আসিফ মহিউদ্দিন। যার পরিচিতি শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ থেকে। তিনি ছিলেন গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম সংগঠক। কিন্তু কিছু দিন যেতে না যেতেই কয়েকটি ধর্ম ভিত্তিক রাজনৈতিক দল ও ধর্মভিত্তিক সংগঠন তাকে ধর্মবিরোধী নাস্তিক ব্লগার হিসেবে আখ্যা দেয়। ধর্ম ভিত্তিক রাজনৈতিক দল ও ধর্মভিত্তিক সংগঠন গুলোর প্রতিবাদে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার এবং পরে জেলে ও যেতে হয়। তার ফেসবুক থেকে জানা যায় বর্তমানে তিনি জার্মানিতে অবস্থান করছেন। রবিবার, ২৮ জুন ২০১৫ বাংলাদেশ সময় রাত ১০ টা ৩২ মিনিটে শাহবাগি ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিন ইসলাম ধর্মের প্রাণের স্পন্দন পবিত্র ক্বাবা শরীফ কে অবমাননা করে একটি বিতর্কিত পোস্ট দেন। ক্বাবা শরীফে সমকামিতার সাইন রঙধনু লাগিয়ে পোস্ট দেন যা দেখে কোন প্রকৃত মুসমানের প্রতিবাদ না করে উপায় নেই। নাস্তিক ব্লগারদের এ ধরণের মাত্রাতিরিক্ত বাড়াবাড়ির কারণেই সমাজে তৈরি হয় অস্থিরতা, ধর্মীয় উন্মাদনা। ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিনের পবিত্র ক্বাবা শরীফ নিয়ে মাত্রাতিরিক্ত বাড়াবাড়ির দুটি ফেসবুক স্ট্যাটাস ছবি সহ হুবহু আমাদের পাঠকদের জন্য তূলে ধরা হল, (( আল্লাহ তালাহর অসীম কুদরত! সমকামীদের সমান অধিকার এবং মর্যাদার প্রতি সম্মান জানিয়ে মহান আল্লাহ পাক নিজেই কুদরতি কায়দায় পরিবর্তন করে ফেললেন কাবার রঙ। বলুন আলহামদুলিল্লাহ! সুভানাল্লাহ! অতঃপর তোমরা তার কোন কোন অবদানকে অস্বীকার করবে ?))
আরেক টি স্ট্যাটাসে এর আগে তিনি লিখেন, ((সমকামীদের সমান অধিকারের পক্ষে প্রফাইল ছবি রঙধনুর রঙে রঙিন করায় জনৈক ইসলামপন্থী, নবী মুহাম্মদের অনুসারী, এবং আল্লাহর পথে জিহাদী আমাকে গালি দিয়ে বললো, তুমি কি পারবে নিজের বাবার সাথে যৌন সম্পর্ক করতে? মুমিন মুসলমানের প্রশ্ন শুনে সব সময়ই লা জওয়াব হয়ে যাই! একদম কুপোকাত! তবে এবেলা আমি ঠিক বুঝলাম না, তার এই একই সূত্র মতে, সে স্ট্রেইট হয়ে থাকলে সে নিজের পরিবারের কার সাথে যৌন সম্পর্ক করে! একটি পরামর্শঃ আয়োডিনযুক্ত লবণ খাওয়া মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য খুব জরুরী। অন্তত ঠিক ভাবে গালি দেয়ার জন্য যেটুকু আইকিউ লাগে মুমিন মুসলমানের তা থাকা উচিত। নইলে অন্যকে গালি দিতে গিয়ে কথার মারপ্যাঁচে এমন গিটঠু লাগে যে নিজেই নিজেকেই গালি দেয়ার মত গাধামী করতে হয়।)) উল্লেখ্য, সম্প্রতি অসংখ্য ফেসবুক ইউজার তাদের প্রোফাইল পিকচার রঙধনু’র সাজে সাজিয়েছেন। যারা করেছেন তারা অনেকেই না বুঝেই করেছেন। এই রংধনুর পতাকা মূলত সমকামীদের প্রতীক; যারা সমলিঙ্গে বিয়ে করেন। এলজিবিটি- অর্থাৎ লেসবিয়ান, গে, বাইসেক্সুয়াল ও ট্রান্সজেন্ডারদের গর্বের পতাকা। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার উত্তরাংশের এর উৎপত্তি হলেও এখন তা বিশ্বময় প্রচলিত। আকাশে যে রঙধনু দেখে আমরা আপ্লুত হই এলজিবিটির পতাকা কিন্তু সেই রঙধনু নয়। বেনীআসহকলা নামে সাত রঙের সমাহার যে রঙধনু তা কেবল আকাশেই শোভা পায়। কিন্তু সমকামীদের রঙধনু পতাকার মূল অমিল হচ্ছে এতে সাতটি নয় আটটি রঙ। আর বলা বাহুল্য অষ্টম রঙটি গোলাপী। কাম বা যৌনতারই রঙ এই গোলাপী। যা নেই সৃষ্টিকর্তার অপার মহিমায় সৃষ্ট যে রঙধনুতে। আর সমকামীদের রঙধনুতে নেই আকাশী রঙটিও। সেটিও প্রতিস্থাপিত আকর্ষক বা যাদুবিদ্যার প্রতীক ‘ফিরোজা’ দিয়ে। সমকামীদের পতাকার আট রঙের প্রথমটি বেগুনী যা চেতনার প্রতীক। পরেরটি নীল যা পবিত্রতা ও ভ্রাতৃত্বের প্রতীক, এরপর ফিরোজা যা আকর্ষক, পরের রঙটি সবুজ যা প্রকৃতিকেই নির্দেশ করে, হলুদের ব্যবহার করে সূর্যালোকের প্রতীক তুলে ধরা হয়েছে, কমলা নিরাময় বা উপশমকে নির্দেশ করে। লাল তুলে ধরে জীবনকে আর কড়া গোলাপী কাম ও যৌনতার প্রতীক হয়ে পতাকায় স্থান পায়। আরও একটি গভীর পার্থক্য রঙধনু ধনুকের মতো বাঁকা বলেই ওই নাম পেয়েছে কিন্তু সমকামীদের পতাকা রঙধনু নাম নিলেও প্রতিটি রঙের প্রলেপ আড়াআড়িভাবে বিস্তৃত। তাহলে প্রশ্ন ওঠে যারা ফেসবুকে নিজেদের ছবি রাঙিয়েছেন সমকামিতার রঙে তারা আসলে কি নিজেদের সমকামী বলে ঘোষণা দিচ্ছেন? গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট আমেরিকাতে সমলিঙ্গে বিয়ের অধিকার নিশ্চিত করে রায় দেয়। এরপর সমকামী অধিকারের প্রতি সম্মতি জানিয়ে প্রেসিডেন্টের বাসভবন হোয়াইটহাউসে বিশেষ আলো ফেলে সমকামি পতাকার রঙে সাজানো হয়। আর সমকামীরা তাদের নিজেদের ছবি সমকামী পতাকার রঙের বাহারে সাজিয়ে ফেসবুক টুইটারে পোস্ট দিতে থাকে। তারও আগে গত ২৫শে জুন ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবাগ নিজেকে এই রঙে রাঙিয়ে প্রোফাইল ছবি প্রকাশ করেন আর বিশেষ সফটওয়ার দিয়ে তাতে সবাইকে সমকামীদের রঙধনুর সাজে সাজার আহবান জানান। সেখান থেকেই ভাইরাল হয়ে ওঠে এই ছবি।