দলীয় অপরাধীদের লাগাম টানবে আওয়ামী লীগ

এবার দলীয় অপরাধীদের লাগাম টানবে আওয়ামী লীগ। দখলবাজি, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি ও সিন্ডিকেটে জড়ালে আইনি ব্যবস্থাই শুধু নয়, দলীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। পদ-পদবি হারাবেন নেতারা। যত বড় নেতাই হোন অপরাধ করলে কোনো ক্ষমা নেই। দলের নীতিনির্ধারক ফোরামের একাধিক নেতা এ তথ্য দিয়েছেন। দলের হাইকমান্ড চান দেশে শান্তি-সুস্থিতি বজায় রেখে ভিশন ২০২১ ও ২০৪১-এর বাস্তবায়ন। কিন্তু ভিশন বাস্তবায়নে নিজ দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে খুনোখুনি, নানা অপকর্মই প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাধা দূর করতে ওই সব দুষ্টজনকে চিহ্নিত করে ছেঁটে ফেলা হবে। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অপরাধীদের প্রতি কঠোর হওয়ার জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে নির্দেশ দিয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে ফেনীতে অস্ত্রসহ যুবলীগ-ছাত্রলীগের ২৬ ক্যাডারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঢাকায় গুলি করে মানুষ হত্যার দায়ে আওয়ামী লীগের এমপি পিনু খানের ছেলেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসা আওয়ামী লীগে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে খুনের ঘটনা দলকে ভাবিয়ে তুলেছে। দুই মেয়াদে নিজ দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে প্রায় দুই শতাধিক নেতা-কর্মী নিহত হয়েছেন। রাজধানী থেকে শুরু করে উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত চলছে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে দখলবাজি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি। এমপি-মন্ত্রীরা গড়ে তুলেছেন নিজস্ব চক্র। স্থানীয় প্রশাসন ব্যবস্থা নিতে পারে না নানা কারণে। অপরাধীদের কেউ কেউ স্থানীয় এমপি ও প্রভাবশালী নেতাদের আস্থাভাজন হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যবস্থা নিতে পারছে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের এক সাংগঠনিক সম্পাদক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, শুধু উন্নয়ন দিয়ে সরকারের জনপ্রিয়তা ধরে রাখা যায় না। বর্তমান সরকার দুই মেয়াদের সাড়ে সাত বছরে দৃশ্যমান যেসব উন্নয়ন করেছে তা ম্লান করে দেয় দলের কিছু নেতা-কর্মীর বিতর্কিত কর্মকাণ্ড। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী চান আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে। এতে যে ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার তাই-ই নেবেন। দলীয় নেতা, এমপি, মন্ত্রী যার বিরুদ্ধেই দখলবাজি, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি ও সিন্ডিকেশনের অভিযোগ প্রমাণিত হবে তার বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হবে। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ বলেন, সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় এমন কর্মকাণ্ড করলে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। ব্যক্তির দায় দল ও সরকার নেবে না। সাংগঠনিক ব্যবস্থার পাশাপাশি আইনের মুখোমুখি হতে হবে। দলের আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘যত দিন এ সরকার ক্ষমতায় আছে, তত দিন অপকর্ম করে কোনো ছাড় পাওয়া যাবে না। সে যে দলেরই হোক। আমাদের দলেরও কেউ অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হলে শাস্তি তাকে পেতেই হবে। সুশাসন নিশ্চিত করতে যা যা করা দরকার সরকার ও দল তাই-ই করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *