টানা বৃষ্টিতে ভূমিধসে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলায় এখন পর্যন্ত ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। সময় যত যাচ্ছে, বাড়ছে লাশের সংখ্যা। নিখোঁজ রয়েছেন বহু মানুষ। হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। মৃত্যুর মিছিল সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে প্রশাসন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ‘যুদ্ধকালীন’ তৎপরতায় কাজ চালাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা।
মঙ্গলবার দিনভর একটানা প্রবল বৃষ্টিপাতের পর রাত থেকেই দার্জিলিংয়ের পার্বত্য অঞ্চলজুড়ে শুরু হয় ভয়ংকর ধস। বিশেষ করে দার্জিলিংয়ের মিরিখ, কালিম্পং সংলগ্ন এলাকায় ভয়াবহতার পরিমাণ বেশি।
ধস নেমেছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কেও। ফলে দার্জিলিংয়ের সঙ্গে বিভিন্ন স্থানের যান চলাচল আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। ধসে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে দার্জিলিংয়ের সঙ্গে সিকিমসহ কয়েকটি স্থানের যোগাযোগ ব্যবস্থা। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে শিলিগুড়ি-দার্জিলিংয়ের মধ্যে যাতায়াতকারী ঐতিহ্যবাহী টয় ট্রেনও।
এ ঘটনার পর বুধবার সকালেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দার্জিলিংয়ের পথে রওনা দেন। দ্রুতগতিতে উদ্ধারকাজ চালানোর জন্য রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে দার্জিলিংয়ে পাঠানো হচ্ছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাষ্ট্রমন্ত্রী কিরেন রিজেজুকে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
দার্জিলিংয়ের জেলা শাসক অরুণ শ্রীবাস্তব সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৩৮ জনের খোঁজ মিলেছে। মৃতদেহ উদ্ধারের পাশাপাশি নিখোঁজদের খোঁজে জোর তল্লাশি শুরু হয়েছে। দার্জিলিংয়ের কমপক্ষে ৫৯ জায়গায় ধস নেমেছে। অনেক বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জেলা শাসক আরো জানান, ধসে নিহত প্রতিটি পরিবারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবল থেকে দুই লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ধস সরানোর কাজে এরই মধ্যে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় হাত লাগিয়েছে সীমা সুরক্ষা বল এবং স্থানীয় প্রশাসন।
অন্যদিকে টানা বৃষ্টির কারণে ডুয়ার্সের বেশ কিছু এলাকায় তিস্তা এবং অন্যান্য নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ কারণে সংলগ্ন এলাকায় ‘লাল’ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।