ইন্ডিয়ার জয় সিরিজ বাংলাদেশের

ঢাকা: তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে ৭৭ রানে হারিয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর সান্ত্বনা নিয়ে মাঠ ছেড়েছে ধোনির ভারত। সিরিজের প্রথম দুটি ম্যাচে জয়লাভ করায় এদিন হেরেও সিরিজ মাশরাফিদের দখলেই থাকলো। ভারতের করা ৩১৭ রানের জবাবে বাংলাদেশ ২৪০ রানে গুটিয়ে গিয়ে ৭৭ রানের পরাজয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে।

বাংলাদেশের হয়ে সাব্বির রহমান ৪৩, সৌম্য সরকার ৪০, লিটন দাস ৩৪ ও নাসির হোসেন করেন ৩২ রান। এছাড়া মুশফিক ২৪ ও সাকিব করেন ২০ রান।

ভারতের হয়ে সুরেশ রায়না ৩টি এবং কুলকর্নি ও অশ্বিন ২টি করে উইকেট লাভ করেন।

দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার বাংলাদেশকে দারুণ সূচনা এনে দেয়ার লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নামেন। ৩১৭ রান তাড়া করে ধোনিদের হারাতে পারলে মাশরাফিরা নিশ্চিত ক্রিকেটবিশ্বে আরো উঁচু অবস্থানে যেতে পারতেন। তবে দ্বিতীয় ওভারেই তামিমকে হারিয়ে ধাক্কা খায় টাইগার শিবির।

soumya-2

ধাওয়াল কুলকর্নির করা দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন তামিম ইকবাল। আম্পায়াররা অবশ্য ‘নো’ বল হয়েছে কী-না সেটি পরীক্ষা করে দেখেন। যদিও এই যাত্রায় রক্ষা হয়নি তামিমের।

শুরুতেই তামিমকে হারিয়ে থমকে যায়নি বাংলাদেশের ইনিংস। বরং দ্বিতীয় উইকেটে লিটন দাসকে নিয়ে ভারতীয় শিবিরে পাল্টা আঘাত হানেন সৌম্য সরকার। একের পর এক বাউন্ডারিতে ধোনির কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলে দেন এই তরুণ উদীয়মান ক্রিকেটার। তবে দশম ওভারে সৌম্যকে আউট করে ভারতকে ম্যাচে ফেরান কুলকর্নি।

কুলকর্নির করা দশম ওভারে দ্বিতীয় বলে ‘স্লোয়ারে’ বিভ্রান্ত হয়ে মিড-অনে ক্যাচ তুলে দেন সৌম্য সরকার। সহজ ক্যাচ তুলে নিতে কষ্ট হয়নি অশ্বিনের। ৩৪ বলে ৫টি চার ও ২টি ছক্কার সাহায্যে ৪০ রান করেন তিনি।

৬২ রানে দ্বিতীয় উইকেটের পতনের পর তৃতীয় উইকেটে মুশফিক ও লিটন দাস প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। এই দুজনের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ১৫.২ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ১০০ পেরিয়ে যায়। তবে এরপর ছন্দপতন ঘটে মুশফিকের। রায়নার করা ১৯তম ওভারের শেষ বলে কাট করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ধোনিকে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন মুশফিক (২৪)।

dhawal

একটু পর অক্ষর প্যাটেলের বলে লিটন দাস আউট হয়ে সাজঘরে ফিরলে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে টাইগাররা। চার ওভারের ব্যবধানে সাকিব আউট হলে সেই বিপদ আরো ঘনীভূত হয়। রায়নার বলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে লং অনেক কুলকর্নিকে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন এই টাইগার অলরাউন্ডার। এরপর নাসির ও সাব্বির মিলে ৪৯ রানের জুটি গড়ে দলকে প্রাথমিক বিপদ থেকে উদ্ধার করেন।

১৪৮ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর নাসির ও সাব্বির মিলে দুর্দান্ত এক প্রতিরোধ গড়েছিলেন। তবে স্টুয়ার্ট বিনির স্লোয়ার অফ-কাটারে বিভ্রান্ত হয়ে বোল্ড হয়ে সাব্বির সাজঘরে ফিরলে ফের চাপের মুখে পড়ে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। এরপর ক্রিজে আসা মাশরাফি অশ্বিনকে ডাউন দ্য ট্র্যাকে এসে তুলে মারতে গিয়ে বোল্ড হয়ে ০ রানে সাজঘরে ফিরলে বাংলাদেশের জয়ের স্বপ্ন ফিকে হতে শুরু করে। একটু পর নাসিরের বিদায়ে পরাজয় ক্ষণ গুনা শুরু করে দেয় স্বাগতিকরা।

একের পর এক উইকেটের পতনের ফলে জয়ের পথ ধীরে ধীরে সঙ্কুচিত হতে থাকে, আস্কিং রান রেটও বাড়তে থাকে যেটার সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসেন নাসির, মুশফিক ও সাব্বিররা। ফলে ২৪০ রানে গুটিয়ে গিয়ে ৭৭ রানের পরাজয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে টাইগাররা।

এর আগে শেখর ধাওয়ানের ৭৭ ও ধোনির ৬৯ রানের ইনিংসের ওপর ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ৩১৭ রান সংগ্রহ করে ভারত। এছাড়া রাইয়ুডু ৪৪ ও রায়না ২১ বলে ৩৮ রান করেন।

বাংলাদেশের সফল বোলার মাশরাফি বিন মুর্তজা। তবে দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট লাভ করলেও ১০ ওভারে ৭৬ রান দেন তিনি। মুস্তাফিজ ৫৭ রানের বিনিময়ে নেন ২ উইকেট।

প্রসঙ্গত, তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুটিতে জিতে আগেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করে ফেলেছে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। সেই সঙ্গে ২০১৭ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও খেলা নিশ্চিত হয়েছে লাল সবুজের জার্সিধারীদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *