বাবা আদম ও বিবি হাওয়া কেনো একজন অন্যজনের প্রতি আকর্ষিত হয়েছিল আমার জানা নাই। তবে কিঞ্চিৎ ধারণা করতে পারি। আধাঘন্টার ভেতরে আমি এই গরুর রচনা শেষ করতে চাই। আধা ঘন্টা পরে ইফতারী। এদেশে রোজার সময় দীর্ঘ। অনেকটা আমার জীবনের সাইজের মাফিক। যাই হোক নারীপুরুষের আকর্ষনের রহস্য আমার জানা নেই। তবে নারী পুরুষের প্রতি আকৃষ্ট হবার কারণ মূলত জৈবিক । একই জৈবিক কারনেই পুরুষ পুরুষের প্রতি আকৃষ্ট হতে পারে। একই জৈবিক কারণে নারী নারীর প্রতি আকৃষ্ট হতে পারে। নারী পুরুষের মিলনে যে সন্তান ভুমিষ্ট হয় সেই সন্তান যদি সব নারী ও পুরুষ ভালবাসতো তাহলে অনেক মা গর্ভপাত ঘটাতেননা আর অনেক বাবা সন্তান ফেলে অন্যত্র যেয়ে সংসার করতেন না। দুনিয়াতে অনেক বাবা আছেন যারা সন্তানকে ভালবাসেন না। দুনিয়াতে অনেক মা আছেন যারা সন্তানকে সহ্য করতে পারেন না। আমি ভাবছি যদি কারু জৈবিক চাহিদা না থাকতো তাহলে “বিয়া” বা “বেশ্যা” কোন ব্যবসাই টিকে থাকতোনা।
মানুষের ক্ষুধা মূলত দুই প্রকারেরঃ পেটের ক্ষুধা আর জৈব ক্ষুধা। এই দুই ক্ষুধা শরীরের খুব কাছাকাছি অনুভূত হয়। পেট ও পেটের নীচে।
পেটের ক্ষুধার জন্য মানুষ খাবার সংগ্রহ করে।
পেটের নীচের জৈবিক ক্ষুধার জন্য মানুষ তার সাথী বেছে নেয়।
সকল প্রানী সাথী বেছে নেয়। মানুষ ব্যতীত সকল প্রানীই এই সাথী বেছে নিতে কিছু নিয়ম মেনে চলে। মানুষ ব্যতীত সকল প্রানীই তাদের জৈব ক্ষুধা ও পেটের ক্ষুধা মেটাতে “সময়” ও “নিয়ম” মেনে চলে।
পেটের ক্ষুধা না থাকলে কাজ করা লাগতোনা
জৈব ক্ষুধা না থাকলে মানুষ বিয়া করতোনা।
দুইটাই না থাকলে দুনিয়ার দরকার ছিলনা।
মানুষের ক্ষুধা অতিরিক্ত। পেট ও পেটের নীচে সর্বক্ষণ আগুন জ্বলে। সেজন্য মানুষ চুরি, ডাকাতি, দুর্নীতি, খুন, ধর্ষন ইত্যাদির সাহায্যে তাদের পেট ও পেটের নীচের ক্ষুধা মেটায়।
বাংলাদেশে মানুষ হত্যা খুব স্বাভাবিক ব্যাপার।
বাংলাদেশে ধর্ষন খুব স্বাভাবিক ব্যাপার।
কিছুদিন আগে মার্কিনযুক্তরাস্ট্রের আদালত পুরুষের সাথে পুরুষের বিয়ে বৈধ হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ মার্কিন যুক্তরাস্টকে প্রভু মনে করলেও এই পুরুষের সাথে পুরুষের বিয়া বা নারীর সাথে নারীর বিয়া মেনে নিতে পারছেনা।
মহা গুনী মহাজন যে পথে করেন গমণ সেই পথ হোক অনুসরনীয়।
বাংলাদেশে অনেক পুরুষ আছে যারা পুরুষের সাথে সম্পর্ক করেন কিন্তু যেহেতু সেটা সামাজিকভাবে স্বীকৃত নয় সেজন্য বাইরে প্রকাশ করেন না।
এখন প্রশ্ন হলো মার্কিন যুক্তরাস্ট্র মানব কল্যানের জন্য কি কোন নীতি প্রনয়ণ করে?
উত্তর হলো – মার্কিন যুক্তরাস্ট্র একটি পুঁজিবাদী দেশ। মার্কিন যুক্তরাস্ট্র যা কিছু করে তা মুনাফার জন্য করে। ব্যবসায়ীরা প্রেম ভালবাসার জন্য ব্যবসা করেনা। ব্যবসায়ীরা মুনাফার জন্য ব্যবসা করে। সমকামীদের বিয়ে স্বীকৃতি দেবার কারণ রাজনৈতিক। সমকামী ভোটারদের ভোটগুলো হারাতে চাননা রাজনীতিবিদেরা। সমকামী ও অসমকামী সবাই এখন এক আইনের আওতায় সম্পর্ক করবে এবং সুখে শান্তিতে বসবাস করবে।
মার্কিন যক্তরাস্ট্রের আদালত যদি ৩০-৪০ বছর আগেই সমকামীদের বিবাহ বৈধ করতো তাহলে মার্কিন যুক্তরাস্টের বিভিন্ন চার্চের প্রিস্টদের দ্বারা বিভিন্ন শিশু ও কিশোরেরা যৌন নিপীড়ন থেকে রক্ষা পেতো। সমকামী বিয়ে বৈধ করার সাথে সাথে চার্চের প্রিস্টদের বিবাহ করার অনুমতি দেওয়া হোক তাহলে এরা শিশু ও কিশোরদের যৌন নিপীড়ন না করে যার যার সাথীর সাথে বৈধভাবে এই নিপীড়ন করবে।
https://en.wikipedia.org/wiki/Catholic_Church_sexual_abuse_cases
মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের মানবাধিকার, বিশ্ব শান্তি, ও মানব কল্যানের কিছু তালিকা নীচে দেওয়া হলোঃ
ভিয়েতনাম যুদ্ধ – ১৯৬১-১৯৭৩ — / লেবাননে গৃহযুদ্ধে অংশগ্রহণ – ১৯৮২-১৯৮৪ /গ্রেনাডা দখল ১৯৮৩ / পানামা দখল ১৯৮৯-১৯৯০ /পারস্য যুদ্ধ ১৯৯০-১৯৯১ /ইরাক নোফ্লাই যোন ১৯৯১-২০০৩
সোমালিয়া গৃহযুদ্ধে অংশগ্রহণ ১৯৯২-১৯৯৫ / হেইতিতে নাকগলানো ১৯৯৪-১৯৯৫ /বজনিয়া যুদ্ধ ১৯৯৪-১৯৯৫ /কোসোভো যুদ্ধ ১৯৯৮-১৯৯৯ /আফগানিস্তানে যুদ্ধ ২০০১- এখন পর্যন্ত / ইরাক যুদ্ধ ২০০৩-২০১১ / পাকিস্তানে যুদ্ধ ২০০৪ – এখন পর্যন্ত / অপারেশণ ওসান সিল্ড ২০০৯ – এখন পর্যন্ত
লিবিয়ান গৃহযুদ্ধ ২০১১ / ইসিলে যুদ্ধ —১০১৪ – এখন পর্যন্ত এই যুদ্ধ চলছে। মার্কিন যুক্তরাস্ট্র ইরাক আক্রমণ করার পরে ইরাকের মার্কিন বিরোধী মুক্তিযুদ্ধকে অন্যদিকে মোড় দেবার জন্য ইরাকে সাম্প্রদায়িক শিয়া-সুন্নি-খ্রীষ্টান যুদ্ধ লাগিয়ে দেওয়া হয় – অন্যদিকে সিরিয়াতে গৃহযুদ্ধ ও লিবিয়াতে গৃহযুদ্ধ – সব গুলো দেশে গৃহযুদ্ধের সূত্রপাত ঘটানো হয়েছে যাতে তেল ও যুদ্ধ জাহাজ ও মারণাস্ত্র তৈরি কোম্পানীগুলো মুনাফা করতে পারে। যেসব দেশে খনিজ সম্পদ আছে সেসব দেশে সাম্প্রদায়িকতা ও গণতন্ত্রের নামে যুদ্ধ ও গৃহযুদ্ধ লাগিয়ে দিয়ে ব্যাপক হারে মানবাধিকার লংঘণ করা হয়।
২০০৩-২০১১ ইরাক যুদ্ধে মৃতের সংখ্যা গননা করার জন্য নীচের সাইটের রিপোর্ট পড়া যেতে পারে।
https://en.wikipedia.org/wiki/Iraq_Body_Count_project
২০০১ সাল থেকে আমেরিকান সৈন্যেরা পাকিস্তানে অবস্থান করছে। পাকিস্তানে কয়লা আছে আনুমানিক ১৭৫ বিলিয়ণ ম্যাট্রিক টন, ক্রুড তেল রিজার্ভ আছে ৮৮৫ বিলিয়ণ কিউবিক মিটার, গ্যাস থাকবে বিশ বছর ধরে, পাকিস্তানে পাওয়া গেছে ব্যাপক পরিমানে সোনা, কপার, জিপ্সাম, লাইমস্টোন, লোহা, রুপা, দামী পাথর, মারবেল, সালফার, সিলিকা বালু ইত্যাদি। সেজন্যই মার্কিন যুক্তরাস্ট্র পাকিস্তানে অবস্থান করছে।৯/১১ এর পর থেকে আফগানিস্তান ও ইরাকের পরেই পাকিস্তানী নাগরিকেরা সব চাইতে বেশী নিগৃহীত হয়েছে মার্কিন সৈন্যদের হাতে।
উপরে উল্লেখিত সবগুলো দেশে ব্যাপকভাবে মানবাধিকার লংঘণ করা হয়েছে মার্কিন সৈন্যদের দ্বারা।
সমকামীদের বিয়ে বৈধ হিসাবে মেনে নিক বা না নিক তাতে বাংলাদেশের মানুষের জীবনে কোণ প্রভাব বিস্তার করার কথা নয়। তবে বাংলাদেশে যারা সম্পদশালী মানুষ তারা মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের পুঁজিবাদী ফ্যাশনে জীবণ যাপণ করার চেস্টা করে। বাংলাদেশে যারা মধ্যবিত্ত তারা সবাই বাংলাদেশের সম্পদশালী মানুষের চাটুকার হিসাবে মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের চলাবলাউঠাবসা অনুসরণ করে। বাংলাদেশের সম্পদশালী মানুষ বলতে বুঝায় যারা বাংলাদেশের মানুষের মৌলিক অধিকারকে ছিনিয়ে নিয়ে নিজেদের হাতে মুষ্টিবদ্ধ করে রেখেছে। বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত বলতে বুঝায় যারা সম্পদশালী হবার স্বপ্নে বিভোর এবং উপরে উঠার জন্য ক্রমাগত বিভিন্ন সিড়ি দিয়ে উপরে উঠার চেস্টা করছে । এইসব সিঁড়িগুলোর নাম দুর্নীতি, ঘুষ, চুরি, মিথ্যাচার, প্রতারণা – সাইড ডিস – হত্যা ও ধর্ষণ।
প্রভু মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের সাথে একাত্বতা ঘোষনা করে বাংলাদেশের সমকামীদের জন্য বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে সদস্য কোটার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। মুক্তিযোদ্ধা সনদ দেখানো লাগবেনা । সমকামী হলেই স্কুলে চাকুরীর কোটা পাওয়া যাবে। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে সমকামী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা যেতে পারে। প্রভুর সেবাতে প্রভুকে খুশী করার জন্য এই ধরনের অনেক কিছু করা যেতে পারে।
সমকামী কোণ অসুস্থতা নয়। একজন পুরুষ যখন একজন পুরুষের প্রতি আকর্ষণ অনুভব করে তখন সেই পুরুষদেরকে সমকামী বলে। অন্যদিকে একজন নারী যখন অন্য একজন নারীর প্রতি আকর্ষণ বোধ করে তখন সেই নারীদের সমকামী বলে। বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণবোধ করাটা সবাই স্বাভাবিক বলে মনে করে আর একই লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণবোধ করাকে অনেকেই অস্বাভাবিক বলে মনে করে।
পথে ঘাটে লাশ পড়ে থাকলে আমি সেটা অস্বাভাবিক বলে মনে করি।
যেকোন প্রতিবাদ মিছিলে গুলি চলে, মেয়েদের কাপড় টেনে ছিড়ে ফেলে পুলিশ, চুলের মুঠি ধরে লাথি মারে, যৌন হয়রানী করে – এইসব কিছুই আমি অস্বাভাবিক বলে মনে করি।
রাস্তায় ধর্ষিতা মেয়ের লাশ পাওয়া গেলে আমি সেটা অস্বাভাবিক বলে মনে করি।
নদীতে লাশ ভেসে থাকলে আমি সেটা অস্বাভাবিক বলে মনে করি।
দেশের কোন ভোট কেন্দ্রে কোন ভোটার নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও যদি একটি বিশেষ দলের প্রার্থীরা নিজেদের নির্বাচিত ঘোষনা করে আমি সেটাকে অস্বাভাবিক বলে মনে করি।
মহানবী হজরত মোহাম্মদ সাঃ কে ব্যঙ্গ করে কার্টুন ও ব্লগ করাকে আমি অস্বাভাবিক বলে মনে করি। সেইসব ব্লগারদের প্রসংশা করে যারা ফেসবুকে স্টাটাস দেয় আমি তাদের অস্বাভাবিক বলে মনে করি। সেইসব ব্লগারদের নোঙরা কাজের প্রতিবাদে আলেমসমাবেশে গুলি ও পিটিয়ে হত্যাকে আমি অস্বাভাবিক বলে মনে করি। বাংলাদেশের বিডিয়ার হত্যাকে আমি অস্বাভাবিক বলে মনে করি। বাংলাদেশ শাপলা চত্বর গনহত্যাকে আমি অস্বাভাবিক বলে মনে করি। বাংলাদেশে জেলে পচছে হাজার হাজার নিরীহ মানুষের বিরুদ্ধে হাজার হাজার ভুয়া মামলাকে আমি অস্বাভাবিক বলে মনে করি। নাগরিকদের ঘরে পুলিশ ঢুকে স্ত্রীর সামনে স্বামীকে হত্যা বা মায়ের সামনে ছেলেকে হত্যা আমি অস্বাভাবিক বলে মনে করি।
বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকাতে বাংলাদেশের সম্পদশালী চোর ও দুর্নীতিবাজদের অপচয়ের ফসল হিসাবে ফেলে দেওয়া পাহাড় সমান গার্বেজে বসে বাংলাদেশের অনেক নাগরিক আহার সংগ্রহ করেন –গার্বেজ থেকে খাবার খাওয়াকে আমি অস্বাভাবিক বলে মনে করি।
বাংলাদেশে অনেক অনেক অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটছে প্রতিদিন।
আমি মনে করি বাংলাদেশের মানুষেরা এইসব অস্বাভাবিক ঘটনাগুলোকে স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করেছে বলেই এইসব ঘটনা বারে বারে ঘটছে এবং এইসব ঘটনা ঘটা একটা স্বাভাবিক নিয়ম হয়ে গেছে। এত অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটার পরেও যখন বাংলাদেশের মানুষ স্বাভাবিক থাকতে পারে তখন মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের সমকামী বিয়ের বৈধতা ও স্বীকৃতিকে সহজভাবে নেবে বলেই আমার বিশ্বাস। প্রভুর সব আচরণই সহণীয়, অনুসরনীয়, ও পূজনীয়।
মার্কিন অর্থায়ন ও সমর্থনে ইসরায়েলী বোমাতে পালেস্টাইনের শিশু হত্যা বেশী স্বাভাবিক ? নাকি সমকামীদের বিয়েকে বৈধ হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া বেশী স্বাভাবিক ?
পুঁজিবাদী রাস্ট্রগুলো ও যেকোন দেশের সম্পদশালী শোষক সমাজ ও তাদের পদলেহনকারীরা যা কিছু করে সবই স্বাভাবিক।