বনানীতে দোকান চুরিতে আ.লীগ নেতা জড়িত

ঢাকা : রাজধানীর বনানীতে একটি মোবাইল ফোনের দোকানে চুরির ঘটনায় স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার সংশ্লীষ্টতা পেয়েছে পুলিশ। দোকানের সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজে ওই নেতার ছবি দেখা গেছে। ভিডিও ফুটেজটি পুলিশের কাছে রয়েছে। আওয়ামী লীগের ওই নেতাসহ এই ঘটনায় মোট ছয়জনকে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। আওয়ামী লীগ নেতার নাম আজিজুল। অথচ ঘটনার পর তিনি দোকান মালিককে গিয়ে সমবেদনাও জানিয়েছিলেন।

ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরায় ধারণ করা দৃশ্য দেখে পুলিশ জানিয়েছে আজিজুল হক দোকান মালিকের পূর্ব পরিচিত ছিল। মূলত তারই পরিকল্পনায় এ চুরির ঘটনা ঘটে। বর্তমানে তাকে এক দিনের পুলিশি রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।

৮ মে রাতে বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ এলাকায় আরিফ প্লাজার নিচতলায় ওই মুঠোফোনের দোকানে চুরি হয়। এ ঘটনায় দোকান মালিক বারেকুল ইসলাম অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে বনানী থানায় একটি মামলা করেন।

চোরেরা দোকান থেকে নগদ আট লাখ টাকা, প্রায় ৩০ লাখ টাকা মূল্যের ১৮১টি মুঠোফোন সেট ও বিভিন্ন সামগ্রী নিয়ে যায় বলে মামলার বিবরণিতে উল্লেখ করা হয়।

এরপর পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে ওই রাতে আরিফ প্লাজার নিরাপত্তাকর্মী আবদুর রহিম ও ফারুক নামে দোকানের সাবেক এক কর্মচারীকে আটক করে।

গত বৃহস্পতিবার রাতে বনানী সুপার মার্কেট এলাকা থেকে আজিজুলকে গ্রেপ্তারের পর শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে তাকে এক দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।

ঘটনার পর পুলিশ দোকানের পাশের ভবনের বাইরে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, শুক্রবার রাতে এদিক-ওদিক তাকিয়ে একজন যুবক ওই দোকানের সামনে যায়। তারপর সেখানে আরো দুই যুবক আসে। তাদের একজন কাগজের প্যাকেট থেকে কিছু একটা বের করছিল। সাত-আট মিনিট পর একটি স্কুল ব্যাগ কাঁধে নিয়ে হেঁটে চলে যায় প্রথমে আসা যুবক। ভারী কোনো বস্তু দিয়ে ব্যাগটি ভর্তি ছিল। সেসময় তাকে অনুসরণ করে চার যুবক। তাদের একজনের হাতে ভারী ছোট্ট একটি ব্যাগ ছিল। একজনের ছিল খালি পা।

বনানী থানা পুলিশ জানায়, চোরের দল বিকল্প চাবি দিয়ে ওই দোকানের তালা খুলেছিল। ফুটেজে যাকে খালি পায়ে দেখা গেছে, তার স্যান্ডেলও দোকান থেকে জব্দ করা হয়েছে। ভিডিও ফুটেজে যে যুবককে প্রথম দেখা গেছে এবং স্কুল ব্যাগ নিয়ে হেঁটে চলে গেছে, সে আজিজুল হক বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

দোকান মালিক বারেকুল জানান, ‘আজিজুল প্রায় সময় আমার দোকানে আসতেন। আড্ডা দিতেন, চা খেতেন। রাজনীতি করতেন বলে সমীহও করতাম। ঘটনার পর দোকানে এসে আমাকে সমবেদনাও জানিয়ে বলেছেন, “আপনার অনেক ক্ষতি হয়ে গেল, দুঃখজনক।” কিন্তু ভিডিও ফুটেজ দেখার পর আমি তো রীতিমতো অবাক।’

পুলিশ জানায়, নিরাপত্তাকর্মী রহিম পুলিশের সামনে চুরির ঘটনায় আজিজুলকে শনাক্ত করেন। তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, ঘটনার দিন রাতে আজিজুল তার কাছে ওই দোকানের মালিক আছেন কি না জানতে চান।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বনানী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে শতভাগ নিশ্চিত হয়ে আজিজুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভিডিও ফুটেজে দেখা শারীরিক গঠন, চুল, চেহারা ও স্যান্ডেলের সঙ্গে তার সবকিছুই মিলে গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী।

এসআই আরও বলেন, আজিজুল গাড়ি চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধ চক্রের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত বলে কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ঘটনার দিন রাতে দোকানের সামনে যাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তবে তিনি দাবি করেছেন, তিনি বিলবোর্ড ঠিক করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু ঘটনাস্থলে কোনো বিলবোর্ড ঠিক করার আলামত পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন এসআই জাহাঙ্গীর।

তিনি বলেন, রবিবার আদালতে হাজির করার পর তাকে রিমান্ডে নেয়ার জন্য আবারো আবেদন করা হবে। আবদুর রহিম ও ফারুক বর্তমানে জেলহাজতে আছেন। প্রয়োজনে তাদেরও আবার রিমান্ডে আনা হবে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৯ ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগের সভাপতি মফিজুর রহমান বলেন, ‘আজিজুল ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি ছিলেন। সম্প্রতি বনানী বাজার ইউনিটের কমিটিতে তাকে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হলেও ওই কমিটির এখনো

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *