প্রসঙ্গঃ সালাউদ্দিন ভাইর দেশে ফেরত আসা।
আসলে জাতির নানার পিছনের মানুষটিকে কখনোই এক্সপোস করিনি নিরাপত্তার কারনে। অল্প একটু বলি। পেশাগত কারনে আমাকে একসময় প্রায় ভারত যেতে হত। একসময় নিয়ম ছিলো একবার ভারত ভ্রমনের ৬০ দিনের ভিতর দ্বিতীয়বার ভ্রমন করা যেত না। আমি নিরভিগ্নে ভারত ভ্রমন করতাম ভিসা ছাড়াই।
এই পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ভারতের মেঘালয়, আসাম, ত্রিপুরা, পশ্চিম বঙ্গ সহ অনেক রাজ্যের শীর্ষ রাজনৈতিক ব্যাক্তি সহ প্রশাসনিক শীর্ষ কর্তাদের সাথে আমার ব্যাক্তিগত সম্পর্ক তৈরী হয়। আসামের সিএম তরুন গগৈর ও মেঘালয়ের সাবেক সিএম ডিডি লাপাং এর বাসায় আমি সিকুরিটি চেক ছাড়াই প্রবেশ করতাম। আসাম ও মেঘালয়ের অনেক সাংবাদিকের সাথে আমার ব্যাক্তিগত সম্পর্ক আছে। অনেক পত্রিকায় আমার সাক্ষাতকার ছাপা হয়েছে।
আজ সালাউদ্দিন ভাইর খবর দেখার সাথে সাথে মেঘালয়ের সাবেক স্বররাস্ট্র মন্ত্রিকে ফোন করি। উনার সাথে আমার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। অনেক কথার পর সালাউদ্দিন ভাইর প্রসঙ্গ টানি। সাথে সাথে তিনি একটু খোঁচা মেরে বলল যে, আমার প্রথমেই সন্দেহ হয়েছিলো তুমি এতদিন পরে আমাকে ফোন করলা কেন। আমাকে সংক্ষেপে যা বলল তাতে বুঝলাম যে সালাউদ্দিন ভাইর ব্যাপারটা তারা কয়েকদিন আগে থেকেই অবহিত। পরে আমাকে বলল যে তোমার সাথে তো লাপাং এর ভালো সম্পর্ক আছে। উনার কাছে তুমি সলিড নিউজ পাবে।
সময় দেখে মেঘালয়ের সাবেক সিএম ডিডি লাপাংকে ফোন দিলাম। দুবার ফোন করলাম কিন্তু ধরলো না। তৃতীয়বার রিসিভ করলো। অস্ট্রেলিয়ার নাম্বার থেকে কল করাতে বিপত্তি হল। যাহোক, কুশলাদি বিনিময়ের পর আমার দেওয়া শুটকি প্রসঙ্গে সৃতি রোমান্থন করলো কিছুক্ষন। আমি যখনই আসাম বা শিলং যেতাম, উনার জন্য ২০/২৫ হাজার টাকার শুটকি নিয়ে যেতাম যা কক্সবাজার থেকে সংগ্রহ করতাম।
আলাপের একপর্যায়ে উনাকে ফোন করার উদ্দেশ্য বললাম। এও বললাম যে অপজিশান পার্টির রানিতিবীদ সালাউদ্দিন ভাই আমার রিলেটিভ। উনি সাথে সাথে লাইন কেটে দিল। একটু পরেই অন্য এক নাম্বার থেকে কল করে আমার স্কাইপি আইডি নিল। বেশ কিছুক্ষন স্কাইপিতে অপেক্ষা করার পর উনার নোটিফিকেশন পাই।
উনার সাথে স্কাইপিতে অনেকক্ষণ কথা বললাম। কমিট্মেন্টের কারনে সব কথা শেয়ার করতে পারছি না। এক পর্যায়ে উনি আমাকে মেঘালয়ের বর্তমান সিএম মুকুল সাংমার সাথে কথা বলতে বললেন। কিন্তু আমি উনাকে বললাম যে, মুকুল সাংমার সাথে আমার পরিচয় ছিলো কিন্তু তেমন আন্তরিক সম্পর্ক নেই। আর এই সেন্সেটিভ ইস্যু নিয়ে উনি ফোনে কথা বলবেন না হয়তো। আমি লাপাংকে অনুরোধ করলাম সালাউদ্দিন ভাইর বর্তমান স্ট্যাটাস জেনে আমাকে জানালে উপকার হত।
ঘন্টা দুই পর উনি আবার স্কাইপিতে নক করলেন। নতুন কোন খবর পেলাম না। আগের আলাপই করলো। আমি সব কিছু শেয়ার করতে পারছি না বলে দুঃখিত। উনি শুধু এতটুকু বললেন যে, মিঃ সালাউদ্দিন যদি বড় রাজনিতিবিদ না হয়ে আম আদমি হতেন (মিডিয়া লিড নিউজ না হত) তাইলে তিনি প্রভাব খাটিয়ে আজ রাতের ভিতর বাংলাদেশে পুষ ব্যাক করে দিতে পারতেন। আর যেহেতু কেন্দ্র থেকে ব্যাপারটা হ্যান্ডেল করা হচ্ছে তাই এই ব্যাপারে রাজ্যের কেউই কিছু করতে পারবে না।
তবে কয়েকটা পয়েন্ট দিচ্ছি যা সবাই বুঝতে পারবেঃ
ক) সালাউদ্দিন ভাইর ব্যাপারটা রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের মানে দিল্লি ও ঢাকা ব্যাপারটা ডিল করছে।
খ) দুই দেশের শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা অপারেশন কোরডিনেট করছে।
গ) বর্তমানে সালাউদ্দিন ভাই একজন অবৈধ অনুপ্রবেশকারী। সেই মোতাবেক উনাকে মেঘালয়ের আদালতে তুলে জেলে পাঠিয়ে দিতে পারে।
ঘ) মেডিকেশনের মাধ্যমে উনার সৃতি নষ্ট করে দিতে পারে।
বাংলাদেশে সালাউদ্দিন ভাইর ফেরত আসার জন্য যে অপশানগুলো এই মুহূর্তে আছে তা হলঃ
১। দিল্লিতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাই কমিশন বা কলকাতা ডেপুটি হাই কমিশন বা আগরতলা বাংলাদেশ ক্যন্সুলেট থেকে আবেদন করে তাদের দ্বাইত্তে নিয়ে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিতে পারে। সালাউদ্দিন ভাই যেহেতু পাসপোর্ট দিয়ে প্রবেশ করেননি তাই উনার নামে পাসপোর্ট ইস্যু করা যাবে না।
২। বন্দি বিনিময় চুক্তির আওতায় বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে পারে যদি বাংলাদেশ সরকার ইচ্ছা পোষণ করে। এটা কিছু সময় সাপেক্ষ ব্যাপার।
৩। মেঘালয় সরকার উনাকে বাংলাদেশে পুসব্যাক করতে পারে। এ ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ সরকারের ইতিবাচক সাড়া থাকতে হবে। (সাভারের রানাকে কিন্তু পশ্চিম বঙ্গ থেকে ধরে পুসব্যাক করে র্যাবের হাতে তুলে দিয়েছিলো, যদিও মিডিয়ায় ভিন্নভাবে আসছে)
৪। অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হিসাবে মেঘালয় আদালতের সাজা শেষ হওয়ার পর তমাবিল বা শ্যাওলা স্থল বন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন এর হাতে তুলে দেওয়া।
পরিশেষে একটা কথা বলবোঃ সালাউদ্দিন ভাই যদি উনার পূর্ণ স্মৃতিশক্তি নিয়ে বাংলাদেশে আসতে পারেন এবং তাঁর অভিজ্ঞতা বলার পূর্ণ স্বাধীনতা পান তাইলে তোমরা জানতে পারবে এক শ্বাসরুদ্ধকর দুঃসহ স্মৃতি কথা যা কোন সিনামার কাহিনীকেও হার মানাবে।
(আমাকে কেউ কোন প্রশ্ন করে উত্তর পাবে না। আর আমার ইনবক্সে কিছু জিজ্ঞাসা করে লাভ হবে না কারন আমি এখানে আসার পর থেকে ইনবক্স ওপেন করতে পারছি না।)
সংগ্রহে- ফেসবুক জাতির নানার স্ট্যাটাস থেকে
Nur Islam liked this on Facebook.
Mukter Hossan liked this on Facebook.
Md Sohid liked this on Facebook.
Sharmen Akter liked this on Facebook.
Ramzan Ali liked this on Facebook.