নেতৃত্বই ছেড়ে দিচ্ছেন ধোনি!

ঢাকা: তাহলে কি বাংলাদেশে এসেই শেষ হতে চলল এক সময়ের প্রবল পরাক্রমশালী অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি অধ্যায়! ভারতীয় দলকে কি দেন নাই ক্যারিয়ারে। টি২০ বিশ্বকাপ থেকে শুরু করে ওয়ানডে বিশ্বকাপ, চ্যাম্পিন্স ট্রফি, এশিয়া কাপ, ওয়ানডে এবং টেস্ট র‌্যাংকিংয়ে শীর্ষ স্থান।

কিন্তু ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে এসে ঠিকই মুদ্রার উল্টো পিঠ দেখতে শুরু করলেন। এমনই এক দলের বিপক্ষে- যাদেরকে এখনও ‘মিনোজ’ বলতে তাদের কারও কারও দ্বিধা করে না। সেই বাংলাদেশের কাছেই টানা দুই ম্যাচ হেরে প্রথমবারেরমত সিরিজ খোয়াতে হলো।

লজ্জা আর অপমানে মাথা যেন হেঁট হয়ে গেলো ধোনির। এ কারণেই দ্বিতীয় ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে এসে বললেন, ‘সরিয়ে দিন আমাকে। ভারতের ক্রিকেটের যদি তাতে ভাগ্য ফেরে তাহলে তো ভালই। ক্রিকেট জীবনটা বেশ উপভোগ করেছি। কিন্তু আমার কাছে দেশের চিন্তাই বড়। দেশের ভালো হলে আমি সরে যেতেও রাজি।’

এক ম্যাচ বাকি থাকতেই বাংলাদেশের কাছে সিরিজ হারল মহেন্দ্র সিং ধোনির ভারত৷ স্বাভাবিকভাবেই প্রবল চাপে অধিনায়ক৷ ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে এসে যেমন প্রশংসায় ভাসালেন বাংলাদেশকে, তেমননি আত্মসমালোচানও করলেন তিনি৷ ধোনি বললেন, ‘ওরা আমাদের সব বিভাগেই হারিয়ে দিয়েছে। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং, সবকিছুতেই বাংলাদেশ টেক্কা দিয়েছে আমাদের।’

দলীয় শক্তি থেকে শুরু করে ধোনির দল খাতায়-কলমে সবকিছুতেই এগিয়ে ছিল বাংলাদেশের সামনে৷ সিরিজ শুরুর আগে পর্যন্ত ফেভারিট। সেই ভারতের বিপক্ষেই কিনা সিরিজের তৃতীয় ম্যাচটাকে স্রেফ নিয়মরক্ষার বানিয়ে ফেলল মাশরাফির দল।

সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নবাণে জর্জরিত ‘ক্যাপ্টেন কুল’৷ স্বভাবতই প্রশ্ন উঠে গেল ধোনির ক্যারিয়ারে এটাই সবচেয়ে বড় হার কি না? ভারত অধিনায়কের জবাব, ‘এটা নয়, ২০০৭ বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়াটাই সবচেয়ে বড় ধাক্কা ছিল। ওটা এখনও ভুলতে পারি না।’

তবে এই সিরিজে হারের জন্য যাবতীয় ব্যর্থতার দায় নিজের কাঁধে তুলে নিলেন ভারত অধিনায়ক৷ প্রশ্ন উঠল, সিরিজ হারের জন্য কোচিং স্টাফদের চাকরি চলে যেতে পারে কি না? ধোনি দাঁড়ালেন ঢাল হয়ে, বললেন, ‘একটা সিরিজ হার মানেই তো পৃথিবী শেষ নয়। এই কোচিং স্টাফদের অধীনেই আমরা অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজে, বিশ্বকাপে ভালো করেছি।’ তবে কোচ রবি শাস্ত্রীকে নিয়ে তিনি একেবারেই খুশি নন সেটা ধোনির বক্তব্যে স্পষ্ট৷ কোচ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জায়গা ফাঁকা বলে যাকে-তাকে বসালেই তো আর হবে না, সঠিক সময়ে সঠিক লোককেই চাই৷’

ফের প্রশ্ন উঠল, নেতৃত্বে কি পরিবর্তন আসা উচিত? টেস্টের মতো ওয়ানডে অধিনায়কত্বও কি ছেড়ে দেওয়া উচিত ধোনির? শেষ পর্যন্ত হারের দায়টা নিজের কাঁধে তুলে নিয়ে উত্তরটা দিলেন হাসিমুখেই৷ বললেন, ‘আমি জানি সংবাদমাধ্যম আমাকে পছন্দ করে। সবকিছু শেষ পর্যন্ত আমার ওপরই এসে পড়ে। দেখুন, যদি সবাই ভাবে যে আমাকে বদলালে ভারতীয় ক্রিকেটের ভালো হবে তাহলে আমি সানন্দে সেটা মানতে রাজি। আমি তো ইচ্ছে করে দায়িত্ব নিইনি। আমাকে সেটা দেওয়া হয়েছিল। এখন যদি মনে হয় আমি সরে গেলে ভারতীয় ক্রিকেটের ভালো হবে, তাহলে সেটাই হবে। কারণ, নেতৃত্ব নয় আমার কাছে দেশের হয়ে খেলাটাই বড়। দলের সাধারণ সদস্য হিসেবে খেলতে আমার কোনও অসুবিধা নেই৷’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *