বি. চৌধুরী বিএনপিতেই যাক বিকল্পধারার নেতারা তাই চান

দলীয় রাজনীতির বৃত্তে আটকে থাকতে চান না বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। তবে দলের নেতাকর্মীরা বি. চৌধুরীকে বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ আন্দোলনে দেখতে চান।

‘রাজনীতি ছাড়তে পারেন বি. চৌধুরী’— পরিবার ও দলের একাধিক সদস্য এমন আভাস দিলেও দলের সক্রিয় নেতারা বর্তমান অগণতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে গণআন্দোলনে যাওয়ার জন্য বি. চৌধুরীকে রাজপথে নামার অনুরোধ জানান। এমনকি তারা বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ আন্দোলনেও দেখতে চান ৮৪ বছর বয়সী এই প্রবীণ রাজনীতিককে।

বাড্ডার কুড়িলে বিকল্পধারা বাংলাদেশ কার্যালয়ে রবিবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত অনুষ্ঠিত বর্ধিত সভায় এ সব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে। এ ছাড়া বৈঠক থেকে দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন এবং রমজানে সকল দলের নেতাদের নিয়ে একটি ইফতার পার্টি করারও সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট বি. চৌধুরীর সভাপতিত্বে বর্ধিত সভায় উপস্থিত ছিলেন— দলের মহাসচিব মেজর (অব.) মান্নান, সহ-সভাপতি এ্যাডভোকেট শাহ আহম্মদ বাদল, মুহসীন চৌধুরী, ঢাকা উত্তরের সভাপতি মাহবুব আলী, দক্ষিণের সভাপতি সাহিদুর রহমান, দফতর সম্পাদক স্থপতি মাহফুজুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ সম্পাদক আজিজ আকন্দ, স্বেচ্ছাসেবক ধারার সভাপতি বি এম নিজামসহ দলটির শতাধিক নেতাকর্মী।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বর্ধিত সভায় প্রায় ২৫ থেকে ২৬ নেতা বক্তব্য রাখেন। অধিকাংশ বক্তাই বি. চৌধুরীকে জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকীর সভায় বক্তব্য রাখার জন্য অভিনন্দন জানান। বক্তারা বিএনপির এ দুঃসময়ে খালেদা জিয়ার পাশে থাকার জন্য বি. চৌধুরীকে অনুরোধ জানান।

এ ছাড়া বিকল্পধারার নেতারা বি. চৌধুরীকে বর্তমান অগণতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে গণআন্দোলনে যাওয়ার জন্য রাজপথে নামারও অনুরোধ জানান।

প্রসঙ্গত, বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট বি. চৌধুরী বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব ছিলেন। ২০০৪ সালের ৮ মে বিএনপি থেকে বেরিয়ে বিকল্পধারা প্রতিষ্ঠা করেন বি. চৌধুরী।

বৈঠক সূত্র মতে, নেতাকর্মীদের নানা অনুরোধের জবাবে বি. চৌধুরী বলেন, বর্তমান সরকার অগণতান্ত্রিক। এর বিরুদ্ধে আমরা শীঘ্রই আন্দোলনে নামব। এর আগে আমাদের দলকে সংগঠিত করতে হবে। আমার বয়স হয়ে গেছে। আমি আর দলীয় রাজনীতির বৃত্তে থাকতে চাই না। আপনারাই দলকে শক্তিশালী করেন। আমি আপনাদের সঙ্গেই থাকতে চাই।

এ বিষয়ে বিকল্পধারা বাংলাদেশের সহ-সভাপতি এ্যাডভোকেট শাহ আহম্মদ বাদল বলেন, ‘বর্তমান অগণতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য সভায় আলোচনা হয়েছে। সভায় সরকারের ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামার আগে দলকে সংগঠিত করার বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বি. চৌধুরীকে অনুরোধ জানিয়েছি, বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে জোটবদ্ধ আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। তিনিও আমাদের সঙ্গে একমত হয়েছেন। বি. চৌধুরী অসুস্থ। তার শারীরিক অবস্থার ওপর সবকিছু নির্ভর করছে। তবে আমরা বি. চৌধুরীকে সক্রিয় থাকতে অনুরোধ করেছি।’

সভায় বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) মান্নান বলেন, ‘কোনো জোটে নয়, আগে আমাদের দলকে শক্তিশালী করা দরকার। দল শক্তিশালী হলে আমরা জনগণের দাবি নিয়ে রাজপথে নামতে পারব।’

বিকল্পধারার সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ও স্বেচ্ছাসেবক ধারার সভাপতি বি. এম নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘সমসাময়িক রাজনীতি ও জোট গঠনের বিষয়েও সভায় আলোচনা হয়েছে। আমরা জাতীয়তাবাদে বিশ্বাস করি। আমরা জিয়ার দর্শনে বিশ্বাসী। দলে জিয়াউর রহমানের দর্শন আরও সুদৃঢ় করতে আলোচনা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বি. চৌধুরী সাহেবকে আমরা রাজনীতি ছেড়ে নয়, জাতীয়তাবাদী জোটকে আরও সক্রিয় করতে উদ্যোগ নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছি।’

বিকল্পধারার দফতর সম্পাদক স্থপতি মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘সাংগঠনিকভাবে দলকে শক্তিশালী এবং আসন্ন রমজানে ইফতার পার্টি নিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।’

এদিকে, দীর্ঘদিন পর অনুষ্ঠিত বর্ধিত সভায় উপস্থিত ছিলেন না বিকল্পধারার যুগ্ম-মহাসচিব ও মুখপাত্র বি. চৌধুরীর ছেলে মাহী. বি চৌধুরী, বিকল্পধারার সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক ড. নুরুল আমিন বেপারি ও যুগ্ম-মহাসচিব আব্দুর রউফ মান্নান।

আতিক / প্রবাস

১৯ thoughts on “বি. চৌধুরী বিএনপিতেই যাক বিকল্পধারার নেতারা তাই চান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *