রেমিটেন্সে সৌদির পরই আমিরাতের অবস্থান

কামরুল হাসান জনি
প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রেরিত রেমিটেন্সের দিক থেকে বর্তমানে সৌদি আরবের পরই আরব আমিরাতের অবস্থান। পূর্বে দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির অবস্থান তৃতীয়। বাংলাদেশ কনস্যুলেট দুবাইয়ের তথ্য অনুযায়ী ২০১২-১৩ অর্থবছরে আমিরাত থেকে রেমিটেন্স প্রেরণ করা হয় ২.৮ বিলিয়ন ইউএস ডলার। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে তা হ্রাস পেয়ে ২.৭ বিলিয়নে নেমে এলেও গত ১১ মাসে আমিরাত থেকে ২.৮ বিলিয়ন ইউএস ডলার রেমিটেন্স বাংলাদেশে প্রেরণ করা হয়েছে। জুনে রমজান হওয়ায় রেমিটেন্স ২.৯ বিলিয়ন ইউএস ডলার ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা ব্যক্ত করেন কনস্যুলেটের প্রথম সচিব (শ্রম) একেএম মিজানুর রহমান। ভিসা বন্ধ থাকায় আমিরাত থেকে রেমিটেন্স প্রেরণের হার হ্রাস পাওয়ার যে আশঙ্কা করেছেন প্রবাসীরা সে পরিমাণে হ্রাস না পেয়ে বরং রেমিটেন্সের হার ঊর্ধ্বমুখী আছে বলেই দাবি করেন কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল মাসুদুর রহমান।

মাসুদুর রহমান জানান, ‘আরব আমিরাতের তুলনায় সৌদি আরবে বাংলাদেশি ব্যবসায়ী কম। সেখানে ২.৫ মিলিয়ন বাংলাদেশি থাকা সত্ত্বেও এবছর রেমিটেন্স প্রেরণ করেছে ৩.৩ বিলিয়ন ইউএস ডলার। কিন্তু তাদের জনসংখ্যা কমছে না। আমিরাতের ভিসা বন্ধ ও নানা জটিলতায় এক মিলিয়ন প্রবাসী থেকে কিছুটা কমে গেছে। এখানে ব্যবসায়ীদের সংখ্যা বেশি থাকায় ভিসা বন্ধের ইস্যুটি রেমিটেন্সের ওপর প্রভাব বিস্তারের সুযোগ নেই। তবে ভিসা খোলা থাকলে রেমিটেন্স আরও বৃদ্ধি হতো। যেহেতু রেমিটেন্সের সিংহভাগ ব্যবসা-বাণিজ্য খাতে সে হিসাবে এখানে যারা বিনিয়োগ করার মতো আছেন তারা চাকরির পাশাপাশি ব্যবসা করলে বা ফ্রি জোনে বিনিয়োগ করে ইন্ডাস্ট্রি দাঁড় করাতে পারলে রেমিটেন্স বাড়বে কয়েকগুণ।’

আমিরাতে রেমিটেন্স কোম্পানিগুলো মধ্যে ইউএই এক্সচেঞ্জ প্রতি বছর সারা বিশ্বে একাই রেমিট করে প্রায় ৫১ বিলিয়ন দিরহাম। তাদের পাশাপাশি তিনটি বাংলাদেশি রেমিটেন্স কোম্পানিও আছে এখানে। রেমিটেন্স কোম্পানি বাড়ানোর উদ্যোগ ও পাশাপাশি এসব কোম্পানি থেকে প্রবাসীদের কিছু সুযোগ-সুবিধার আওতায় নিয়ে এলে রেমিটেন্স অধিক হারে বাড়তে পারে বলেও মত প্রকাশ করেন কনসাল জেনারেল মাসুদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘ভিন্ন আঙ্গিকের কিছু ছোট ছোট চিন্তা বড় ধরনের সফলতা এনে দিতে পারে। বাংলাদেশে এখন অনলাইন শপিং ব্যবস্থা রয়েছে। যদি এমন করা হয়, দেশে কেউ ছোট ভাইকে কম্পিউটার কিনে দেবেন, কাউকে বিবাহবার্ষিকীর গিফট পাঠাবেন, কেক পাঠাবেন বা একটি শাড়ি পাঠাবেন। এজন্য রেমিটেন্স কোম্পানিগুলো বিক্রয়ডটকমের মতো কোনো অনলাইন শপিং কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করে পণ্য হোম ডেলিভারির ব্যবস্থা করতে পারলে আমিরাত থেকে আরও বেশি রেমিটেন্স যাবে বাংলাদেশে। ফিলিপাইনে বর্তমানে এই সার্ভিসটা চালু রয়েছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *