ঢাকা: এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে দু’জনকে হত্যা মামলায় বখতিয়ার আলম রনির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। রনি মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি পিনু খানের ছেলে।
মঙ্গলবার (১৬ জুন) সকালে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্টেট আমিনুল হক জামিন আবেদন শুনানি শেষে তা নাকচ করে দেন।
১৩ জুন রনিকে চারদিনের রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে তার জামিনের জন্য করা আবেদন শুনানির জন্য মঙ্গলবার দিন ধার্য করেছিলেন।
গত ১৩ এপ্রিল রাত পৌনে ২টার দিকে রাজধানীর নিউ ইস্কাটনে রনি ও তার সহযোগীরা একটি সাদা মাইক্রোবাস থেকে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়লে দৈনিক জনকণ্ঠের অটোরিকশাচালক ইয়াকুব আলী ও রিকশাচালক আবদুল হাকিম নিহত হন বলে মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে। নিহত হাকিমের মা মনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে ১৫ এপ্রিল রাতে অজ্ঞাত আসামিদের নামে রমনা থানায় একটি মামলা করেন।
মামলাটি প্রথমে থানা পুলিশ তদন্ত করলেও গত ২৪ মে তদন্তভার মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে স্থানান্তর করা হয়। প্রযুক্তির সহায়তা ও অন্যান্য সোর্সের মাধ্যমে রনির ব্যবহৃত গাড়িটি শনাক্ত করা হয়। গত ৩১ মে মাইক্রোবাসটির চালক ইমরান ফকিরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইমরান ফকির পুরো ঘটনার বর্ণনা দিলে রনিকে একই দিন ধানমন্ডি এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
গত ১ জুন দু’জনকে আদালতে পাঠানো হলে ইমরান ফকির ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তবে রনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে অস্বীকার করলে রিমান্ড আবেদন করে ডিবি পুলিশ।
আদালত চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করলে রিমান্ডে নেওয়া হয় তাকে। কিন্তু রিমান্ডে এমপিপুত্র রনি অসুস্থ হলে তাকে রাজারবাগ পুলিশলাইন্স হাসপাতাল, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। চিকিৎসা শেষে মঙ্গলবার (৯ জুন) থেকে তাকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (দক্ষিণ) উপ-কমিশনার মাশরুকুর রহমান খালেদ ও তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির উপ-পরিদর্শক দীপক কুমার জানান, রিমান্ডে গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের কাছে তার লাইসেন্স করা পিস্তল দিয়ে গুলির কথা স্বীকার করেছেন এমপিপুত্র রনি।
তিনি বলেছেন, ওইদিন মধ্যরাতে রাস্তায় যানজট থাকায় বিরক্ত হয়ে কোমর থেকে পিস্তল বের করেন তিনি। মদ্যপ থাকায় নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি। রাস্তায় এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়েন। মুহূর্তেই রাস্তা ফাঁকা হয়ে যায়। গাড়ি নিয়ে চলে যান তিনি। নিজে জানতেনও না তার ছোড়া গুলিতেই দু’জন মারা গেছেন।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঘটনার সময় রনির সঙ্গে গাড়িতে আরও তিন বন্ধু ছিলেন। ওই তিন বন্ধুকেও শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের আটকের জন্য পুলিশ খুঁজছে। পুলিশ বলছে, ওই তিন বন্ধুকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারলে পুরো ঘটনাটি আরও পরিষ্কার হবে।