মিসরীয় নিরাপত্তাবাহিনীর হাতে যৌন নির্যাতনের ঘটনা বাড়ছেই। প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে তা ক্রমেই সহিংস হয়ে উঠেছে। প্রায় প্রতিদিনই বন্দীদের ওপর চালানো হয় এ নির্যাতন। গত মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করেছে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব হিউম্যান রাইটস (এফআইডিএইচ)। সংস্থাটি বিশ্বব্যাপী ১৭৮টি মানবাধিকার সংস্থার প্রতিনিধিত্ব করছে।
বন্দীদের ওপর নির্যাতনকে শৃঙ্খলা রক্ষার অংশ হিসেবে মনে করে পুলিশ
সংস্থাটি বলছে, ’আন্দোলন থেকে পরিত্রাণ পেতে’ নর, নারী ও শিশুদের ওপর এ যৌন নির্যাতন চালানো হয়। ২০১৩ সালে সামরিক ক্যু’র পরে থেকে যৌন সহিংসতা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।
নির্যাতনের মধ্যে রয়েছে ধর্ষণ, যৌন নির্যাতন, বস্তুর দ্বারা ধর্ষণ, যৌনাঙ্গে ইলেকট্রিক শক, যৌনতার দ্বারা মানহানি ও ব্ল্যাকমেল করা ইত্যাদি। আটক কিংবা গ্রেফতারের সময় এসব নির্যাতন বেশি ঘটেছে।
সংস্থাটি জানিয়েছে, ভিকটিম, তাদের আইনজীবী ও মিসরীয় মানবাধিকার সংস্থার সদস্যদের সাক্ষাৎকার নিয়ে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। সাক্ষাৎকারে পুলিশ, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা এবং সেনাদের যৌন সহিংসতার বিষয়টি উঠে এসেছে। তবে নিরাপত্তার কারণে ভিকটিমদের কারো নাম প্রকাশ করা হয়নি।
মিসরীয় হিউম্যান রাইটস এনজিওর এক কর্মী বলেন, ‘আলেকজান্দ্রিয়া ক্রিমিনাল ইনটেলিজেন্স প্রধানের নেতৃত্বে এক অভিযানে আমাদের ওপর হামলা করা হয়। আমাদেরকে মাথার পেছনে হাত রেখে নিল ডাউন দেয়ানো হয়।’
‘এরপর তারা তরুণীদেরকে একপাশে নিয়ে যায় এবং স্পর্শকাতর অঙ্গগুলোতে হাত দিয়ে চেক করে। এ সময় আমাদেরকে যৌন হেনস্তা ও অপদস্থ করে। কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সেনাদের একজনের হাত আমার পাজামা থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলে তারা আমাকে অস্ত্র দিয়ে পেটাতে থাকে। এক পর্যায়ে আমি প্রতিরোধের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলি।’
কায়রোর আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী বলেন, ‘দুই সেনা আমাকে যৌন নির্যাতন শুরু করলে তৃতীয় একজন তাদেরকে থামতে বলে। তখন তারা ওই সেনাকে চুপ থাকতে বলে। এরপর একজন আমাকে ভ্যানের মধ্যে বলে, কাছে আসো। এখন তোমাকে দেখাতে যাচ্ছি যে, আমি একজন পুরুষ। তার কথায় অন্যরা হাসলে। এরপর সে আমাকে চূড়ান্তভাবে ধর্ষণ করল।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘কুমারিত্ব পরীক্ষা’ এখন নারী বন্দীদের ওপর সাধারণ নির্যাতনে পরিণত হয়েছে। অন্য দুই ছেলে শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, আন্দোলনের কারণে আটকের পর তাদের পায়ুপথে আঙুল ঢুকিয়ে দেয় এক সেনা সদস্য। তখন অন্যদের পুরুষাাঙ্গে ইলেকট্রিক শক দেয়া হচ্ছিল।
কার্নেগি ফাউন্ডেশন ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের মধ্যপ্রাচ্য প্রোগ্রামের সিনিয়র সহযোগী মাইকেল ডুনে বলেন, মিসরে যৌন নির্যাতনের বিষয়টি অনেক আগ থেকেই কম-বেশি ছিল। তবে রিপোর্ট অনুযায়ী ২০১১ সালে গণ আন্দোলনের শুরুর পর থেকে তা আসলেই অনেক বেড়েছে।
আতিক/প্রবাস
মোহাম্মদ হাছান liked this on Facebook.
Mizanur Rahaman liked this on Facebook.
Morshed Roksana Alam liked this on Facebook.
Mahbub Samol liked this on Facebook.
M F Karim Khan liked this on Facebook.
Mukter Hossan liked this on Facebook.