ঢাকা: আগামী ১৬ জুন জামায়াত নেতা আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদের আপিলের রায় ঘোষণা করা হবে। তবে আপিল বিভাগের রায়ে মুজাহিদ খালাস পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।
বুধবার আদালত থেকে বের হয়ে মুজাহিদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, আপিল বিভাগে আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক শেষ হয়েছে। আগামী ১৬ জুন আপিল বিভাগ মুজাহিদের আপিল ঘোষণা করবেন মর্মে দিন ধার্য করেছেন। তিনি বলেন, আমরা সাধ্যমত আপিলে বিভাগে যুক্তিতর্ক তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। লিখিত আর্গুমেন্টও জমা দিয়েছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘ট্রাইব্যুনাল যেসকল অভিযোগের ভিত্তিতে মুজাহিদকে সাজা দিয়েছেন সেসকল অভিযোগের যুক্তি খণ্ডন করে আদালতে আর্গুমেন্ট উপস্থাপন করেছি। আশা করছি, আপিল বিভাগ যুক্তিতর্ক ও উপস্থাপনা বিবেচনায় নিয়ে মুজাহিদকে এ মামলা থেকে খালাস দেবেন।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অ্যাডভোকেট শিশির বলেন, ‘মুজাহিদ ছাত্রসংঘের সভাপতি ছিলেন এ কথা সত্য। তবে আলবদর, আল শাসম, আল মুজাহিদ এবং রাজাকার কোনো বাহিনীতে তদন্ত কর্মকর্তারা তার নাম পায়নি।’
এর আগে আপলি বিভাগে মুজাহিদের পক্ষে বিপক্ষে যুক্তিতর্ক ও শুনানি শেষ হয়। আসামিপক্ষ মুজাহিদের পক্ষে আদালতে দুই দিন যুক্তি উপস্থাপন করেন এবং একটি লিখিত আর্গুমেন্ট জমা দেন। রাষ্ট্রপক্ষও দুইদিন মুজাহিদের বিপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন এবং ২৫ পৃষ্ঠার একটি লিখিত আর্গুমেমন্ট জমা দেন। আজ উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে আগামী ১৬ জুন মুজাহিদের রায় ঘোষণা করবেন মর্মে দিন ঠিক করেন আপিল বিভাগ।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ১৭ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মুজাহিদকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দেন। তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাতটির মধ্যে পাঁচটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
অভিযোগগুলোর মধ্যে এক, ছয় ও সাত নম্বর অভিযোগে মুজাহিদকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল-২। তিন নম্বর অভিযোগে মুজাহিদকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড এবং পাঁচ নম্বর অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় ও চতুর্থ অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি রাষ্ট্রপক্ষ। এই দুটি অভিযোগ থেকে মুজাহিদকে খালাস দেয়া হয়েছে।
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগে করা একটি মামলায় বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের সমাজকল্যাণমন্ত্রী মুজাহিদকে ২০১০ সালের ২৯ জুন গ্রেপ্তার করা হয়। ওই বছরের ২ আগস্ট তাঁকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ২০১১ সালের ১১ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ তাঁর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে।
One thought on “আইনজীবীদের আশা মুজাহিদ খালাস পাবেন”