ঢাকা: বহুল প্রতীক্ষিত স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নে ভারতের সংসদে সংবিধান সংশোধনী বিল পাস হওয়ায় দেশটির প্রধানমন্ত্রীসহ জনগণকে অভিনন্দন জানিয়েছে বিএনপি।
বৃহস্পতিবার (৭ মে) সন্ধ্যায় নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন এ অভিনন্দন জানান।
ড. রিপন বলেন, চুক্তি বাস্তবায়নে বিলটি পাস করায় আমরা ভারতের প্রধানমন্ত্রীসহ দেশটির জনগণকে অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানাই।
তবে, চুক্তিটির সমালোচনা করে ড. রিপন বলেন, এই চুক্তির মাধ্যমে হয়তো দীর্ঘদিন ধরে অধিকার বঞ্চিত ছিটমহলের বাসিন্দারা মানবিক দুর্ভোগ থেকে রেহাই পাবেন, কিন্তু বাংলাদেশ ৫০০ একর জমি হারাবে।
তিনি বলেন, একটি রাষ্ট্রের সঙ্গে আরেকটি রাষ্ট্র চুক্তি করার আগে অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসে আলোচনা করে সেসব রাষ্ট্রের সরকার, চুক্তির বিষয়াদি দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে। কিন্তু স্থল সীমান্ত চুক্তির ব্যাপারে বাংলাদেশের সরকার কারও সঙ্গেই আলোচনা করেনি। এখন সেখানে কী রাখা হয়েছে, কী রাখা হয়নি- তা আমরা বুঝতে পারছি না, চুক্তিটি প্রকাশ হলে বোঝা যাবে বাংলাদেশ কতটুকু লাভবান হচ্ছে।
খালেদার বিরুদ্ধে চার্জশিট ন্যাক্কারজনক
যাত্রাবাড়ীতে গাড়িতে পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ হত্যা মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিলের ঘটনাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ন্যাক্কারজনক, নিন্দনীয় ও অনাকাঙ্ক্ষিত বলে ড. রিপন বলেন, প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করতেই খালেদা জিয়াসহ বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা আশা করেছিলাম ৫ জানুয়ারি সংবিধান রক্ষার নামে নির্বাচনের পর তারা মধ্যবর্তী নির্বাচন দিয়ে জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেবে। কিন্তু তারা তা করেনি, বরং বিরোধী দল তথা বিএনপিকে সভা-সমাবেশ এমনকি কথা বলা থেকে পর্যন্ত বিরত রাখছে। শেষ পর্যন্ত খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করে রাখায় বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দল আন্দোলন ডাকতে বাধ্য হয়।
বিএনপির এ নেতা বলেন, এই আন্দোলন চলাকালে রাজনৈতিক সংকট নিরসনে বিদেশি কূটনীতিকরা প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি প্রধানকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান। এজন্য আলোচনায় বসতে সহনশীল ও বিশ্বাসযোগ্য পরিবেশ তৈরিরও তাগিদ দেন তারা। সে কারণে খালেদা জিয়া আশা করেছিলেন, সরকার এবার অন্তত সংকট নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে উদ্যোগী হবে, জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে নির্বাচন দিতে উদ্যোগী হবে। কিন্তু সে প্রত্যাশাও রাখেনি সরকার। তারা এখন বিরোধী দলকে দমন করতে মামলা চাপিয়ে দিচ্ছে। বিএনপি ধ্বংসাত্মক রাজনীতি বিশ্বাস করে না। যারা যাত্রাবাড়ীর হামলায় জড়িত তাদের বিচার দাবি করছি আমরা।
প্রশাসনের বিরুদ্ধে দলীয় ক্যাডারের আচরণের অভিযোগ তুলে ড. রিপন বলেন, এসব ঘটনায় জাতিসংঘের মাধ্যমে নিরপেক্ষ তদন্ত করে জড়িতদের বিচার দাবি করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। আমরাও দোষীদের বিচার চাই।
তিনি বলেন, সরকার যদি দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকতে চায়, তবে কিছুদিন থাকতে পারবে। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদী সমস্যার সৃষ্টি হবে। তাই প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করে নয়, সবার মধ্যে বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- দলের সহ-দফতর সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন, আবদুল লতিফ জনি, শামীমুর রহমান শামীম, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক কাজী আসাদ, সহ-শিল্প বিষয়ক সম্পাদক জহিরুল হক শাহজাদা মিয়া প্রমুখ।