চারদিন ব্যাপী বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশের প্রথম দিনে লন্ডনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হোটেল স্যুটের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে যুক্তরাজ্য বিএনপি।
শুক্রবার (১২ জুন) সেন্ট্রাল লন্ডনের অজিভাত এলাকা পার্কলেনের হিলটন হোটেলের সামনে দুপুর ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত যুক্তরাজ্য বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের সহস্রাধিক নেতাকর্মী অবস্থান করে।
এয়ারপোর্ট হতে হোটেলে এসে পিছনের দরজা দিয়া প্রবেশের সময় সেখানে অবস্থানরত শতাধিক নেতাকর্মী হাসিনার গাড়ি বহরে ডিম, জুতা নিক্কেপ করেছে।
হোটেল স্যুটের সামনে নানা দাবি সম্বলিত ব্যানার, প্ল্যাকার্ড নিয়ে ও মাথায় কালো কাপড় বেঁধে বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, তরুণ দল ও মহিলা দলের নেতাকর্মীরা শেখ হাসিনার লন্ডন সফরের প্রতিবাদ জানায়। এ সময় নেতাকর্মীরা ডাউন ডাউন শেখ হাসিনা, শেইম শেইম শেখ হাসিনা, হাসিনা মাস্ট গো, কিলার হাসিনা গো এ ওয়ে, ইত্যাদি নানা দাবি সম্বলিত ব্যানার নিয়ে জ্বালোরে জ্বালো আগুন জ্বালো, একশান একশান ডাইরেক্ট একশন ইত্যাদি নানা শ্লোগান দেয়।
যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব এম এ মালেক ও সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তারা বিরোধী দল ও মতের নেতাকর্মীদের ওপর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী শেখ হাসিনার বিভিন্ন বাহিনীর নির্যাতন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের তীব্র নিন্দা জানান।
সমাবেশে যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব এম এ মালেক বলেন, ৫ জানুয়ারীর অবৈধ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে গণতন্ত্রের কবর রচনা করেছেন। ভোটারবিহীন এ নির্বাচনে জনগণের আশা আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটেনি। বৃটেন, আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে এই নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। তাই গণতন্ত্রের সুতিকাগার ব্রিটেনের মাটিতে আমরা অবৈধ প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে পারি না। শেখ হাসিনা ব্রিটেনের যেখানেই যাবেন সেখানেই তাকে প্রতিহত করা হবে।
শেখ হাসিনাকে জালিম সরকার আখ্যা দিয়ে এম এ মালেক বলেন, ক্ষমতা দখলের পর থেকে এই ফ্যাসিষ্ট সরকার বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হত্যা, গুম ও নির্যাতনের যে স্টীম রোলার চালাচ্ছেন তা ১৯৭১ সালের পাক বাহিনীর বর্বরতাকেও হার মানায়। অত্যাচার ও নির্যাতন চালিয়ে কোন সরকারই টিকে থাকতে পারেনি আর শেখ হাসিনাও পারবেন না। বাংলাদেশের জনগণ তাকে টেনে হিঁচড়ে ক্ষমতা থেকে নামাবে।
সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমদ বলেন, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসে বাংলাদেশের মানুষ আজ দিশেহারা। গুম, খুন আর বিচার বর্হিভূত হত্যাকান্ড যেন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। মানুষের স্বাভাবিক মৃত্যুর কোন গ্যারান্টি নেই। শেখ হাসিনার সরকার মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে মানুষের ওপর জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসে আছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও গণতান্ত্রিক চেতনাবিরোধী শেখ হাসিনার হাতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব মোটেও নিরাপদ নয়। তাই গণতান্ত্রিক মূল্যবোধবিরোধী শেখ হাসিনাকে গণতন্ত্রের সুতিকাগার ব্রিটেনে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ স্বাগত জানাতে পারে না। শেখ হাসিনা যেখানেই যাবেন তাকে সেখানেই প্রতিহত করা হবে।
৫ জানুয়ারীর একটি ভোটারবিহীন প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে শেখ হাসিনা ক্ষমতা দখল করেছেন যা বৃটেন, আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। তিনি অবৈধ প্রধানমন্ত্রী।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহিদুর রহমান, যুক্তরাজ্য বিএনপির প্রধান উপদেষ্টা শায়েস্তা চৌধুরী কুদ্দুছ, মুফতি শাহ সদরুদ্দিন, ব্যারিষ্টার এম এ সালাম, ব্যারিষ্টার নজরুল ইসলাম, যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুল হামিদ চৌধূরী, সাবেক সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ, তৈমুছ আলী, আখতার হোসেন, মুজিবুর রহমান মুজিব, শাহ আখতার হোসেন টুটল, তাজুল ইসলাম, মুজিবুর রহমান মুজিব, গোলাম রাব্বানী, আনোয়ার হোসেন খোকন, নাসিম আহমেদ চৌধুরী, প্রফেসর ফরিদ উদ্দিন, শহীদুল ইসলাম মামুন, এডভোকেট তাহির রায়হান চৌধুরী পাবেল, তাজ উদ্দিন, শামসুর রহমান মাতাব, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জসিম উদ্দিন সেলিম, সহসাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট খলিলুর রহমান, যুবদলের আহ্বায়ক দেওয়ান মোকাদ্দেম হোসেন চৌধুরী নিয়াজ, সদস্য কামাল আহমেদ, রহিম উদ্দিন, আইনজীবী ফোরাম যুক্তরাজ্য আহ্বায়ক ব্যারিস্টার তারিক বিন আজিজ, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট বিপ্লব পোদ্দার, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক নাসির আহমেদ শাহীন, সদস্য সচিব আব্দুল হোসেন, সদস্য আবুল হাসনাত রিপন, জাসাস সভাপতি এম,এ সালাম, সেক্রেটারি ইকবাল হুসাইন প্রমুখ.
নাসিম/প্রবাসনিউজ২৪.কম