মার্কিন সাংবাদিকতায় বাংলাদেশি নারীর গ্র্যাসিজ অ্যাওয়ার্ড

মার্কিন সাংবাদিকতায় বাংলাদেশি নারীর কৃতিত্ব। (চট্টগ্রামের সন্তান আবুল ওয়াহিদ মাহফুজ ও নাজমুন মাহফুজের একমাত্র কন্যা তাসমিন মাহফুজ)
আমেরিকায় নারী সাংবাদিকতায় বিশেষ কৃতিত্ব প্রদর্শনের জন্যে ‘গ্র্যাসিজ অ্যাওয়ার্ড’ পেলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তাসমিন মাহফুজ। আমেরিকায় নারী সাংবাদিকতায় এটি হচ্ছে শীর্ষস্থানীয় একটি অ্যাওয়ার্ড। সোমবার নিউইয়র্ক সিটির হিল্টন হোটেলে ‘এলায়েন্স ফর উইমেন ইন মিডিয়া’র উদ্যোগে অনাড়ম্বর এক অনুষ্ঠানে এ অ্যাওয়ার্ড হস্তান্তর করা হয়।
এবিসি ফোর ইউটাহ’র ব্যুরো চিফ হিসেবে তাসমিন মাহফুজকে বিপুল করতালির মধ্যে এ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করেন প্রখ্যাত টিভি সাংবাদিক ও প্রযোজক ট্যামরোন হল। খবর এনআরবি নিউজের।
প্রসঙ্গত, ১৯৭৫ সাল থেকে এ অ্যাওয়ার্ড প্রবর্তন করা হয়েছে সংবাদপত্র, রেডিও এবং টেলিভিশনে আমেরিকার সেরা নারী সাংবাদিকদের জন্যে। চট্টগ্রামের সন্তান আবুল ওয়াহিদ মাহফুজ ৩২ বছরের অধিক সময় যাবত ফ্লোরিডার ওয়েস্ট পামবিচে সপরিবারে বসবাস করছেন। তারই একমাত্র কন্যা তাসমিন মাহফুজ। তাসমিন জর্জিয়ার এমরয় ইউনিভার্সিটি থেকে গ্র্যাজুয়েশন করেছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে। এরপর মাস্টার্স করেছেন লিগেল স্টাডিজে। এবিসি চ্যানেল ফোর-এ যোগদানের আগে তিনি একটি ইন্টারন্যাশনাল নেটওয়ার্কের টিভি রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেন।
অ্যাওয়ার্ড গ্রহণের পর নিজের অনুভূতি ব্যক্তকালে তাসমিন বলেন, মূলধারার মিডিয়ায় নিজেকে বাংলাদেশিদের প্রতিনিধি হিসেবে দাঁড় করাতে পেরে যারপর নাই আনন্দ ও গৌরববোধ করছি। সে গৌরব আজ আরও মহিমান্বিত হলো ‘এলায়েন্স ফর উইমেন ইন মিডিয়া’র এ অ্যাওয়ার্ড গ্রহণের মধ্য দিয়ে। এটি অত্যন্ত সম্মানজনক এবং পেশাগতভাবে মর্যাদার এ অ্যাওয়ার্ড পেয়ে আমি মূলত প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। কারণ সেই ছোট্টবেলা থেকেই আমি মা-বাবার সংস্কৃতির মধ্যে রয়েছি। কম্যুনিটির সব অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছি। মিডিয়ার প্রতি আমার আকর্ষণ বেড়েছে মা-বাবার উৎসাহে।
দক্ষিণ এশিয়ার কোনো নারী সাংবাদিক এ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে কিনা জানতে চাইলে তাসমিন বলেন, আমি যতদূর জানি, আর কেউ পাননি। শুধু তাই নয়, মার্কিন মূলধারার টিভি সাংবাদিকতায় গুটিকতক নারী রয়েছেন, যারা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত। তবে আমিই প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নারী যিনি এমন মর্যাদাকর অ্যাওয়ার্ড পেলাম।
পরম করুণাময়ের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তাসমিন বলেন, আমি মার্কিন ধারায় বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করতে বদ্ধ পরিকর এবং সেটিই আমার বড় কামনা। কারণ, আমি দ্বিতীয় জেনারেশনের বাংলাদেশি হিসেবে আমার চেয়ে কম বয়সীদের পথ সুগম করতে চাই। আমি যদি ভালো করতে পারি তাহলে অন্যেরাও উৎসাহ পাবে। মূলধারার মিডিয়ায় বাংলাদেশি প্রজন্ম সম্পর্কে উজ্জ্বল একটি ধারণা তৈরি করতে চাই।
অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ অনুষ্ঠানে ছিলেন তাসমিনের মা নাজমুন মাহফুজ। তিনি বলেন, আমি অনেক খুশি। অনেক ত্যাগ ও কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে সে এ অ্যাওয়ার্ড পেলো। আমি চাই সে যেন আরো বহুদূর এগুতে পারে।
একইসঙ্গে মার্কিন সংবাদপত্র, রেডিও এবং টেলিভিশনের আরও কয়েকটি ক্যাটাগরিতে সেরা নারী সাংবাদিকদের অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয় উৎসবমুখর পরিবেশে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.