিতে অন্যতম শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।’

আইসিটি সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, নতুন নতুন উদ্ভাবন সার্বিক উন্নয়ন করতে পারে।

অনুষ্ঠানে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদের লিখিত বক্তব্য পাঠ করে জানানো হয়, সরকারের লক্ষ্য ২০২১ সালের মধ্যে এক হাজার উদ্ভাবনী কাজ সম্পন্ন করা।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.