মঞ্চে ঘুমিয়ে, ধূমপান করে, সাংবাদিকদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বারবার আলোচিত সমালোচিত হয়েছেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী। এবার তার মন্ত্রণালয়ের অধিনস্থ সমাজকল্যাণ পরিষদের সভাপতির আসনে বসে ধূমপান করলেন।
মঙ্গলবার বেলা ১১টায় রাজধানীর ইস্কাটনে জাতীয় সমাজ কল্যাণ পরিষদের ৩৯তম সভায় এ কাণ্ড করেন মহসিন।
দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর মন্ত্রী শিগগিরই আসবেন এমন কথা বলে দুপুর সাড়ে ১২টায় সভার কাজ শুরু করেন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী। অবশেষে ১২টা ৪০ মিনিটে মন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী এসে সভাপতির আসন গ্রহণ করেন।
বৈঠক শুরু পর দুই এক মিনিট কথা বলেই উপস্থিত সবার উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, ‘স্মোক ছাড়া আমার কাজ করতে অসুবিধা হয়, আপনারা কি স্মোক করার অনুমতি দিবেন? যদি অনুমতি দিতেন তাহলে স্মোক করতাম।’
এটুকু বলে কারো অনুমতির অপেক্ষা না করেই পকেট থেকে সিগারেট বের করে জ্বালিয়ে ভুস করে ধোঁয়া ছাড়লেন সভাপতির আসনে বসা মন্ত্রী।
এসময় বৈঠকে উপস্থিত সমাজ কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট প্রমোদ মানকিন, মন্ত্রণালয়ের সচিব তারিকুল ইসলাম এবং যুগ্মসচিব বেগম নাসরিন আরা সুরত আমিন বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে উসখুস করতে থাকেন।
তবে মন্ত্রী এসব উপেক্ষা করে বলতে শুরু করলেন, ‘গরিব ও প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা ডায়াবেটিস হাসপাতাল করতে যাচ্ছি। কারণ রিকশাওয়ালা কিংবা কোনো গরিব অসহায় লোকদের যদি ডায়াবেটিস হয়, তারা জেনারেল হাসপাতালগুলোতে গিয়ে ভালো সেবা পায় না। খরচও অনেক পড়ে যায়। তাই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এ ব্যাপারে আলোচনা করা হয়েছে। তিনি এই হাসপাতাল তৈরির কাজ খুব শিগগিরই হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন’ গরিব মানুষদের জন্য ইনসুরেন্সের ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী।
এভাবে অস্বস্তির মধ্য দিয়েই একটি জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আয়োজিত বৈঠক শেষ হয়।
প্রসঙ্গত, এর আগে মন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী গত বছরের ২৭ জানুয়ারি সিলেট বর্ডার গার্ড পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের-২০১৩ সালে জেএসসি ও পিএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের মঞ্চে বসে ধীমপান করেন। এটি নিয়ে সারা দেশে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা হয়। এছাড়া একই বছরের ২৩ জুলাই রাজধানীর সমাজসেবা অধিদপ্তরের এক অনুষ্ঠানের প্রায় পুরো সময় ঘুমিয়ে কাটান তিনি। সে ছবি গণমাধ্যমেও ফলাও করে প্রকাশ করা হয়।
এছাড়া গত ৯ আগস্ট সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে আদিবাসী দিবস উদযাপন উপলক্ষে এক আলোচনায় সাংবাদিকদের ‘খবিশ ও চরিত্রহীন’ বলেন এই মন্ত্রী। যা নিয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকেও আলোচনা হয়। এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মহসিন আলীকে এ ব্যাপারে সতর্ক করে দেন। পরে অবশ্য মন্ত্রী ও মন্ত্রীর এপিএস দুঃখ প্রকাশ করেন।
সুত্র-বাংলামেইল